আকর্ষিলা স্থাবর, জঙ্গম, ভূত যত
ব্রহ্মপুরে শিল্পিবর! যাহারে স্মরিলা
পাইলা তখনি তারে। পদ্মদ্বয় লয়ে
গড়িলেন বিশ্বকর্ম্মা রাঙ্গা পা দুখানি।
বিদ্যুতের রেখা দেব লিখিলা তাহাতে
যেন লাক্ষারস-রাগ। বনস্থল-বধূ
রম্ভা উরুদেশে আসি করিল। বসতি;
সুমধ্যম মৃগরাজ দিল। নিজ মাঝা
খগোল নিতম্ব-বিম্ব; শোভিল তাহাতে
মেখলা, গগনে, মরি, ছায়াপথ যথা!
গড়িলেন বাহু-যুগ লইয়া মৃণালে।
দাড়িম্বে কদম্বে হৈল বিষম বিবাদ;
উভয়ে চাহিল আসি বাস করিবারে,
উরস-আনন্দ-বনে; সে বিবাদ দেখি
দেব-শিল্পী গড়িলেন মেরু-শৃঙ্গাকারে
কুচযুগ। তপোবলে শশাঙ্ক সুমতি
হইলা বদন দেব অকলঙ্ক ভাবে;
ধরিল কবরীরূপ কাদম্বিনী ধনী,
ইন্দ্রচাপে বানাইয়া মনোহর সিঁথি।
জ্বলে যে তারা-রতন ঊষার ললাটে,
তেজঃপুঞ্জ, দুইখান করিয়া তাহারে
গড়াইলা চক্ষুদ্বয়, যদিও হরিণী
রাখিলেক দেবপদে আনি নিজ আঁখি।
গড়িলা অধর দেব বিম্বফল দিয়া,
মাখিয়া অমৃতরসে; গজ-মুক্তাবলী
শোভিল রে দস্তরূপে বিশ্ব বিমোহিয়া!
আপনি রতি-রঞ্জন নিজ ধনু ধরি
ভুরুছলে বসাইলা নয়ন উপরে;
তা দেখিয়া বিশ্বকর্ম্মা হাসি কাড়ি নিলা
তুণ তাঁর; বাছি বাছি সে তূণ হইতে
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৮৭
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬৮—৫৯৭
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য : তৃতীয় সর্গ
৬৫