খরতর ফুল-পর, নয়নে অর্পিলা
দেব-শিল্পী। বসুন্ধরা নানা রত্ন-সাজে
সাজাইলা বরবপু, পুষ্পলাবী যথা
সাজায় রাজেন্দ্রবালা কুসুমভূষণে।
চম্পক, পঙ্কজপর্ণ, সুবর্ণ চাহিল
দিতে বর্ণ বরাঙ্গনে; এ সবারে ত্যজি,—
হরিতালে শিল্পিবর রাগিলা সুতনু!
কলরবে মধুদূত কোকিল সাধিল
দিতে নিজ মধু-রব; কিন্তু বীণাপাণি,
আনি সঙ্গে রঙ্গে রাগ-রাগিণীর কুল,
রসনায় আসন পাতিলা বাগীশ্বরী!
অমৃত সঞ্চারি তবে দেব-শিল্পি-পতি
জীবাইলা কামিনীরে;—সুমোহিনী-বেশে
দাড়াইলা প্রভা যেন, আহা, মূর্ত্তিমতী!
হেরি অপরূপ কান্তি আনন্দ-সলিলে
ভাসিলেন শচীকান্ত; পবন অমনি,
প্রফুল্ল কমলে যেন পাইয়া, স্বনিলা
সুস্বনে! মোহিত কামে মুরজামোহন,
মনে মনে ধন-প্রাণ সঁপিলা বামারে!
শান্ত জলনাথ যেন শান্তি-সমাগমে!
মহাসুখী শিখিধ্বজ, শিখিবর যথা
হেরি তোরে, কাদম্বিনি, অনম্বরতলে!
তিমির-বিলাসী যম হাসিয়া উঠিলা,
কৌমুদিনী-প্রমদায় হেরি মেঘ যথা
শরদে! সাবাসি, ওহে দেব-শিল্পি গুণি।
ধাতাবরে, দেখবর, সাবাসি তোমারে!
হেন কালে,—বিধির অদ্ভুত লীলাখেলা
কে পারে বুঝিতে গো এ ব্রহ্মাণ্ড-মণ্ডলে!—
হেন কালে পুনর্ব্বার হৈল দৈববাণী;
“পাঠাও, হে দেবপতি, এ রমা বামারে,
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৮৮
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
৫৯৮—৬২৭