তৃণস্কুর b”(ሰ কলকাতা ফিরে পরদিনই নীরদবাবুর বাড়ীতে চায়ের নিমন্ত্রণ হোল সন্ধ্যায়। আমার আবার একটু দেরী হয়ে গেল। সুশীলবাবু মাঝের দিন আমার বাসায় এসেছিলেন-বঙ্গশ্রী আপিসে আমায় Phone করেছিলেনযাবার সময় পার্কসার্কাস থেকে ওঁর বাসা হয়ে গেলাম। সতীশের সঙ্গে একটা আফিমের দোকানে আজ আবার দেখা হোল। ক’দিন ধরেই উড়িষ্যা ও মানভূমের সেই স্বপ্নরাজ্য মনে পড়চে-বিশেষ করে মনে পড়চে আসানবলী ও টাটানগরের মধ্যবৰ্ত্তী সেই বনটা-যেখানে বড় বড় পাথরের চাই-এর মধ্যে শালের জঙ্গল-পত্ৰহীন দীর্ঘ গাছগুলিতে হলদে কি ফুল ফুটে আছে-কেবলই ভাবচি ওইখানে যদি একটা বাংলো বেঁধে বাস করা যায়-ওই নির্জন মাঠ বন, আরণ্যাণীর মধ্যে । অপরাষ্ট্রে ও জ্যোৎস্বাময়ী রাত্ৰিতে তাদের রূপ ভাবলেও মন অবশ হয়ে যায় । সকালে উঠে। দীনেশ সেনের বাড়ীতে এক বোঝা পরীক্ষার কাগজ পেশ করে এলুম। সারা পথে মুচুকুন্দ চাপার এক অদ্ভুত গন্ধা! বিজয় মল্লিকের বাগানে একটা গাছে কেমন থোকা থোকা কঁাচা সোনার রং-এর ফুল ধরেচে। বড় লোভ হোল-ট্রাম থেকে নেমে বাগানের ফটকের কাছে গিয়ে দারোয়ানকে বললাম-ঐ গাছতলাটায় একবার যেতে পারি ? সে বল্লে-নেহি । সংক্ষেপে বল্লে ;-আমায় সে মানুষ বোলেই মনে কল্পের্ক না । আবার বলুম-দু একটা ফুল নিয়ে আসতে পারিনে ? তলায় তো কত পড়ে আছে । সে এবার অত্যন্ত (Comtemptuous ভাবে আমার দিকে চেয়ে পুনরায় সংক্ষেপে বল্লে-নেহি । ভালো, নেহি তো নেহি-গড়ের মাঠে খিদিরপুর রোডের ধারে অনেক মুচুকুন্দ ফুলের গাছ আছে, ট্রামে আসবার সময় দেখে এসেচি, সেখান থেকে কুড়িয়ে নেবো এখন । তারপর এলাম নীরদবাবুর বাড়ী। সেখানে খানিকটা গল্পগুজব করে গেলাম শ্যামাপ্রসাদ বাবুর বাড়ী। পাশের বৈঠকখানায় রমাপ্রসাদ বাৰু আছেন দেখলাম-শ্যামাপ্রসাদ বাবুও তার লাইব্রেরী ঘরে কি কাজ কচ্ছিলেন। সেখানে খানিকটা থাকবার পরে বাসায় ফিরলাম। বৈকাল বেলা । আজ রামনবমী। কতদিনের কথা মনে পড়ে। বৈকালে বসে বসে তাই ভাবছিলাম।--বেলা পড়ে এসেচে-কত পাপিয়ার ডাকভরা
পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯১
অবয়ব