এবং ন্যূনকল্পে বিংশ হস্ত উচ্চ এক মৃন্ময় স্তূপোপরি প্রোথিত একটী পাষাণস্তম্ভ মাত্র বিদ্যমান আছে। গ্রামস্থ লোকেরা ইহাকে শিবলিঙ্গ আখ্যা প্রদান করে।
প্রকৃতপক্ষে ইহা শিবলিঙ্গ অথবা কোন প্রস্তরনির্ম্মিত কীর্ত্তি স্তম্ভ, এবং তদ্গাত্রে কোনরূপ লিপি উৎকীর্ণ আছে কিনা, এই বিষয় উক্ত মৃত্তিকা স্তূপ খনন করিলে জ্ঞাত হওয়া যাইত; কিন্তু এই সম্বন্ধে কেহ প্রয়াস পাইয়াছেন কিনা তাহ জ্ঞাত হওয়া যায় না। যদি স্তম্ভটীর গাত্রে কোনরূপ লিপি উৎকীর্ণ থাকে তাহা হইলে ইহার বিষয়—এমন কি এতৎ প্রদেশের তিমিরাচ্ছন্ন ইতিবৃত্তও উদ্ঘাটিত হওয়া অসম্ভব নহে।
যদি এই জনপদ প্রকৃতই ভূপতি মহীপালের রাজধানী হয়, তাহা হইলে ইতিহাসকার ভিন্সেণ্ট স্মিথ কর্ত্তৃক বর্ণিত অত্রস্থ মূর্ত্তিনিচয় এবং ভগ্ন নিকেতনাদি তদীয় শাসনকালে নির্ম্মিত গৃহাদিরই ভগ্নাবশেষ হইতে পারে।
চাঁদিনা
প্রাগুক্ত “বরকামতা” গ্রাম-সান্নিধ্যে “চাঁদিনা” নামক যে আর একটী পুরাতন গ্রাম অবস্থিত, তন্মধ্যেও কতিপয় ইষ্টক নির্ম্মিত ভবনাদির ধ্বংসাবশেষ দৃষ্টিগোচর হয়। অত্রস্থ এক প্রাচীন পুষ্করিণী সংস্কার কালে তন্মধ্য হইতে একটী প্রস্তর নির্ম্মিত চতুর্ভূজ নারায়ণ-মূর্ত্তি প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে। মূর্ত্তিটী ন্যূনকল্পে তিন হস্ত উচ্চ হইবে এবং কোনরূপ বিকলাঙ্গ হয় নাই। ইহা পর্য্যবেক্ষণ করিয়া নির্ম্মাতার শিল্পচাতুর্য্যের প্রশংসা করিতে হয়। যে পুষ্করিণী হইতে উক্ত মূর্ত্তি উদ্ধৃত হইয়াছে, তৎসমীপবর্ত্তী এতদঞ্চলের ভূস্বামিগণের কার্য্যালয়-সন্নিধানে সংস্থাপিত দুইটী আধুনিক শিবমন্দিরের একটীর মধ্যে উক্ত মূর্ত্তি রক্ষিত হইতেছে।
উল্লিখিত জলাশয়ের দক্ষিণপশ্চিম কোণে বৃক্ষ-লতা সঙ্কুল একটী দ্বিতল নিকেতনের ধ্বংসাবশেষ পরিলক্ষিত হয়। গৃহটী ক্ষুদ্রাকারের ইষ্টকে নির্ম্মিত। ইহা পর্য্যবেক্ষণ করিয়া অধিক প্রাচীন অনুভূত হইল না। কিন্তু নিতান্ত যে আধুনিক এরূপও মনে হয় না।
এতদ্ব্যতিরেকে উল্লিখিত জলাশয়ের পশ্চিম প্রান্তে একটী বৃহৎ তোরণ-বিশিষ্ট প্রাচীর পূর্ব্বে ছিল বলিয়া পল্লীবাসিগণ কহে। জ্ঞাত হওয়া যায় যে, উহা এতদঞ্চলের বর্তমান ভূম্যধিপদিগের কর্ম্মচারিগণ কর্ত্তৃক বিধ্বস্ত হইয়াছে।