প্রতিবিম্বে নীলাম্বর তারাময় শোভা
নিশাকালে, এই রমা প্রতিমা প্রথমে
উদয়ে ধাতার মনে,—তবে পাই আমি।”
এইরূপ কথোপকথনে দেবদ্বয়
প্রবেশিলা ব্রহ্মপুরী-মন্দগতি এবে।
কত দূরে হেরি দেব জীমূতবাহন
বজ্রপাণি, সহ কার্ত্তিকেয় মহারথী,
পাশী, তপনতনয়, মুরজা-বল্লভ
যক্ষরাজ, শীঘ্রগামী দেব-শিল্পী দেব
নিকটিয়া, করপুটে প্রণাম করিলা
যথা বিধি। দেখি বিশ্বকর্ম্মায় বাসব
মহোদয় আশীষিয়া কহিতে লাগিলা,—
“স্বাগত, হে দেব-শিল্পি! মরুভূমে যথা
তৃষাকুল জন সুখী সলিল পাইলে,
তব দরশনে আজি আনন্দ আমার
অসীম! স্বাগত, দেখ, শিল্পি-চূড়ামণি!
দৈববলে বলী দুই দানব, দুর্জ্জয়
সমরে, অমরপুরী গ্রাসিয়াছে আসি
হায়, গ্রাসে রাহু যথা সুধাংশু-মণ্ডলী।
ধাতার আদেশ এই শুন মহামতি।
‘আনি বিশ্বকর্ম্মায়, হে দেবগণ, গড়
বামায়, অঙ্গনাকুলে অতুলা জগতে।
ত্রিলোকে আছয়ে যত স্থাবর, জঙ্গম,
ভূত, সবা হইতে লইয়া তিল তিল,
সৃজ এক প্রমদারে—ভবপ্রমোদিনী।
তাহা হতে হবে নষ্ট দুষ্ট অমরারি’।”
শুনি দেবেন্দ্রের বাণী শিল্পীন্দ্র অমনি
নমিয়া দিক্পালদলে বসিলেন ধ্যানে;
নীরবে বেড়িলা দেবে যত দেবপতি।
আরম্ভিলা মহাতপঃ, মহামন্ত্রবলে
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৮৬
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
৫৩৮—৫৬৭