S8 তৃণান্ধুর কাল রাত্রে গিয়েছিলুম। শিমুলতলা। সেখান থেকে আজ সকালের ট্রেনে বার হ’য়ে এখানে এসে সন্ধ্যায় পৌছানো গেল। ঠিক সন্ধ্যায় গঙ্গার পুলটিী পার হবার সময় এই শান্ত হেমন্ত সন্ধ্যার সঙ্গে কত কথা জড়ানো আছে, যেন মনে পড়ে । সেই হুগলী ঘোলাঘাট ষ্টেশন, সেই কেওট, সেই হালিসহর, সেই হুগলী-বহুদূরের বাড়ীর সে শান্ত অপরাহ্র। যেখানে পথের ধারে শ্যামাচরণ দাদার কাঠ কাটিয়েছে, শৈশবের মত সেই কাঠের গুড়োগুলো এখনও পথের ধারে যেন রয়েচে-এসব ভাবলে এক অপূৰ্ব্ব, বিচিত্র আনন্দে মন পরিপূর্ণ হয়। জীবনের সেই মধুর প্রভাত দিনগুলোর কথা মনে হয় । কাল দিদিমা গল্প করছিল কবে নাকি সেই জাহাবী স্মানে কেওটা গিয়েছিলেন বাবা সকালে মুখ ধুচ্ছিলেন আমি পেছনে দাড়িয়ে ছিলুম। বুড়ী ঠিক মনে করে রেখেচে । সেই দিনটী থেকে জীবন আরম্ভ হয় না ? ••• এসেই ওদের বাড়ী গেলুম জগদ্ধাত্রী পুজার নিমন্ত্রণে। বিভূতি, ঘণ্ট, খুব খেলা কল্পের্ক। সেখান থেকে এই ফিরুচি। ভারী ঘটনাবহুল দিনটি। ভোরে উঠে প্ৰথমে গেলুম হেঁটে ইডেন গার্ডেনে। শিশিরসিক্ত ঘাসের ধারে ধারে বেড়াতে বেড়াতে খালের জলের রক্ত-মৃণালগুলি দেখছিলুম। দুটী রাঙা ফ্রক পরা ফিরিঙ্গি-বালিকা ফুল তুলে বেড়াচ্ছিল। কেয়াঝোপে খানিকটা বসে বসে “আলোক-সারথি”র ছক কাটুলুম। পরে দুখানা বায়োস্কোপের টিকিট কিনে বাড়ী ফিরবার পথে রমাপ্রসম্নের ওখান হয়ে এলুম। বৈকালে প্ৰথম গেলুম প্রবাসী আফিসে। কেদার বাবু মোটরে ঢুকচেন, গেটের কাছে নমস্কার বিনিময় হোল । সজনীর ঘরে গিয়ে দেখি ডাঃ সুশীল দে বসে আছেন। একটু পরে নীহার বাবুও এলেন। খুব খানিক গল্প গুজবের পর তিনজনে গেলুম সজনীর বাড়ী ৷ উষাদেবী চলে গিয়েছেন। * আমার বই খানি গিয়েচেন নিয়ে । সেখানে “বাঁশি বাজে মূলে। বনে” গানটা শুনলুম না বটে, একটা জৌনপুরী টোড়ী রেকর্ডে শুনলাম। চা পানের পরে ডাঃ দে বাড়ী চলে গেলেন আমরা তিনজনে গোলুম বায়োস্কোপে। পথে বার বার চেয়ে দেখছিলুমআজ পূর্ণিমা, মাণিকতলা স্পারের পিছনে থেকে পূৰ্ণচন্দ্ৰ উঠেচ। বহুদূরের আমাদের বাড়ীটাতে নারিকেল গাছটার পিছন থেকে চাদটা ওই রকম
পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০
অবয়ব