পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহারা একবার আসিয়া দেখুন। প্রথম হইতেছেন সেই জানি, যিনি বলিয়া দিয়াছিলেন যে, তুমি আমার স্ত্রীকে লইয়া গিয়াছ। তারপর সেই ব্ৰাহ্মণ, যাহার মত রোজা এ ধরাধামে কখনও হয় নাই, হবে না। তারপর আমাদের তাঁতি-ভায়া, যার মত সঙ্গীত-বিদ্যাবিশারদ পৃথিবীতে হয় নাই, হবে না। তারপর সেই কলুর পো, যার মত তৈলনিষ্পীড়ক জগতে হয় নাই, হবে না। আর যদি ভূতাদিগকে আনিতে পাের, তাহা হইলে ত’ বড়ই সন্তুষ্ট হই । সেই ভূততত্ত্ববিৎ মহাপণ্ডিত ব্ৰাহ্মণের ভূত, সেই অমানুষিক অভৌতিক প্রেমিক ঘ্যাৰ্ঘো, আর সেই ভাবি সম্পাদক তৈলপ্রদায়ক গোগী! তোমার গেঁটে দাদার সহিত আলাপ পরিচয় করিতেও আমার বড়ই ইচ্ছা। আর একটি কথা—আহা! ঘ্যাঘোর বিবাহ হয় নাই, তাহার সেই নাকেশ্বরীকে আনিয়া যদি দুইজনে মিলন করিয়া দিতে পাের, তাহা হইলে বড়ই সন্তুষ্ট হই।” লুলু বলিল,—“আপনার সমুদয় আদেশ পালন করিতে আমি সমর্থ। আমি এই রাত্ৰিতেই সকলকে এখানে আনিতেছি।” সন্ধ্যার সময় ভূত ঘর হইতে বাহির হইল। রাত্রি একপ্রহরের মধ্যে জানু, ব্ৰাহ্মণ, তাঁতি ও কলুকে লইয়া ফিরিয়া আসিল। আমীর সকলকে যথাবিধি অভ্যর্থনা করিলেন!। তিনি আপনার বিবিকে পাইয়াছেন শুনিয়া সকলে পরম সুখী হইলেন। কিয়ৎক্ষণে পরে লুলু পুনৰ্ব্বার আকাশপথে যাত্রা করিয়া ব্ৰাহ্মণের ভূত, ঘ্যাঘেী, গোগা ও সভ্য ভব্য নব্য গেটে দাদাকে লইয়া আসিল । ঘ্যাঘোর মনােহর নাক-ধারিণী বিশ্ববিমােহিনী সেই ভূতিনীকেও আনিয়া দিল। ভূতনী অন্তঃপুরে আমীর-পত্নীর নিকট গমন করিলেন । পুরুষ-মানুষ ও পুরুষ-ভূত সকলে বহিৰ্ব্বাটীতে উপবেশন করিলেন। পরস্পরে আলাপ-পূরিচয় হইলে, আমীর অনুনয়-বিনয় করিয়া সকলকে বলিলেন,-মহােদয়গণ! আজি আমার এ গরীরখানাতে পদাৰ্পণ ಇತ್ಹ ণ আমার মনে একটি বাসনা বড়ই আজ রাত্ৰিতেই সমাধা করি। গোগো যেক্টেঘোর নামে মিথ্যা কুৎসা করিয়াছিল, তাহা আমার পত্নী, নাকেশ্বরীর মাসীকে দিয়াছেন। গোগাঁও একথা এখন স্বীকার করিতেছে। নাকেশ্বরীর মাসী বিবাহেঁ সম্মতিদান করিয়াছেন, এখন আপনাদিগের কি মত?” সকলেই একবাক্য হইয়া বলিলে,—“তথাস্তু, শুভকার্য্যে বিলম্বে প্রয়োজন নাই। তখন আমীর,- লুলু প্রভৃতি ভূতাদিগকে পৃথিবীর সমস্ত ভূত নিমন্ত্ৰণ করিয়া আনিতে বলিলেন। কিন্তু উপস্থিত ভূতগণ সকলেই মীেন হইয়া রহিল। আমীরের আদেশপালনে কেহই তৎপর হইল না। আমীর জিজ্ঞাসা করিলেন,-“আমি কি তোমাদিগকে কোন দুঃসাধ্য কাৰ্য্য করিতে অনুরোধ করিয়াছি? পৃথিবীর সমস্ত ভূত নিমন্ত্রণ করা কি তােমাদের অভিপ্রেত নয়?” লুলু উত্তর করিল,—“মহাশয়! আপনি যেরূপ সদাশয় লোক, তাহাতে আপনার সমস্ত আদেশই আমাদের শিরাধাৰ্য্য। তবে কি না, আমরা ভারতীয় ভূত, ভারতের বাহিরে আমরা যাইতে পারি না। সমুদ্রের অপর পারে পদক্ষেপ করিলে আমরা জাতিকূল-ভ্ৰষ্ট হইব। আমাদের ধৰ্ম্ম কিঞ্চিৎ কাঁচা। যেরূপ অপক মৃত্তিকাভাও জলস্পর্শে গলিয়া যায়, সেইরূপ সমুদ্ৰ-পারের বায়ু লাগিলেই আমাদের ধৰ্ম্ম ফুস করিয়া গলিয়া যায়, তাহার চিহ্নমাত্র থাকে না, ধৰ্ম্মের গন্ধটি পৰ্যন্ত আমাদের গায়ে লাগিয়া থাকে না। কেবল তাহা নহে, পরে আমাদের বাতাস যাহার গায়ে লাগিবে, দেবতা হউন কি ভূত হউন, নর হউন কি বানর হউন, তিনিও জাতিভ্ৰষ্ট হইবেন। যার পক্ষে যেরূপ ব্যবস্থা,- দিবারাত্রি তাঁহাদিগকে পঞ্চামৃত খাইতে হইবে, কিংবা কল্মা পড়িতে হইবে, তবে তাঁহাদের ধৰ্ম্মটা টায়টোয়ে বজায় থাকিবে। আপনাকে সকল কথা খুলিয়া বলিলাম, এখন যেরূপ অনুমতি প্ৰবল হইয়াছে, আপনারা তাহা করেন । så ত্ৰৈলোক্যনাথ রচনাস{ Y Vb uskla »ižo 33 m vi.amarboi.comio ŞIK