পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃণান্ধুর O) কবিতা আবৃত্তি হোল, অমল হোমের স্ত্রী বললেন একটী মহিলা আপনার সঙ্গে দেখা কৰ্ত্তে চান, আপনার “অপরাজিত’ পড়ে-আমি তঁাকে ডাকি,- কালোর ঘরেই আছেন । মেয়রের নির্বাচন সম্পর্কে অনেকগুলো নতুন কথা শুনলাম অমল হোমের মুখে-যতীন সেনগুপ্ত এবার মেয়র না হোলে অনেকে দুঃখিত হবে বটে, কিন্তু --মেয়র হোলে লোকে তার চেয়েও দুঃখিত হবে। বাইরে চেয়ে দেখলাম আকাশে মেঘ করেচে-অনেকটা দূরের আকাশও দেখা যায়দূরের কথা, দেশের কথা মনে করিয়ে দেয়। এরা বেশ শিক্ষিতা মেয়ে, ধরন-ধারন এত মাজ্জিত ও মধুর যে এদের সঙ্গে গ্রামের মেয়েদের—সইম কি বুড়ী পিসিমা এদের তুলনা করে হতাশ হতে হয়। ঘরের ধারে একটা ভাঙ্গা কড়া এক জায়গায় বসানো ছিল, বেরুবার সময় পায়ে এমন লাগল • • • সেখান থেকে এলাম সুরেশ বাবুর বাড়ী । সেখানে হেম বাগচী ও সুবল বসে আছে। সুরেশ বাবুর স্ত্রী চা-এর উদ্যোগ কৰ্ত্তে আমরা নিবৃত্ত করলামকেননা এইমাত্ৰ অমল হোমের বাড়ী থেকে আমরা চা, পাপর ভাজা, বাদাম ভাজা ও রসগোল্লা খেয়ে আসচি। ফরাসী কবি বোদলেয়ার সম্বন্ধে খানিকটা কথাবাৰ্ত্তা হোল, মোহিত বাবু একটা লেখা পড়লেন-তারপর আমরা সবাই এলাম চলে। মোহিত বাবুর আবৃত্তি কি সুন্দর। কি সুন্দর সন্ধ্যাট কাটুল। আজ সকালে ধূর্জটি বাৰু এসেছিলেন। তার সঙ্গে ও সুরেশ চক্ৰবৰ্ত্তীর সঙ্গে গল্পগুজবের পর আসাম মেলে রাণাঘাট এলাম ও সেখান থেকে সাড়ে তিনটার ট্রেণে দেশে এলাম। হাজারির মোটরটা দাড়িয়েছিল, সহজেই বাজার পর্য্যন্ত আসা গেল । এসেই কাপড় চোপড় ছেড়ে গামছা নিয়ে নদীতে গা ধোবার জন্য গোলাম । ভারী সুন্দর বৈকাল, আকাশের রং এমন সুন্দর শুধু বর্ষাকালেই হয়। গাছপালার রং কি সবুজ-রৌদ্রের রংটা কেমন একটা অদ্ভুত ধরণের, কুঠার মাঠে গেলাম—সেই শিমুল গাছটার গায়ে কি সুন্দর রৌদ্রই পড়েচে-চারি পারে আকাশের রং এ বড় মুগ্ধ কল্পের্ক। আমাদের ভিটারি পাশে যে গাছটা আছে, তার গায়ে খানিকটা হলদে। রং-এর রোদ লেগে দেখতে হয়েচে অদ্ভুত ।