পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিতেন। যখন কন্যা বিবাহযোগ্য হইল, তখন তিনি আমাকে বার বার পত্র লিখিলেন। আমি পত্রের উত্তর দিলাম না। বিবাহের নিমিত্ত একটি টাকাও প্রেরণ করিলাম না। তিনি গরীব, টাকা কোথায় পাইবেন যে, আমার কন্যার বিবাহ দিবেন। শেষকালটায় তিনি রোগগ্ৰস্ত হইয়া অনেকদিন শয্যাশায়ী হইয়াছিলেন। এইসব কারণে আমার কন্যা বড় হইয়া পড়িয়াছে; আজি পৰ্যন্ত তাহার বিবাহ হয় নাই। তাহার পর আমার সেই আত্মীয়ের পরলোক হয়। তাহার স্ত্রী আমার কন্যাটিকে লইয়া একেবারে নিঃসহায় হইয়া পড়েন। তিনি পুনরায় আমাকে পত্ৰ লিখিলেন। সেই সময় বৰ্ম্মণীর মৃত্যু হইয়াছিল। আমার চক্ষু উন্মুক্ত হইয়াছিল। আমি খরচপত্র পাঠাইয়া দিলাম ও একটি সুপাত্র অনুসন্ধান করিতে আমার সেই আত্মীয়াকে লিখিলাম। কিন্তু ভালরূপ পাত্রের সন্ধান হইল না। এই সময়ে আমি পঞ্জাবে বদলি হলাম। মনে করিয়াছিলাম যে, এ স্থানে আসিবার সময় কলিকাতায় দিনকত থাকিব। সেই স্থানে থাকিয়া, ভাল একটি পাত্রের অনুসন্ধান করিয়া, কন্যার বিবাহ দিয়া তবে পঞ্জাবে আসিব। কিন্তু কলিকাতায় কিছুদিন অবস্থিতি করিবার নিমিত্ত ছুটি পাইলাম না। বরাবর আমাকে পঞ্জাবে আসিতে হইল। প্ৰথম একটি বড় ছাউনিতে আমাদের আফিস হইয়াছিল। সেই স্থানে দিগম্বরবাবুর সহিত আমার আলাপ হয়।” চতুর্থ পরিচ্ছেৰ্গস্ট 3) আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- AA ל" রসময়বাবু উত্তর করিলেন,- রবাবু কে? কেন, ফোকলা দিগম্বর!” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “ফোকলা দিগম্বর কে?” রসময়বাবু কিছু বিস্মিত হইয়া উত্তর করিলেন,- “ফোকুলা দিগম্বর কে? ফোকলা দিগম্বরের নাম শুনেন নাই? তাহার যে অনেক টাকা। এ অঞ্চলে সকলেই যে তাহাকে জানে।” আমি বলিলাম,- “না, আমি কখন ফোকলা দিগম্বর নাম শুনি নাই। তিনি কে?” রসময়বাবু উত্তর করিলেন,- “দিগম্বরবাবু আমার হবু জামাতা। তিনিও কমিসেরি বিভাগে কৰ্ম্ম করেন। কিছুদিন পূৰ্ব্বে এলাহাবাদ কি আগ্ৰা হইতে তিনি পঞ্জাবে আসিয়াছেন। বিলক্ষণ সঙ্গতি করিয়াছেন। আমি যখন পাঞ্জাবে আগমন করি, সেই সময় তাহার পত্নীবিয়োগ হইয়াছিল।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “দিগম্বরবাবু সুপােত্র?” রসময়বাবু উত্তর করিলেন,- “দেখিতে তিনি সুপুরুষ নহেন, বয়সও হইয়াছে। তবে সঙ্গতিপন্ন লোক। কন্যা আমার সুখে থাকিবে।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “আর-পক্ষের তাঁহার পুত্ৰাদি আছে?” রসময়বাবু বলিলেন,- “আছে। পুত্ৰ-কন্যা কেন, শুনিয়াছি, দেশে পৌত্র-দৌহিত্রও আছে। পাছে এ বিবাহে তাহারা আপত্তি করে, সেইজন্য দিগম্বরবাবু দেশে গিয়া বিবাহ করিতে ইচ্ছা! করিলেন না। সেইজন্য আমাকেও এই স্থানে কন্যার বিবাহ দিতে হইল।” ফেঙ্কলী দিগম্বর দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com ~ Sis