পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ এখন লজা করিতে পারি না। আমি এইরূপ ভাবিতেছি, এমন সময় বালিকা পুনরায় বলিল,— “বাবু কে, কোথা হইতে আসিয়াছেন, সেসব তাঁহাকে আপনি জিজ্ঞাসা করিবেন না। পাছে সেসব কথা কেহ তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করে, সেই ভয়ে তিনি এতক্ষণ ডাক্তার আনিতে দেন নাই। বাবু গোপনে আমাকে বিবাহ করিয়াছেন। আমার মেসো মহাশয় ও মাসী তাহার সহিত আমার বিবাহ দিয়াছেন। বাবুর পিতা জানিতে পারিলে বড়ই রাগ করিবেন; সেই জন্য এখন তিনি একথা গোপন রাখিতেছেন । এইবার পাশ দিয়া বাবু দেশে গিয়া, তাহার পিতাকে সকল কথা বলিবেন। তখন আর কোন কথা গোপন করিতে হইবে না! ঐ যা! পুনরায় অনেক কথা বলিয়া ফেলিলাম; কে জানে, লোকে কি করিয়া মনে কথা রাখে, আমি ত’ তা পারি না!” কথা গোপন রাখিবার ভাব দেখিয়া আমি মনে মনে একটু হাসিলাম। যাহা হউক, বালিকা যে স্বামীর সহিত কাশী আসিয়াছে, ইহার ভিতর যে কোন মন্দ বিষয় নাই, এই কথা শুনিয়া আমি আনন্দিত হইলাম। এই অল্পক্ষণের মধ্যেই সেই বালিকার প্রতি আমার মনে একপ্রকার স্নেহের উদয় হইয়াছিল । বালিকা পুনরায় বলিল,— “বাবু বড়ই দুৰ্ব্বল । মুখে যেন আর কিছুমাত্র রক্ত নাই। মুখ এমনই সাদা হইয়া গিয়াছে। আমার কপূল্লে/যে কি আছে, তা জানি না। আমাদের নূতন বিবাহ হইয়াছে। আমার লজ্জা করা উছিষ্ট কিন্তু এই বিদেশে আমাদের কেউ নাই। তাহার উপর এই ঘোর বিপদ! এ বিপূৰ্দ্ধসময় আমি লজ্জা করিতে পারি না; তাহাতে আমাকে যে যাই বলুক।” (సా এই কথা বলিয়া বালিকা যেন ঈষ্ট এইরূপ অৰ্থ- “তুমি আমাকে বেহায়া ভাবিতেছ! এখন আমার বাবুর প্রাণ লইয়। টানাটানি! তোমার ইচ্ছা যে, এখন আমি একহাত ঘোমটা দিয়া বসিয়া থাকি! বাটে ! বালিকা অবশ্য এরূপ কোন কথা প্ৰকাশ করিয়া বলে নাই। মনে মনে তাহার এরূপ চিন্তা উদয় হইয়াছিল কি না, তাহাও আমি জানি না। প্রকৃত সে কোপাবিষ্টভাবে আমার প্রতি চাহিয়াছিল কি না, তাহাও আমি ঠিক বলিতে পারি না; কিন্তু এই অল্পক্ষণের মধ্যেই তাহার উপর আমার এরূপ বাৎসল্যভাবের উদয় হইয়াছিল যে, পাছে সে রাগ করে- আমার মনে সেই ভয় হইল। আমি যেন কত দোষ করিয়াছি, আমি যেন কত অপরাধে অপরাধী হইয়াছি,-সেইরূপ অতি বিনীতভাবে আমি বলিলাম,- “না, তোমাকে আমি বেহায়া ভাবি নাই। বরং এই বিপদের সময় এত রাত্রিতে অপরিচিত স্থানে তুমি যে সাহস করিয়া ঘর হইতে বাহির হইতে পারিয়াছ, তাহার জন্য তোমার আমি প্রশংসা করি।” বালিকা বলিল,— “বিপদের সময় লোকের ভয় থাকে না। তাছাড়া আমি পল্লীগ্রামের মেয়ে। যখন আমি বালিকা ছিলাম, তখন মাঠে-মাঠে আমরা কত বেড়াইতাম। ঐ যা! আবার একটা কথা বলিয়া ফেলিলাম। দূর ছাই! কত সাবধান হইব?” যাইতে যাইতে এইরূপ কথাবাৰ্ত্ত হইতে লাগিল বটে, কিন্তু সেইসঙ্গে আমরা দুইজনই দ্রুতপদে পথ চলিতেছিলাম। পথ আর ফুরায় না। কিন্তু কতদূর যাইতে হইবে, সে কথা আমি ফোকুলা দিগম্বর SA sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro SR