পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একপিণ করিয়া আমি তাঁহাকে কড়ি দিব।” এইরূপ আশ্বস্ত হইয়া গ্রামের লোকে যে যাহার ঘরে চলিয়া গেল। তাঁতি গিয়া মাঠের মাঝখানে এক অশ্বথগাছের নীচে তাত খাটাইল। সেখানে বসিয়া মনের সুখে গান করিতে লাগিল। তবে খেদের বিষয় এই, শুনিতে কেহ যায় না, জনপ্ৰাণী সেদিক মাড়ায় না। কাক-পক্ষী সেদিকে ভুলিয়াও উড়িয়া যায় না। ব্ৰাহ্মণ বলিতেছেন, —“ফকির জী! আমি বড়ই দরিদ্র ছিলাম। এ গ্রামের ভিতর আমার মত দীনদুঃখী আর কেহ ছিল না। গৃহিণী ও আমি যে কত উপবাস করিয়াছি, তাহা বলিতে পারি না। নিজের যাহা হউক, ব্ৰাহ্মণীর শীর্ণ দেহ, মলিন মুখ দেখিয়া সততই আমার প্রাণ কাদিত। কি করিব, কোনও উপায় ছিল না, মনের আগুন মনেই নিবাইতাম, চক্ষের জল চক্ষেই শুকাইতাম । ব্ৰাহ্মণী একদিন আমাকে বলিলেন—“আজ ঘরে আটা নাই। তাঁতি বলিয়াছে, তাহার গান শুনিলে একপিণ কড়ি দিবে। যাও না, একটুখানি কেন শুনিয়া এস না? একপণ কড়ি পাইলে ঘরে অন হইবে, দুইজনে খাইয়া বঁচিব।' আমি বলিলাম—“দেখ ব্ৰাহ্মণী! ও কথাটি আমাকে বলিও না। শূলে যাইতে বলতে যাইতে পারি, কিন্তু তাতির গান আমাকে শুনিতে বলিও না, তিলেকের নিমিত্তও সে দগ্ধানি আমি সহ্য করিতে পারিব না।” এই কথা লইয়া ব্ৰাহ্মণীর সঙ্গে আমার ক্রমে কিঞ্চিৎ বাচসা হইল। ব্ৰাহ্মণী আমাকে ঘর হইতে ঠেলিয়া বাহির করিয়া দিলেন। বলিলেন, — “যাও, একটুখানি তাঁতির গান শুনিয়া একপণ কড়ি লইয়া আইসি।” পথে বাহির হইয়া আমি মনে মনে ভাবিলাম, কি করিব! তাতির গান কি করিয়া শুনি? অথচ কড়ি না লইয়া আসিলে ব্ৰাহ্মণী আর রক্ষা রাখিবেন না। তাঁতির গান শুনার চেয়ে মারা ভুল। এ ছাঁর জীবনে আর কাজ নাই। গলায় দড়ি দিয়াই মরি। এইরূপ মনে মনে স্থির করিয়া) একজনদের বাটী হইতে একগাছি দড়ি চাহিয়া লইলাম। এ মাঠে তাঁতি গান করিতেছে, অন্যদিকে প্রায় দুই ক্রোশ দূরে, আর একটি মাঠে গিয়া আর একটি অশ্বথগাছে দড়িটি খাটাইলুম্ফিসিটি ঠিক করিয়া লইলাম। গলায় দিই। আর কি, এমন সময় সেই গাছের ভিতর స్టో ভূত বাহির হইল। ভূত আমাকে বলিল,— ভূত বলিল,—“আর ভাই! ও কথা বলিস্নে। যে গাছের তলায় এখন আঁতি গান করিতেছে, যুগযুগান্তর হইতে ঐ গাছে আমি বাস করিতেছিলাম। গাছটি আমার বড়ই প্রিয় ছিল। কিন্তু হইলে হইবে কি, যেদিন হইতে তাঁতি উহার তলায় গান আরম্ভ করিল, সেই দিন হইতেই আমাকে ওগাছ ও-মাঠ ছাড়িয়া পলাইতে হইল। দেখিতেছি, দুই জনেই আমরা বিপদে বিপন্ন। তা তোর আর ভাবনা নাই, তুই বাড়ী ফিরিয়া যা। তোদের গ্রামের মহাজনের কন্যাকে আমি গিয়া পাইব । কিছুতেই ছাড়িব না, কেবল তুই গিয়া যখন আমার কানে কানে বলিবি যে, আমি সেই দরিদ্র ব্ৰাহ্মণ আসিয়াছি, তখনই আমি ছাড়িয়া দিব। মহাজনের অনেক টাকা আছে, আর সেই একমাত্র কন্যা। অনেক ধন-দৌলত দিয়া তোকে বিদায় করিবে, তোর দুঃখ ঘুচিবে ’ব্ৰাহ্মণ বলিলেন, — “সেখজী! শুনিলে তো। আমি রোজা নাই, আমি মন্ত্রতন্ত্র কিছুই জানি না। দৈবক্রমে আমার একটি ভূতের সহিত সাক্ষাৎ হইয়াছিল, তাহা হইতেই আমার এই যা-কিছু বল। মহাজনের কন্যার ভূত ছাড়িলে চারিদিকে আমার নাম বাহির হইল যে, আমার মত রোজা আর পৃথিবীতে নাই। ভূতে পাইলে সকলে আমাকে লইয়া যায়। আমাকে আর কিছু করিতে হয় না, কেবল আমি রোগীর কানে কানে গিয়া বলি,—“শীঘ ছাড়িয়া যাইবে তো যাও, না হইলে এখানে তাতির গান দিব। তাতির নামে সকল ভুতই জড়-সড় পলাইতে পথ পায় না।” . Gaffgafia gibert So9Ö frr:Rls viðS (SS BS! ro www.amarboi.comfo” දිනදී