পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় অধ্যায় তাতি বলা বাহুল্য, আমীর এই কথা শুনিয়া অবিলম্বে ব্ৰাহ্মণের দ্বারে গিয়া উপস্থিত হইলেন। ব্ৰাহ্মণের সহিত সাক্ষাৎ করিয়া, বুকে সেলাম করিয়া, তাঁহাকে আদ্যোপােন্ত আপনার দুঃখের কাহিনী বলিলেন। ব্ৰাহ্মণ বলিলেন,-“দেখ, ভূতে পাইলে আমি ছাড়াইতে পারি। ভূতে যদি কাহাকেও একবারে উড়াইয়া লইয়া যায়, তাহার। আমি কি করিতে পারি? পাহাড়ে লইয়া গিয়াছে, কি সমুদ্রের ভিতর লুকাইয়া রাখিয়াছে, তাহা আমি কি করিয়া জানিব? ফকির সাহেব! তোমার স্ত্রীকে আনিয়া দেওয়া আমার সাধ্যাতীত।” এই কথা শুনিয়া আমীর মাথা হেঁট করিয়া সেইখানেই বসিয়া পড়িলেন, চক্ষু দিয়া টপ্‌, টপ করিয়া জল পড়িতে লাগিল। দুৰ্ব্বাসা মুনির জাতি! যেমন কঠিন, তেমনি কোমল! সেই জলেই ব্ৰাহ্মণের মন ভিজিয়া একেবারে গলিয়া গেল। ব্ৰাহ্মণ বলিলেন, —“শুন ফকিরজী! তোমাকে মনের কথা বলি,—প্ৰকাশ করিও না। তাহা হইলে রোজা বলিয়া আমার যা কিছু মান-সন্ত্ৰম-প্রতিপত্তি হইয়াছে, সকলই যাইবে। তোমাকে সত্য করিয়া বলিতেছি, আমি প্রকৃত রোজা নাই, ভূত ছাড়াইবার একটি মন্ত্রও জানি না। এমন কি, গায়ত্রী পৰ্যন্ত জানি না, আর লেখাপড়া বিষয়ে, ক-খ পৰ্যন্ত শিখি নাই। তবে এইমাত্ৰ বলিতে পারি যে, আমি একজন পরম নিষ্ঠাবান ব্ৰাহ্মণ । চৌকায় বসিয়া খাই। আজকালের ইংরেজী-পড়া বাবুভায়াদিগের মত নই।” ওঁক্ষ্মমীর বলিলেন, —“সে কি মহাশয়! তবে আপনি মহাজন কন্যার ভূত ছাড়াইলেন কি ?” ব্ৰাহ্মণ উত্তর করিলেন, —“সে কথা তোমাকে আদ্যোপােন্ত সমস্ত বলিতেছি। রও না, তাহা হইলে আমার বড়ই মন্দ হইবে। আমীর বলিলে,-“আল্লার কসম, সূৰ্য্যন্ত্রীর মুখ দিয়া একথা কখনই বাহির হইবে না।” ব্ৰাহ্মণ বলিলেন,-“এই গ্রামে ত বাস করে। তাঁতি তাত বুনিয়া খায়, কোন ল্যাঠাই ছিল না। একদিন কি মতি উইল, সে তাঁত বুনিতে বুনিতে একটু গুন গুন স্বরে গান করিল। নিজের কানে সুরটি-স্বরটি বড়ই সুমধুর বলিয়া লাগিল। পুনৰ্ব্বার আস্তে আস্তে গাইয়া দেখিল, বড়ই মিষ্ট বটে! তীতি মনে মনে ভাবিল,—“আমি একজন প্রকৃত গাইয়ে। এ গুণটি এতদিন প্রচ্ছন্ন অবস্থায় বৃথা নষ্ট হইতেছিল। জগতের দশাই এই, তা না হইলে হীরামণিমুক্তা উপরে চক্‌মক্‌ না করিয়া, মাটি কি জলের ভিতর কেন বৃথা পড়িয়া থাকিবে? যাহা হউক, এখন হইতে গান গাইয়া আমি জগৎ মুগ্ধ করিব, মধুর তানে অবিরত জগতের কর্ণকুহরে। সুধা ঢালিয়া দিব । আপাততঃ প্ৰতিবাসী দিগকে আমার গুণের কিঞ্চিৎ পরিচয় দিই।” এই বলিয়া তাঁতি ক্রমে গলা ছাড়িয়া গান আরম্ভ করিল। একদিন যায়, দুই দিন যায়, গ্রামবাসীরা শশব্যস্ত। দুই-চারি দিন পরে গ্রামের লোক অস্থির ইহয়া পড়িল। প্ৰাণ লইয়া সকলের টানাটানি সুতরাং আবালবৃদ্ধ-বনিতা সকলে গিয়া তাতির দ্বারে উপস্থিত। তাঁতিকে ডাকিয়া বলিল,—“বাপু হে! পুরুষপুরুষানুক্ৰমে বহুদিন ধরিয়া আমরা এই গ্রামে বাস করিতেছি। তােমার গানের প্রভাবে আর আমরা এখানে তিষ্ঠিতে পারি না। বল ত’ ঘর-দ্বার ছাড়িয়া উঠিয়া যাই, আর না হয় চুপ কর, গানে ক্ষান্ত দাও। তাঁতি বলিল,—“না মহাশয়! সে কি কথা? গ্ৰাম হইতে উঠিয়া যাইবেন। কেন? সুরাবোধ নাই বলিয়া যদি আমার গান আপনাদিগের কানে ভাল না লাগে, তাহা হইলে আপনাদিগকে আর বিরক্ত করিতে চাহি না । আজ হইতে মাঠে বসিয়া আমি গান করিব। যাহার বোধাবোধ আছে, তিনি মাঠে গিয়া আমার গান শুনিবেন, আর পারিতোষিক-স্বরূপ ट्रछ ७ शाबर Sos g sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro