পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম পৰ্ব্ব কৰ্ত্তা-ভূত বলিতেছেন! কৰ্ত্তা-ভূত বলিতেছেন, — তোমার শীতলাটি কাড়িয়া মনে মনে আমার বড়ই আনন্দ হইল, কারণ এইরূপ কাজে যেরূপ আমার আনন্দ হইত, এমন আর কোনও কাজে নয়। কিন্তু তোমার গড়া। বেলে মাটি নয়, মেটে সিন্দূর নয়, জাল রাঙ্গতা নয়। তাই দুই দিন পরেই আমার বসন্ত হইল। তোমার সেই চৌষট্টি হাজার বসন্তে আমায় ছাইয়া ধরিল। চুলের ডগা পায়ের কোড়ে আঙ্গুলের আগা পৰ্যন্ত, তিল রাখিবার স্থান ছিল না। বৈদ্য আসিয়া মহাদেব-চুর্ণ ও গৌরচন্দ্ৰকা ঘূতের ব্যবস্থা করিলেন। মহাদেব চূৰ্ণ খাইতে দিলেন, আর গৌরচন্দ্রকা ঘূত গায়ে মাখিতে বলিলেন। ঔষধের ব্যবস্থা দেখিয়াই বুঝিলাম যে, এবার গতিক বড় ভাল নয়। তিন দিন পরে রাত্রিকালে যমদূতেরা আমাকে লাইতে আসিল। চারিটি যমদূত আসিয়াছিল। সব বিকটমূৰ্ত্তি, দেখিলে প্ৰাণ শুকাইয়া যায় । যমদূতেরা আসিয়া আমার মাথায় হাত বুলাইয়া টিকিট খুঁজতে লাগিল, ইচ্ছা যে, টিকিট ধরিয়া আমাকে যমপুরে লইয়া যায়! কিন্তু আগে থাকিতে আমি একটি বুদ্ধির কাজ করিয়া রাখিয়াছিলাম। সেই দিন প্ৰাতঃকালে, রোগের বে-গতিক দেখিয়া মনে মনে করিলাম যে, পৃথিবীতে আসিয়া আমি কখনও কােনও একটি পুণ্যকৃষ্ঠুকরি নাই। চিরকাল পাপ করিয়াছি। নরহত্যা, ব্ৰহ্মহত্যা গােহত্যিা, শ্ৰীহত্যা, চুরি, জাৰ্ভ প্রভৃতি যাহা কিছু পাপকৰ্ম্ম, সকলই করিয়াছি। ভাল কাজ একটিও কখনও করি নাইটে তাে দেখিতেছি, মৃত্যু উপস্থিত। যমকে গিয়া জবাব দিব কি? তাই মনে করিলাম, ফেঁ&এই অন্তিমকালে একটি পুণ্য কাজ করি। আমি চান্দ্ৰায়ণটি করিলাম! গোয়ালে ১ওঁকটি ঐড়ে বাছুর ছিল। আমি মিত্তির জা! আমার গোয়ালের ঐড়ে বাছুর কেমন তা বুঞ্জিয়া লও। একফোঁটা দুধ থাকিতে গাইকে আমি কখনও ছাড়ি নাই। মা'র দুধ কারে বলে বাছুরটি তা কখনও চক্ষে দেখে নাই। অন্য খাওয়া-দাওয়াও অদ্রুপ। সুতরাং না খাইয়া খাইয়া বাছুরটি অস্থিচৰ্ম্মসার হইয়াছিল। মর-মর হইয়াছিল। সেই এঁড়ে বাছুরটি একজন ব্ৰাহ্মণকে দান করিলাম। দড়ি ধরিয়া বাছুরটিকে ব্ৰাহ্মণ লইয়া চলিলেন। আমার বাড়ীর বাহির হইয়াই রাস্তার উপর বাছুর শুইয়া পড়িল, সেইখানেই মরিয়া গেল। চান্দ্ৰায়ণ করিতে মাথাটি নেড়া হইয়াছিলাম। মাথাটি ঠিক বোম্বাই ওলের মত হইয়াছিল। যমদূতেরা টিকি ধরিয়া আমাকে যমের বাড়ী লইয়া যাইলেন, তার যো ছিল না। অন্ধকারে যমদূতেরা আমার মাথায় হাত বুলাইয়া দেখিল যে, টিকি নাই। যমদূতেরা ফাঁফরে পড়িল। কি ধরিয়া আমাকে লইয়া যায়? অবশেষে চিন্তা করিয়া তাহারা আমার হাত ধরিল। গৌরচন্দ্রিকাঘূতে আর বসন্তের রসে আমার গা হড়হড়ে হইয়াছিল। অনায়াসেই আমি হাতটি ছাড়াইয়া লইলাম। পা ধরিল, হড়াৎ করিয়া পা-টিও ছাড়াইয়া লইলাম। যেখানে ধরে আর আমি পিছলে। গিয়া সরিয়া বসি। কখনও তক্তাপোষের উপর, কখনও তক্তাপোষের নীচে, কখনও ঘরের মাঝখানে, কখনও পাশে, এ-কোণে, সে-কোণে, যমদূতাদিগের সঙ্গে সমস্ত রাত্রি অন্ধকারে আমি এইরূপ পেছলা-পিছলি করিতে লাগিলাম। কিন্তু তারা হইল চারি জন, আমি হইলাম একা । কতক্ষণ আর পেছলা-পিছলি করিব? ভোর মাথায় তাহারা হাতে ছাই ও মাটি মাখিয়া আসিল । সুতরাং আর আমি পিছলে যাইতে পারিলাম না। আমাকে বাধিয়া ফেলিল । Storbr frig aniż3. g3 ze - www.amarboicomfo%7*"*"***"****