বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
১৭৮—২০৭

যবে অস্তাচল-চূড়া উপরে দাঁড়ায়ে
কমলিনী পানে ফিরে চাহেন ভাস্কর
কমলিনী-সখা। যথা সে ঘনের সনে
সৌদামিনী, মীনধ্বজে তেমনি বিরাজে
অনুপমা রূপে বামা—ভুবন-মোহিনী।
যথায় অচলদেশে দেব-উপবনে
কেলি করে সুন্দ উপসুন্দ মহাবলী
অমরারি, তিন জন তথায় চলিলা।
হেরি কামকেতু দূরে, বসুধা সুন্দরী,
আইলা বসন্ত জানি, কুসুম-রতনে
সাজিলা; সুবৃক্ষশাখে সুখে পিকদল
আরম্ভিল কলস্বরে মদন-কীর্তন।
মুঞ্জরিল কুঞ্জবন, গুঞ্জরিল অলি
চারি দিকে; স্বনস্বনে মন্দ-সমীরণ,
ফুলকুল-উপহার সৌরভ লইয়া,
আসি সম্ভাষিল সুখে ঋতুবংশ-রাজে।
“হে সুন্দরি”—মৃদু হাসি মদন কহিলা—
“ভীরু, উম্মীলিয়া আঁখি, নলিনী যেমনি
নিশা অবসানে মিলে কমল-নয়ন—
চেয়ে দেখ চারি দিকে; তব আগমনে
সুখে বসন্তের সখী বসুন্ধরা সতী
নানা আভরণে সাজি হাসেন কামিনী,
নববধূ বরিবারে কুলনারী যথা।
ত্যজি রথ চল এবে—এই দৈত্যবন।
যাও চলি, সুহাসিনি, অভয় হৃদয়ে।
অন্তরীক্ষে রক্ষা হেতু ঋতুরাজ সহ
থাকিব তোমার সঙ্গে; রঙ্গে যাও চলি,
যথায় বিরাজে দৈত্যদ্বয়, মধুমতি।”
প্রবেশিলা কুঞ্জবনে কুঞ্জর-গামিনী
তিলোত্তমা, প্রবেশয়ে বাসরে যেমতি