পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিছুমাত্র অভাব নাই। ভূত প্রচুর পরিমাণে সে সকল আনিয়া দেয়।” এই বলিয়া তিনি পোলাও, কালিয়া, কুৰ্ম্ম, কোপ্তা, কাবাব, করি আনিয়া স্বামীকে উত্তমরূপে আহার করাইলেন। অষ্টম অধ্যায় চণ্ডু-মাহাত্ম্য আহারান্তে বিছানায় শুইয়া আমীর নল দ্বারা চণ্ডুধুম পান করিতে লাগিলেন, আর ভাবিতে লাগিলেন,—“কি করিয়া স্ত্রীকে ভূতের হাত হইতে উদ্ধার করি।” ধূমপান করিতে করিতে স্ত্রীকে বলিলেন,-“এ বিপদ হইতে উদ্ধার হইবার নিমিত্ত আমি এক উপায় স্থির করিয়াছি, তুমি কি বল? লুলু সভ্য ভব্য নব্য ভূত। ভূতের তেল মাখিয় যদিচ আমার শরীর ভূতের বল হইয়াছে, তথাপি তাহার সহিত বোধ হয় সম্মুখ-সংগ্রামে আমি জয়লাভ করিতে পারিব না। বিশেষতঃঘ্যাৰ্ঘোঁ আমাকে বলিয়া দিয়াছে,—“কৌশল করিয়া স্ত্রীর উদ্ধার করিও। সেজন্য তুমি একটি কাজ কর। অল্প অল্প লুলুকে প্রশ্ৰয় দাও । দিনকতকাল তাঁহাকে চণ্ডুর ধূম পান করাও। তারপর কি হয় বুঝা যাইবে । গোকুলের বঁাকা কালাচীর্ষেক সহিত পরিণয় করিলে রক্ষা আছে, কিন্তু আফিম-কালাচাঁদের সহিত প্ৰেম করিলে নাই। চণ্ডুর পরিণয়ে তুমি তাহাকে আবদ্ধ করা। আমার সমুদয় সরঞ্জাম তোমার রাখিয়া যাইব । দিনকতকাল কাচা আফিম খাইয়া না হয় কষ্টেশ্রেষ্ঠ কাল কাটাইবি।” অর্মীয়-রমণী বলিলেন,-“এ পরামর্শ মন্দ নয়।” এইরূপ কথোপকথনে নিশা হইল। তখন আমীর-রমণী বলিলেন, —“আর তুমি এখানে থাকিও না। ভূতের অসিবার সময় হইয়াছে। ভূত চরিতে গেলে, কাল আবার আসিও। চণ্ডুর আসবাব রাখিয়া যাও। দেখি কি করিতে পারি। কিছু খাবার-দাবার সঙ্গে লইয়া যাও, দিনের বেলায় খাইবে।” আমীর স্ত্রীর নিকট বিদায় লইয়া পুনরায় সেই গৰ্ত্তে গিয়া লুকাইয়া রহিলেন। প্ৰাতঃকাল না হইতে হইতে ভূত বাটী ফিরিয়া আসিয়াই, প্রথমে আপনার গৰ্ত্তে গিয়া শুইল । ঘোরতর নাক ডাকাইয়া অনেকক্ষণ নিদ্রা যাইল। তারপর উঠিয়া হ্রদের জলে স্নান করিতে যাইল। পাথর দিয়া, ঝামা দিয়া, বালি দিয়া সাবাং দিয়া উত্তমরূপে গা মাজিল। শরীরের নানাস্থানে রক্ত ফুটিয়া পড়িতে লাগিল। আপনা। আপনি বলিল,-“ক্রমে এইবার দুধে-আলতার রং হইয়া আসিতেছে। তারপর সাজগোজ করিয়া আমীর-রমণীর নিকট গমন করিল। বলিল,—“কি সুন্দরি! দেখিতেছি দিন দিন কি হইতেছি? দুধে-আলুতার রং! আমীর-রমণী বলিলেন,-“তই তো! তোমাকে যে চেনা যায় না।” ভূত বলিল,—“পাথর, ঝামা, বালি, ং!” আমীর-রমণী বলিলেন—“সত্য সত্যই তুমি সভ্য ভব্য নব্য ভুত।” ভূত বলিল,— “তবে কাজি ডাকি?” আমীর-রমণী বলিলেন, —“কাজি ডাকায় আমার কিছু আপত্তি নাই, তবে কি না জান, তুমি হইলে ভূত, আমি হইলাম মানুষ, দুই জনে মিলিবে কি করিয়া তাই ভাবিতেছি। মানুষের মত একটু-আধটু যদি তোমার ব্যবহার দেখি, তাহা হইলে বুঝি, হী, দুই জনে পরিণয় হইতে পরিবে। এই দেখ, এত খাদ্যদ্রব্য তুমি আমাকে আনিয়া দাও, নিজে কিন্তু ত্ৰৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্ৰহ SAS uskla »ižo 333) a www.amarboi.comio