পামর! ধরেন তোমা দেব অসুরারি,
শিল্পিবর; তেঁই আমি আইনু সত্বরে।
চল, দেব, অবিলম্বে; বিলম্ব না সহে।
মহা ব্যগ্র ইন্দ্র আজি তব দরশনে।”
শুনি পবনের বাণী, কহিতে লাগিলা
দেব-শিল্পী—“হায় দেব, এ কি পরমাদ!
দিতিজকুল উজ্জ্বলি, কোন্ মহারথী
বিমুখিলা দেবরাজে সম্মুখ-সমরে
বলে? কহ, কার অস্ত্রে রোধ গতি তব,
সদাগতি? কে ব্যথিল তীক্ষ্ণ প্রহরণে
যমে? নিরস্তিল কেবা জলেশ পাশীরে?
অলকানাথের গদা—শৈল-চূর্ণ-কারী?
কে বিঁধিল, কহ, হায়, খরতর শরে
ময়ূর-বাহনে? এ কি অদ্ভুত কাহিনী!
কোথায় হইল রণ? কিসের কারণে?
মরে যবে সমরে তারক মন্দমতি,
তদবধি দৈত্যদল নিস্তেজ-পাবক,—
বিষহীন ফণী; এবে প্রবল কেমনে?
বিশেষ করিয়া কহ, শুনি, শূরমণি।
উত্তরমেরুতে সদা বসতি আমার
বিশ্বোপান্তে। ওই দেখ তিমির-সাগর
অকূল, পর্ব্বতাকার যাহার লহরী
উথলিছে নিরবধি মহা কোলাহলে।
কে জানে জল কি স্থল? বুঝি ছুই হবে।
লিখিলা এ মেরু ধাতা জগতের সীমা
সৃষ্টিকালে; বসে তমঃ, দেখ ওই পাশে।
নাহি যান প্রভাদেবী তাহার সদনে,
পাপীর সদনে যথা মঙ্গল-দায়িনী
লক্ষ্মী। এত দূরে আমি কিছু নাহি জানি;
বিশেষ করিয়া কহ সকল বারতা।”
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৮৪
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
৪৭৮—৫০৭