পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ আমি বড় বোকা বালিকার রূপ, বালিকার দুঃখ দেখিয়া আমি মুগ্ধ হইলাম। আমি বলিলাম,- “রামকমলবাবু যখন বাড়ী নাই, তখন আমাকে যাইতে হইবে। আমি একজন ডাক্তার বটে; কিন্তু এ স্থানে আমি ডাক্তারি করি না। কলিকাতা হইতে কেবল দুইদিন আমি এ স্থানে আসিয়াছি।” বালিকা চক্ষু মুছিয়া কাতরস্বরে বলিল,— “ও মহাশয়! তবে আসুন, তবে শীঘ্ৰ আসুন; বিলম্ব করিলে তিনি মারা পড়িবেন; বিলম্ব করিবেন না, শ্ৰীঘ্ৰ আসুন।” বালিকার জুলুম দেখিয়া মনে মনে আমি একটু হাসিলাম। কিন্তু যাহার এরূপ দেবদুর্লভ সৌন্দৰ্য্য, পৃথিবীতে সে জুলুম করিবে না ত' আর করিবে কে? আমি ত’ আমি, পৃথিবীর সকল লোককেই সেই অলৌকিক রূপলাবণ্যবিশিষ্ট বালিকার হুকুম “যে আজ্ঞা” বলিয়া মানিতে হয়! অতি নম্রভাবে আমি বলিলাম,- “না, আমি বিলম্ব করিব না, শীঘ্য চাদরখানা লইয়া আসি।” তখন আমি ব্ৰহ্মদেশে কৰ্ম্ম করিতাম । ছুটি লইয়া দেশে আসিয়াছিলাম। আমার পিতামহী। কাশীবাসিনী হইয়াছিলেন। দুই-চারি দিনের নিমিত্ত তাঁহাকে দেখিতে আসিয়াছিলাম। এক বৃদ্ধ চাকর ব্যতীত অন্য কাহাকেও আমি সঙ্গে আনি নাই। আমি মনে করিলাম যে বালিকার বাটী নিকটেই হইবে। সেজন্য গাড়ী আনিবার নিমিত্ত চেষ্টা করিলাম না। চাদরখানি গায়ে দিয়া আমার ডাক্তারি ব্যাগটি ও লণ্ঠনটি নিজেই হাতে করিয়া মন্ত্র হইতে বাহির হইলাম। রাত্রিকালে আমার সে বৃদ্ধ চাকরকে সঙ্গে লইতে ইচ্ছা করিল্যাম/না। বালিকা দ্রুতবেগে আগে আগে তৈ লাগিলাম। তাহার বয়স অল্প; সে প্রায় ছুটিয়া যাইতে লাগিল। আমি যদিও ঠিকুবুন্টুর্নই, তথাপি আমার বয়ঃক্রম তখন পঞ্চাশের স্বাসৱেষ্ট্র হইবার উপক্রম হইল। তাহাতে একহাতে ব্যাগ, লিইয়া যাইতে আমার কষ্টবোধ হইতে লাগিল। তখন আমি বালিকাকে বলিলাম,- “একটু ধীরে ধীরে চল; অতি দ্রুত আমি যাইতে পারিব না।” বালিকা তখন আমার দিকে চাহিয়া দেখিল। আমি যে বালক নই, কি যুবা নাই, আমি যে বৃদ্ধ, বালিকা তখন প্রথম যেন তাহা বুঝিতে পারিল। কিন্তু অপ্রতিভ হইয়া সে আমার হাত হইতে লণ্ঠনটি কাড়িয়া লইল ও ব্যাগটি লাইতেও হাত বাড়াইল। তাহাকে আমি ব্যাগ লইতে দিলাম না। তখন হইতে বালিকা একটু ধীরে ধীরে চলিতে লাগিল। এতক্ষণ পৰ্যন্ত কোন কথাই আমি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিতে পারি নাই। অবসর পাইয়া এইবার আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “কাহার পীড়া হইয়াছে? কি হইয়াছে?” বালিকা উত্তর করিল,- “বাবু বড় পড়িয়া গিয়াছেন; বড় লাগিয়াছে, বড় রক্ত পড়িতেছে।” “বাবু” অর্থে অনুমানে স্বামী বলিয়া বুঝিলাম। কিন্তু এরূপ বিপদের সময় বালিকা পাছে লজ্জা পায়, সে নিমিত্ত বিশেষ করিয়া আর সে কথা জিজ্ঞাসা করিলাম না। “বাবু” অর্থে না হয় স্বামী হইল; কিন্তু ভদ্রঘরের বাঙ্গালী-কন্যা এত রাত্ৰিতে ঘর হইতে একলা ডাক্তার ডাকিতে কেন বাহির হইয়াছে? তাহার বাড়ীর অন্য কোন লোক আসে নাই কেন? অথবা চাকর-বাকর কেহ আসে নাই কেন? ইহার মৰ্ম্ম আমি কিছুই বুঝিতে পারিলাম না। অবশেষে আমি মনে মনে ভাবিলাম,- “আমি ডাক্তার মানুষ, লোকের রোগ দূর করা, লোকের শারীরিক যাতনা নিবারণ করা আমার কাজ। আমরা সাধু জানি না, পাপী জানি না; —রোগের চিকিৎসা লইয়া আমাদের ফোকুলা দিগম্বর S6 sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro SR