পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মক্কা নগরে ইব্রাহিমের ঘরে বীরবালা বাস করিতে লাগিলেন। সুন্দর শান্ত-প্রকৃতি বালক দেখিয়া ইব্রাহিম বীরবালাকে স্নেহ করিতে লাগিলেন। ইব্রাহিমের স্ত্রীও তাঁহাকে পুত্ৰবৎ স্নেহ করিতে লাগিলেন। কিছুদিন থাকিতে থাকিতে বীরবালা একদিন ইব্রাহিমের বিবিকে আপনার বৃত্তান্ত বলিলেন। তখন ইব্রাহিমের স্ত্রী বুঝিতে পারিলেন যে, বীরবালা বালক নন্‌—বালিকা। স্বামীকে তিনি সকল কথা বলিলেন। স্ত্রী-পুরুষে বীরবালার দুঃখে অতিশয় দুঃখিত হইলেন। দয়া করিয়া তাহারা বীরবালাকে দাসত্ত্ব হইতে মুক্ত করিলেন ও অর্থ দিয়া বণিকদিগের সহিত বোগদাদে প্রেরণ করিলেন । সাহেব-ভূত বীরবালা বোগদাদে উপস্থিত হইয়া শাহ সুলতানের বাটী অন্বেষণ করিতে লাগিলেন। শাহ সুলতান সন্ত্রান্ত ব্যক্তি, অনায়াসেই তাঁহার তত্ত্ব পাইলেন। বীরবালা শুনিলেন যে, আজ এক বৎসর শাহ সুলতান মরিয়া গিয়াছেন। তিনি বিপুল ধূৰ্বসূত্ৰাখিয়া গিয়াছিলেন। পাঁচ বৎসরের একটি শিশুকন্যাকে সেই বিষয়ের অধিকারিণী যান। কিন্তু তাঁহার ভ্রাতুষ্পপুত্র ফরািগৎ হােসেন, কন্যাটিকে তাড়াইয়া দিয়া সমুদয় বিষ্ণুষ্ঠািত্মসাৎ করিয়াছিলেন। তাহার পর নানারূপ দুক্ৰিয়া দ্বারা অল্পদিনে সমুদয় বিষয় তিনির্দিষ্ট করিয়া ফেলিয়াছেন। পথের ভিখারী হইয়া অবশেষে একটি সাহেবের বাড়ীতে চুকুন্ত্রী করিতেছেন। এই সকল কথা শুনিয়া বীরবালার নিশ্চয় প্রতীতি হইল যে, শিশুটি আৰু নয়। কমলা-এক্ষিণে তিনি সেই শিশুটির অন্বেষণ করিতে লাগিলেন। অনেক সন্ধান করিয়া অনেক ক্লেশে, শেষে জানিতে পারিলেন যে, শাহ সুলতানের বাটী হইতে বিদূরিত হইয়া শিশুটি অনেক দিনের নিমিত্ত পথে পথে কাঁদিয়া বেড়াইতেছিল। একদিন গাছতলায় বসিয়া কাঁদিতেছিল, এমন সময় সেই পথ দিয়া একটি ইংরেজ বণিক ও তাঁহার স্ত্রী যাইতেছিল। নিরাশ্রয় শিশুটিকে দেখিয়া তাহদের দয়া হইল । আদর করিয়া তাহাকে বাটী লইয়া যাইলেন। সেই অবধি ইংরেজ বণিকের ঘরে শিশুটি বাস করিতেছিল। ইংরেজ বণিকের সহসা সীেভাগ্যের উদয় হইল। সহসা তিনি বিপুল অর্থলাভ করিয়া স্বদেশে গমন করিলেন। শিশুটি তাঁহাদের সঙ্গেই রহিল। এ কথা শুনিয়া বীরবালা হতাশ হইয়া পড়িলেন। বোগদাদে আসিয়াও কমলাকে পাইলেন। না। কি করিবেন? এক্ষণে বিলাত যাইবার জন্য প্রস্তুত হইলেন। আবার পথ চলিতে আরম্ভ করিলেন। বহুদিন পরে ভূমধ্যসাগর-কূলে গিয়া উপস্থিত হইলেন। কি করিয়া বিলাত যাইবেন, বিষ্ণবদনে সেইখানে বসিয়া ভাবিতে লাগিলেন। নিজের দূরদৃষ্ট ভাবিয়া দীর্ঘনিঃশ্বাস পরিত্যাগ করিলেন। নিঃশ্বাসটি যেই ফেলিয়াছেন, আর কাতরস্বরে চীৎকার করিয়া নিকটে কে কাদিয়া উঠিল। চমকিত হইয়া বীরবালা চাহিয়া দেখিলেন, সম্মুখে একটি সাহেব-ভূত! সাহেব-ভূত কাঁদিতে কাঁদিতে বলিলে,-“ওগো তুমি আমার সহিত এরূপ নিষ্ঠুর ব্যবহার কেন করিলে? জোরে নিঃশ্বাস ফেলিলে কেন? এই দেখ, আমার শরীরের যোড় সব খুলিয়া গেল।” RO দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboiconi?" §න්ද්