রোষে; লোফে শূল শূলী,—হায়, ব্যগ্র সবে
মারিতে মরিতে রণে—যা থাকে কপালে!
ঘোর রবে গরজিলা গজ; হয়ব্যূহ
মিশাইলা হেষারব সে রবের সহ!
শুনি সে ভীষণ স্বন দনুজ দুর্ম্মতি
হীনবীর্য হয়ে ভয়ে প্রমাদ গণিল
অমরারি, যথা শুনি খগেন্দ্রের ধ্বনি,
ম্রিয়মাণ নাগকুল অতল পাতালে!
হেন কালে আচম্বিতে আসি উত্তরিলা
কাম্যবনে নারদ, দীদিবি রবি যেন
দ্বিতীয়। হরষে বন্দি দেব-ঋষিবরে,
কহিলেন হাসি ইন্দ্র—দেবকুলপতি—
“কি কারণে এ নিবিড় কাননে নারদ
তপোধন, আগমন তোমার গো আজি?
দেখ চারি দিকে, দেব, নিরীক্ষণ করি
ক্ষণকাল; খরতর-করবাল-আভা,
হবির্বহ নহে যাহে উজ্জ্বল এ স্থলী;—
নহে যজ্ঞধূম ও,—ফলক সারি সারি
সুবর্ণমণ্ডিত,—অগ্নিশিখাময় যেন
ধূমপুঞ্জ, কিম্বা মেঘ,—তড়িত-জড়িত!”
আশীষি দেবেশে, হাসি দেব-ঋষিবর
নারদ, উত্তরছলে কহিলা কৌতুকে;—
“তোমা সম, শচীপতি, কে আছে গো আজি
তাপস? যে কাল-অগ্নি জালি চারি দিকে
বসিয়াছ তপে, দেব, দেখি কাঁপি আমি
চিরতপোবনবাসী! অবশ্য পাইবে
মনোনীত বর তুমি; রিপুদ্বয় তব
ক্ষয় আজি, সহস্রাক্ষ, কহিমু তোমারে।”
সুধিলা সুরসেনানী সুমধুর স্বরে
অগ্রসরি;— “কপা করি কহ, মুনিবর,
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৯৩
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮—১১৭
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য : চতুর্থ সর্গ
৭১