পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সেই বালিকার দিকে চাহিয়া রহিল। সামান্য একখানি পাছ-পেড়ে বিলাতী শাড়ী সেই বালিকা পরিধান করিয়াছিল। কিন্তু তাহার উজ্জ্বল শুভ্ৰ দেহের উপর, স্থানে স্থানে কাপড়ের কালো পাড়টি পড়িয়া, কি এক অপূৰ্ব্ব সৌন্দর্ঘ্যের আবির্ভাব হইয়াছিল। হাতে গাছকত কাঁচের চুড়ী ব্যতীত তাহার শরীরে অন্য কোন অলঙ্কার ছিল না। কিন্তু সেই গোল কোমল শুভ্ৰ হস্তে কৃষ্ণবর্ণের চুড়ী— কেমন অপূৰ্ব্ব শোভার সৃষ্টি করিয়াছিল। নিবিড় চাকচিক্যশালী কেশগুলি,— মস্তকের মধ্যস্থলে কেমন একটি সূক্ষ্ম শুভ্ৰ রেখা দ্বারা দ্বিখণ্ডিত হইয়াছিল! ললাটের উপর সীথির আরম্ভ-স্থলে সিন্দুরবিন্দু ছিল না। নিমেষের মধ্যে তাহাও যুবকের নয়নগোচর হইয়াছিল। মস্তক অবনত করিয়া বালিকা আসিতেছিল, সে নিমিত্ত চক্ষুদ্বয় ভূমির দিকে অবনত ছিল। ঘোর কৃষ্ণবর্ণের সুদীর্ঘ ঘন অবনত সেই চক্ষু-পল্লবশ্রেণী দেখিলেই মানুষের মন মােহিত হইয়া যায়। কিন্তু তাহার অন্তরালে যে তরল অনলগঠিত নীলপঙ্কজ-সদৃশ নয়ন দুটি রহিয়াছে, তাহা দেখিলে মানুষের কি হয়? আর গোপন করিবার আবশ্যক কি? এই বালিকা আমাদের কুসী। তাই বলি, হে ফোগলেন্দ্র! আর জন্মে তুমি কিরূপ তপস্যা করিয়াছিলে?” পঞ্চম পরিঙ্গুেঞ্জ অপরাহে অল্প S. পুষ্করিণীর অপর পার্শ্বে বসিয়া ছিপ তে করিয়া, যুবক অনিমেষ-নিয়নে কুসীর দিকে চাহিয়া রহিল। বাম কক্ষে কলসী দিকে দৃষ্টি রাখিয়া কুসী দ্রুতবেগে সেই সামান্য ঘাট দিয়া জল অভিমুখে নামিতে । ঘাটের সঙ্কীর্ণ পথ পিচ্ছিল ছিল, সহসা পদস্থলিত হইয়া কুসী ভূমির উপর পতিত হইল। পতিত হইয়া সেই নিম্নগামী পথ দিয়া আরও কিছুদূর সে হড়িয়া পড়িল। কক্ষদেশ হইতে কলসীটি পৃথক হইয়া গেল, পরীক্ষণেই তাহা গড়াইয়া জলে গিয়া পড়িল। আশ্বিন মাস। পুষ্করিণী তখন জলপূৰ্ণ ছিল। যে স্থানে কলসীটি ডুবিয়া গেল, সে স্থানে গুটিকত বুদবুদ উঠিল। কুসী তাড়াতাড়ি উঠিয়া বসিল । সেই বুদবুদের দিকে চাহিয়া সে কাদিতে লাগিল । যুবক মনে করিল যে, বালিকাকে অতিশয় আঘাত লাগিয়া থাকিবে, সেই জন্য সে কাঁদিতেছে। সেই মুহূৰ্ত্তে সে উঠিয়া দাঁড়াইল। কোন কথা না বলিয়া, বন ভাঙ্গিয়া অতি দ্রুতবেগে সে উপরে উঠিতে চেষ্টা করিল। বনে ছিপের সূতা জড়াইয়া গেল। ব্যস্ত হইয়া একটান মারিয়া সে সূতা ছিড়িয়া ফেলিল। ক্রোধাভরে ছিপটি ভাঙ্গিয়া দূরে নিক্ষেপ করিল। বন পার হইয়া সে উপরে উঠিল; বন পার হইয়া পুষ্করিণীর পাড় প্ৰদক্ষিণ করিয়া, যথাসাধ্য দ্রুতবেগে সে ঘাটের দিকে দীেড়িতে লাগিল। কাঁটা-খোচায় তাহার পরিধেয় কাপড় ফালাফালা হইয়া ছিড়িয়া গেল, পদদ্বয়ের নানাস্থান হইতে রক্তধারা পড়িতে লাগিল। সে সমুদয়ের প্রতি ভ্ৰক্ষেপ না করিয়া, সে বন-জঙ্গল অতিক্রম করিতে লাগিল। অবশেষে ব্যস্ত হইয়া, সে সেই ঘাটের উপরে আসিয়া দাঁড়াইল। তাহার পর বালিকার নিকট যাইবার নিমিত্ত সেই পিচ্ছিল S89 দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comাির্ড” ”ৰ