পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আভা-সম্বলিত সে বর্ণ এখন নাই। চক্ষু বসিয়া গিয়াছে, চক্ষের কোলে কালি মাড়িয়া দিয়াছে। সঙ্কটাপন্ন পীড়া হইলে লোক যেরূপ হয়, কুসীর আকর এখন সেইরূপ হইয়া গিয়াছে! এ কি সেই কাশীর কুসী? ঠিক সেইরূপ মুখ বটে, কিন্তু কুসীর বিবাহ হইয়া গিয়াছে। পুনরায় তাহার বিবাহ কি করিয়া হইবে? এ কুসী। কি না, এই বিষয়ে আমার মনে বড় সন্দেহ উপস্থিত হইল। একবার মনে হয়, এ আর কেহ নহে, নিশ্চয় কুসী। আবার মনে হয় যে, না, তা নয়, কুসীর সহিত রসময়বাবুর কন্যার সাদৃশ্য আছে, এই মাত্র। সেই সাদৃশ্য দেখিয়া আমি এইরূপ ভ্ৰমে পতিত হইতেছি। আবার মনে হয় যে, কেবল মুখশ্ৰীীর সাদৃশ্য নয়,-তাহার নাম কুসী, ইহার নাম কুসুম; কুসুমের সংক্ষেপে কুসী। তাহার পর, সেই বাম গণ্ডদেশে আঁচিল। এ নিশ্চয় আমার সেই পাতানো কুসী। কিন্তু আবার যখন ভাবি যে, তবে পুনরায় বিবাহ হইতেছে কেন, তখন আবার মনে বড় সন্দেহ হয়। বয়স অধিক হইয়াছিল, সেজন্য রসময়বাবুর কন্যা কাহারও সম্মুখে বাহির হয় না। গোপনে যে তাহার সহিত কোন কথা কহিব, সে উপায় ছিল না। আমি ভিতর বাটীর ভিতর যখন আহার করিতে যাই, কুসী। তখন অবশ্য আমায় দেখিতে পায়। যদি প্রকৃত সে কুসী হয়, তাহা হইলে আমার সহিত দেখা করে না কেন? পুনরায় বিবাহ করিতেছে; সেই লজ্জায় দেখা করে না? যাহা হউক, রসময়বাবু যখন কন্যাকে দেখাইবেন, তখন এ রহস্য ভেদ করিতে চেষ্টা করিব । রসময়বাবু বাটী আসিলে, আমি তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম,- “কৈ আপনার কন্যাকে দেখাইলেন না? (G) রসময়বাবু উত্তর করিলেন– “পথুশ্ৰমে ভূনি শ্ৰান্ত ছিলেন, সেইজন্য দেখাই নাই; তাহার পর, আজ তাহারা নদীতে স্নান করিঙ্গুেসীয়ছিল। সন্ধ্যার সময় দেখাইব ।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “আপুনর্গুকন্যার কি হইয়াছে, ভাল করিয়া বলুন দেখি, শুনি ।” রসময়বাবু উত্তর করিলেন,- “কি হইয়াছে, তাহা আমি নিজেই জানি না। সেদিন কলিকাতায় তাহার সহিত আমার প্রথম সাক্ষাৎ হইল। শুনিয়াছি যে, দুই বৎসর পূৰ্ব্বে তাহার জুর-বিকার হইয়াছিল; তাহার পর, একপ্রকার পাগলের মত হইয়া আছে। শরীর দিন দিন শুষ্ক হইয়া যাইতেছে। কাহারও সহিত সে কথা কয় না। আমার সহিত এ পৰ্যন্ত সে একটিও কথা কয় নাই। তবে সেদিন আমার নিকট আসিয়া বলিল,- “বাবা, আমার বিবাহ দিবেন না; বিবাহের পূৰ্ব্বেই আমি মরিয়া যাইব।” সকলের সাক্ষাতে সে ক্রমাগত এই কথা বলিতেছে! কিন্তু বিবাহ হইলেই বোধ হয়, সব ভাল হইয়া যাইবে। সেই জন্য বিবাহের নিমিত্ত আমি আরও ব্যস্ত হইয়াছি।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “আপনার কন্যার নাম কুসুম?” রসময়বাবু উত্তর করিলেন,- “ হাঁ!” w সেই দিন সন্ধ্যাবেলা রসময়বাবু ও আমি দুইজনে বৈঠকখানায় বসিয়াছিলাম। সেই সময় তিনি কন্যাকে ডাকিয়া আনিলেন। কুসুম অবগুষ্ঠিত হয় নাই সত্য কিন্তু যতদূর পারিয়াছিল, ততদূর শরীরকে বস্ত্র দ্বারা আবৃত করিয়াছিল। অতি ভয়ে ভয়ে মস্তক অবনত করিয়া সে আমার সম্মুখে দাঁড়াইল। সেই কাশীর কুসী বটে, তাহাতে আর কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু সে কুসী। আর নাই, তাহার ছায়া মাত্র রহিয়া গিয়াছে। তাহার শরীর অতিশয় কৃশ হইয়া গিয়াছে। চক্ষু বসিয়া SRAADSR দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarbo.com:5'"