তৃণান্ধুর 8 ܓ নীহারিকাদের জগৎ । এই সামান্য, ক্ষুদ্র গ্রহটাতে যদি অস্তিত্বের এত বৈচিত্ৰ্য, এত সরসত, এত সৌন্দৰ্য্য-তবে না জানি সে সব বিশ্বে কি অপরূপ उषांनन्प्ष्ट्षाऊ !· সব দুঃখের একটা সুস্পষ্ট অর্থ হয়। জীবনের একটা মহান, বিরাট অর্থ একটা সুস্পষ্ট রূপ মনের চোখে ফুটে ওঠে। নিৰ্জন স্থান ভিন্ন, পরিপাশ্বিকের পরিবর্তন ভিন্ন,-এ আনন্দ কি সম্ভব ? -- সন্ধ্যার পরে আমি, সাইমা, ন’দি অনেক ক্ষণ গল্পগুজব করা গেল । আজকার রাতটা কালকার মত গরম নয়, শেষ রাত্ৰে মেঘ করার দরুণ বেশ ঠাণ্ডা। সারারাত লণ্ঠন ধরে ধরে লোকেরা ও ছেলের দল আমাদের বাড়ীর পিছনের ঘন জঙ্গলের ওপারের বাগানগুলোতে আমি কুড়িয়েচে, সারা রাতটীি । কি সুন্দর বৈকালটী কাল কাটুলো যে ! কুঠার মাঠে অনেকক্ষণ বসে পরে নদীজলে সন্ধ্যার কিছু পূর্বে স্নান কৰ্ত্তে নামা গেল। এত অপূর্ব ভাব এল মনে, ঠাণ্ডা নদীজল, ছিপি-শেওলার পাতার ধারে দাড়িয়ে, ছায়াচ্ছন্ন সন্ধ্যায় আকাশ ও শ্যামল গাছগুলার দিকে চোখ রেখে শুধু এদের পিছনে যে বিরাট অবর্ণনীয় শক্তি জাগ্ৰত আছে, তার কথাই বার বার মনে আসছিল। স্বচ্ছ জলের ভেতরে মাছের দল খেলা করচে—একটা ছোট মাছ তিড়িৎ করে লাফিয়ে শেওলার দামের গায়ে পড়ল। নদী জলের আর্দ্র, সুগন্ধ উঠচেওপারে মাধবপুরের পটোলের ক্ষেতে তখনও চাষার নিড়েন দিচ্চে-বাদাম গাছের মাথায় একটা নক্ষত্র উঠেচে । সারাদিনের গুমন্টের পর শরীর কি সুিগ্ধই হোল ! -- শেষ রাত্ৰে বেজায় গুমটি গরমে আইঢাই করাচি এমন সময় হঠাৎ ভীষণ ঝড় বৃষ্টি এল। ন’দি, জেলি, বুড়ী-পিসিমা, জেলে পাড়ার ছেলেরা আমনি আমি কুড়তে ছুটলো। ঘন অন্ধকারের মধ্যে লণ্ঠন জেলে সব ছুটুল চাটুয্যে বাগানের দিকে। জেলির মা চেচিয়ে পিছু ডাকাতে জেলি আবার এল ফিরে । সকালটার সিদুরে মেঘে অপরূপ শোভা হয়েছিল। পরশু বৈকালটীতে এই রকমই সিঁদুর-মেঘ করেছিল-আমি সেটা উপভোগ কৰ্ত্তে পারিনি, গোপালনগরের হাটে গিয়েছিলাম ।
পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০
অবয়ব