পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পুরুষানুক্ৰমে আমাদিগের রাজার হালে চলিত। সেই তুমি এক্ষণে যমুনার জলপ্লাবনে একেবারে বালুকাময় হইয়া গিয়াছে। তাহা হইতে তোমরা যদি বালুকা সব তুলিয়া ফেলিতে পাের, তাহা হইলে আমার বিশেষ উপকার হয়।” ভূতেরা বলিল,—“যে আজ্ঞে, আমরা এইক্ষণেই করিতেছি। এই বলিয়া যত ভূত সেই মুহূৰ্ত্তে ভূমির নিকট যাইল এবং অতি অল্পক্ষণের মধ্যেই সমুদয় বালি উঠাইয়া ফেলিল। ভূমি পূৰ্ব্বের মত উৰ্ব্বর ও ফলশায়ী হইল। তখন তাহারা আমীরের বাটীতে প্ৰত্যাগমন করিয়া বিদায় লইয়া স্ব স্ব স্থানে প্ৰস্থান করিল। আমীর কিন্তু গোগাকে যাইতে নিষেধ করিলেন। তাহাকে বলিলেন, —“গোগো ! তুমি যাইও না। তোমার অস্থি-মজ্জা সমুদয় চূর্ণ-বিচূর্ণ হইয়া গিয়াছে, তোমার শরীর একেবারে ভাঙ্গিয়া গিয়াছে। আফিম আর দুধ, এই দুই বস্তু নিয়মিতরূপে ব্যবহার করিলে তোমার শরীর পুনর্গঠিত হইতে পারে। যেহেতু আফিম অতি অপূৰ্ব্ব পদার্থ, ইহা সেবন করিলে মানুষ যে বয়সে খায়, সেই বয়সেই চিরকাল থাকে, শরীরের কোষ সমুদয় ধ্বংস হয় না, ম্যালেরিয়া বিষজনিত জ্বর ইহার নিকটে আসে না। কি মনুষ্যের, কি ভূতের, ইহা সেবন করিলে পরমায়ু বৃদ্ধি হয়। অতএব তুমি লুলুর নিকট অবস্থিতি করা। চণ্ডু পান করিতে অভ্যাস করা।” গোৰ্গা তাঁহাই স্বীকার করিল। এইরূপে আমীর স্ত্রীকে লইয়া সুখে স্বচ্ছন্দে ঘরকন্না করিতে লাগিলেন । অল্পদিনের মধ্যেই লুলু গণ্য-মান্য সকলের নিকট প্রিয়পাত্ৰ হইয়া উঠিলেন। একটু আধটু যাহারা নেশা করিতেন, সকলেই তাঁহার প্রেমে মু । স্ট্রীলোক দেখিলে তিনি “মা” বলিয়া ভিন্ন কথা কহিতেন না। চণ্ডুর মোহিনী ভাবে তাঁহার বিকৃতি আকার ক্রমে সুকৃতি হইয়া উঠিল; নব্য না হউন, সত্য একজন সভ্য-ভব্য ভূত হইলেন। চণ্ডুর সহিত দুধ-ঘি খাইয়া তাহার রং যথা হইয়া উঠিল। তবে তাহার দোষ এই, নেশাখের ভিন্ন অপরের সহিত তিনি প করিতেন না। যাহা হউক, এত পোষ মানিয়াছিলেন যে, আমীর-রমণী ত দেখিয়া আর কিছুমাত্র লজ্জা বা ভয় করিতেন না। আমীরের অবস্থা ভাল হইলেও, লুলু গাড়ী করিতে দেন নাই। তাঁহার যেখানে যাইবার আবশ্যক হইত, তিনি পিঠে লইয়া যাইতেন। তাহার পিঠে চড়িয়া আমীর-রমণী কতবার বাপের বাড়ী গিয়াছিলেন। লুলুকে সৰ্ব্বদা এখানে-সেখানে যাইতে হইত বলিয়া তিনি স্বর্ণকারের দ্বারা দুইখানি পাখা গড়াইয়া লইয়াছিলেন। কোথাও যাইতে হইলে ঐ দুইখানি পাখা যাইতেও শ্রম হইত না। একবার সমুদ্র দেখিতে আমীর-রমণীর বড়ই সাধ হইয়াছিল। লুলু এ কথা শুনিয়া বলিলেন, “তার ভাবনা কি? আমার পিঠে চড়। আমার মাথাটি ভাল করিয়া ধর, আমি সমুদ্র দেখাইয়া আনিতেছি।” এই প্রকারে তিনি আমীর-রমণীকে সমুদ্র দেখাইয়া আনিলেন। কিছুদিন পরে গোগাঁর শরীর পুনরায় সবল হইলে, আমীর তাহাকে বলিলেন,-“গীেগাঁ! তাহার সম্পাদক হইবে তুমি।” যথাসময়ে আমীর একখানি সংবাদপত্র বাহির করিলেন। একে ভূত সম্পাদক, তাতে আবার চণ্ডুখের ভূত,-“গুলির চৌদ্দপুরুষ। সে সংবাদপত্রের সুখ্যাতি রাখিতে পৃথিবীতে আর স্থান রহিল না। সংবাদপত্ৰখানি উত্তমরূপে চলিতে লাগিল, তাহা হইতেও আমীরের বিলক্ষণ দুই পয়সা লাভ হইল। ত্ৰৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্ৰহ ኩr ya af :Iist ~itë 3 q<; &&! a www.amarboi.comi“