পাতা:তেইশ বছর আগে পরে.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উঠল। একবার জগদীশের সর্বাঙ্গ কেঁপে উঠল, তারপর *ধীরে ধীরে মাথা নত করে সে শাড়ীটিকে চুম্বন করল। সে কি চুম্বন ! মনে হল শাড়ীটির ভাঁজে ভাঁজে, প্ৰত্যেকটি সুতার পাকে পাকে সুধা সঞ্চিত হয়ে আছে, অধরের স্পর্শ দিয়ে অনন্তকাল জগদীশ সে সুধা পান করে যাবে। কতক্ষণ পরে হিসাব ছিল না, জগদীশ মাথা তুলল। মুখ ফিরিযে আমার দিকে চাইতেই দেখলাম তার দুচোখ জলে ভরে গেছে। তাড়াতাড়ি চোখ বুজে নিঃশব্দে পড়ে রইলাম। তার বুক ভাঙ্গা দুঃখের এমন অপূর্ব প্ৰকাশের সাক্ষী হ’য়ে যে রইলাম, সে কথা গোপনই থাক । নিজে থেকে যদি বলে, শুনব । যার যা বেদনার সম্পদ সে তার গোপন থাকাই শ্ৰেয় । পরদিন অতি ভোরে ঘুম ভেঙ্গে গেল। জীবনের এতগুলি বছর কাটিয়ে দেবার পর সেই দিন প্ৰথম অনুভব করলাম পাখীর ডাকে ঘুমভাঙ্গা জিনিষটা সত্যি সত্যি কী। কিচির মিচির প্ৰলাপ, কিন্তু কি মিষ্টি ! যেন প্ৰভাতকে বরণ করে নেবার বরণডালায় লক্ষ প্ৰাণীর প্রকাশব্যাকুল আনন্দ-প্ৰদীপের শবিদত শিখা ! ড্রাইভার এসে সেলাম জানিয়ে বল্লে, কখন ফিরবেন বাবু ? বাহুল্য প্রশ্ন। আসল কথা, ভাল রকম সেলামীর ব্যবস্থা না করলে সে আর এই জঙ্গলে পড়ে থাকতে রাজী নয়। তাই করা গেল । R