পাতা:ত্রিসন্ধি-অজিত কুমার চক্রবর্ত্তী.djvu/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্রিসন্ধি । ・ ー > একদা কাবামন্দিরে গমন করিয়া বেলাল প্রদীপ্ত ভাস্কর-তুল্য এক দিব্যজ্যোতিবিশিষ্ট পুরুষকে সন্দর্শন করিল। তাহার দৃষ্টি বিদ্যুন্ময়ী, ললাট উন্নত ও তেজঃপুঞ্জ, বাণী অগ্নির সমান। সমবেত শ্রোতৃবৃন্দকে সম্বোধন পূর্বক তিনি কহিতেছেন, “সৰ্ব্বচরাচরে সেই এক মহান আল্লা বিরাজমান ; তিনি ভিন্ন এ জগতের আর কেহই অধীশ্বর নহে ।” মোহম্মদের জ্ঞাতি কোরেশবংশীয়গণ র্তাহার এই বাক্য শ্রবণে বিক্রপ করিয়া কেহ বা হান্ত করিতেছে, কেহ বা তাহার অঙ্গে ধূলিনিক্ষেপ পূর্বক স্থানান্তরে গমন করিতেছে। মহাপুরুষ মোহম্মদের সেই বাণী ভূত্য বেলালের চিত্তকে চঞ্চল করিল। যে মুহূৰ্ত্তে তাহার মনে হইল যে, মোহম্মদ যাহা কহিতেছেন তাহাই সত্য, সেই মুহূৰ্ত্তে সে হজরত মোহম্মদের নিকট আগমন করিয়া মুসলমান ধৰ্ম্মে দীক্ষা গ্রহণ করিল। তাহার প্রভুর কর্ণে এই বাৰ্ত্ত পেছিবামাত্র তিনি ক্রোধে অগ্নির মত প্রজ্জ্বলিত হইয়া উঠিলেন এবং বেলালকে তাহার কৰ্ম্মের সমুচিত দণ্ড বিধানের নিমিত্ত কৃতসংকল্প হইলেন। মধ্যাহ্নে মাৰ্ত্তণ্ডতাপে যখন মক্কার বালুকাময় প্রান্তর হুতাশনের স্যায় উত্তপ্ত হইয়াছে, তখন নিষ্ঠুর আমিয়া বেলালকে উলঙ্গ করিয়া এবং তাহার হস্তপদ দৃঢ়ৰূপে রজ্জ্ব দ্বারা আবদ্ধ করিয়া তপ্ত বালুকার উপরে তাহাকে শয়ান করাইল। বেলালের সর্বাঙ্গ সেই তীব্র উত্তাপের জ্বালায় দগ্ধপ্রায় হইল, তথাপি তাহার প্রভু তাহাকে সত্য ব্রত হইতে বিচ্যুত করিতে সমর্থ হইল না।