পাতা:তেইশ বছর আগে পরে.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে যোগীও নয়, সাপকও নয় ! বরং অতি অপদাৰ্থ মানুষ । সে তো শুধু চিত্রার জন্যে নিজের অসহনীয় মনোবেদনা নিয়ে কাতরায়, নিজেকে অভিশাপ দেয়, সোজাসুজি আত্মহত্যা করতে পারে না বলেই বেপরোয়া নেশা চরমে তুলে চব্বিশ ঘণ্টার অৰ্দ্ধেকের বেশী সময় ব্যথাবোধের শক্তি হারিয়ে দিন কাটিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মরে যেতে চায়-সচেতন থাকার সময়টুকু শুধু আবোল তাবোল এলোমেলো চিন্তা করে। তবু কেন এত প্ৰত্যাশা নিয়ে এত মানুষ তার কাছে আসে ? শুধু এই প্রশ্ন নয়। জগদীশ সবচেয়ে আশ্চৰ্য্য হয়ে যায় এই ভেবে যে মানুষের সমাজ ত্যাগ করে নির্জন অরণ্যে আশ্রয় নিয়েছে একা থাকার জন্য, অথচ মানুষ এসে ভিড় করে তার নির্জনতা ভঙ্গ করলেও তার খারাপ লাগে না । বিকালের দিকে সে অবশ্য ভাগিয়ে দেয়। ভক্তদের। সন্ধ্যাবেলা এখানে কারো থাকার অধিকার নেই । রাত্রে বাঘ আসে, অন্য হিংস্ৰ জন্তুরাও আসে-ওই খোলা আটচালায় কারো রাত কাটানো চলবে না । জগদীশের ভয় নেই, তাকে বাঘে খেলেও কিছু এসে যায় না । কিন্তু সে অন্য কারো প্রাণরক্ষার দায় নিতে পারবে না । এ বিষয়ে এমনি কঠোর জগদীশ, এমনি নিষ্ঠুরের মত সে বিকাল হতেই সকলকে খেদিয়ে দেয় যে ব্যাপারটা বুঝতে আর বাকী থাকে না তার ভক্তদের !