অভয়ে; কি অপকার তোমার সম্ভবে
মোর হাতে? ভূজবলে নাশিয়া দিতিজে
আজি, উপকার, গিরি, তোমায় করিব,
আপনি হইব মুক্ত বিপদ্ হইতে;—
তেঁই হে আইনু মোরা তোমার সদনে।”
হেন মতে বিদাইয়া বিন্ধ্য মহাচলে,
দেব-সৈন্য-পানে চাহি কহিলা গম্ভীরে
বাসব; “হে সুরদল, ত্রিদিব-নিবাসি,
অমর! হে দিতিসুত-গর্ব্ব-খর্ব্বকারি।
বিধির নির্ব্বন্ধে, হায়, নিরানন্দ আজি
তোমা সবে! রণ-স্থলে বিমুখ যে রথী,
কত যে ব্যথিত সে তা কে পারে বর্ণিতে?
কিন্তু দুঃখ দূর এবে কর, বীরগণ!
পুনরায় জয় আসি আশু বিরাজিবে
এ দেব-কেতনোপরে। ঘোরতর রণে
অবশ্য হইবে ক্ষয় দৈত্যচয় আজি।
দিয়াছি মদনে আমি, বিধির প্রসাদে,
যে শর,—কে সম্বরিবে সে অব্যর্থ শরে?
লয়ে তিলোত্তমায়—অতুলা ধনী রূপে—
ঋতুপতি সহ রতিপতি সর্ব্ব-জয়ী
গেছে চলি যথায় নিবাসে দেব-অরি
দানব! থাকহ সবে সুসজ্জ হইয়া।
সুন্দ উপসুন্দ যবে পড়িবে সমরে,
অমনি পশিব মোবা সবে দৈত্যদেশে
বায়ুগতি, পশে যথা মদকল করী
নলবনে, নলদলে দলি পদতলে।”
শুনি সুরেন্দ্রের বাণী, সুরসৈন্য যত
হুহুঙ্কারি নিষ্কোষিলা অগ্নিময় অসি
অযুত, আগ্নেয় তেজে পূরি বনরাজী!
উচ্চারিলা ধনু ধনুর্দ্ধর-দল বলী
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৯২
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
৫৮—৮৭