বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
১১৮—১৪৭

ভ্রাতৃভেদ ভিন্ন অন্য পথ কি কারণে
রুদ্ধ শমনের পক্ষে নাশিতে দানব-
দল-ইন্দ্র সুন্দ উপসুন্দ মন্দমতি!
যে দম্ভোলি তুলি করে, নাশিলা সমরে
বৃত্রাসুরে সুরপতি; যে শরে তারকে
সংহারিনু রণে আমি;—কিসের কারণে
নিরস্ত সে সব অস্ত্র এ দোঁহার কাছে?
কার বরবলে, প্রভু, বলী দিতি-সুত?”
উত্তর করিলা তবে দেবর্ষি নারদ;—
“ভকত-বৎসল যিনি, তাঁর বলে বলী
দৈত্যদ্বয়। শুন দেব, অপূর্ব্ব কাহিনী।
হিরণ্যকশিপু দৈত্য, যাহারে নাশিলা
চক্রপাণি নরসিংহ-রূপে, তার কুলে
জন্মিল নিকুম্ভ নামে সুরপুররিপু,
কিন্তু, বজ্রি, তব বজ্র-ভয়ে সদা ভীত
যথা গরুত্মান্ শৈল। তার পুত্ত্র দোঁহে
সুন্দ উপসুন্দ—এবে ভুবন-বিজয়ী,
এই বিন্ধ্যাচলে আসি ভাই দুই জন
করিল কঠোর তপঃ ধাতার উদ্দেশে
বহুকাল। তপে তুষ্ট সদা পিতামহ;
“বর মাগ” বলি আসি দরশন দিলা।
যথা সরঃসুপ্তপদ্ম রবি দরশনে
প্রফুল্লিত, বিরিঞ্চিরে হেরি দৈত্যদ্বয়
করযোড়ে মৃতস্বরে কহিতে লাগিল;—
“হে ধাতঃ, হে বরদ, অমর কর, দেব,
আমা দোঁহে! তব বর-সুধাপান করি,
মৃত্যুঞ্জয় হব, প্রভু, এই ভিক্ষা মাগি।”
হাসি কহিলেন তবে দেব সনাতন
অজ,—“জন্মে মৃত্যু, দৈত্য! দিবস রজনী—
এক যায় আর আসে, সৃষ্টির বিধান।