পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দৃষ্টি নহে। কি ঘটনা ঘটিয়াছে, কেন সে বিছানায় শুইয়া আছে, মাসী কেন কঁদিতেছেন, কুসী যেন কিছুই জানে না। একদৃষ্টিতে একদিক পানে সে চাহিয়া ভাবিতে লাগিল। কিছুক্ষণ চিন্তা করিয়া, সকল কথা তাহার স্মরণ হইল। যা তাহার স্মরণ হইল, আর-“মাসী! এ কি হইল!”— এই কথা বলিয়া সে পুনরায় মূৰ্ছিত হইল। ক্ষণকালের নিমিত্ত জ্ঞান ও পরীক্ষণেই অজ্ঞান, এইরূপ অবস্থা কুসীর বার বার হইতে লাগিল। তাহার নিকট বসিয়া নীরবে মাসী কাঁদিতে লাগিলেন ও তাহার শুশ্রুষা করিতে লাগিলেন। সন্ধ্যার পূৰ্ব্বে ডাক-হরকরা চিঠি দিয়া গিয়াছিল। ক্রমে সন্ধ্যা হইল, ক্রমে রাত্রি হইল। রাত্রি যখন প্ৰায় দশটা, তখন কুসীর ভালরূপ একবার জ্ঞানের উদয় হইল। কুসী বলিল,— “মাসী! সে চিঠি আর সে কাগজ একবার দেখি” নীরবে বাক্স হইতে চিঠি ও কাগজ আনিয়া তিনি কুসীর হাতে দিলেন। তক্তাপোষের নিকট প্রদীপটি সরাইয়া দিলেন। কুসীর চক্ষুতে জলের লেশমাত্ৰ নাই। ধীরভাবে বিশেষরূপে মনোযোগের সহিত কুসী পত্ৰখানি প্রথম আদ্যোপােন্ত পাঠ করিল। তাহার পর খবরের কাগজের লাল চিহ্নিত স্থানটিও সেইরূপ ধীরভাবে পাঠ করিল। পাঠ করা যেই সমাপ্ত হইল, আর কুসীর হাত কঁাপিতে লাগিল। তাহার হাত হইতে কাগজ দুইখানি পড়িয়া গেল। অবশেষে প্রবল বেগে একটি দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া, কুসী পুনরায় মূৰ্ছিত হইল। সে চিঠি ও সংবাদপত্র আমি দেখিয়াছি। চিঠিখানিতে এইরূপ লেখা ছিল— “প্ৰণামপুরঃসরনিবেদন— (G) “হীরালালবাবু আমার পরম বন্ধু ছিলেন। গত ৪৪শে বৈশাখ রাত্রিকালে পদ্মা নদীতে নীেকাas is ভূমি'যে কি পৰ্য্যন্ত দুঃখিত হইয়াছি, তাহা বলিতে পারি না। বিধাতার লিখন, কে খণ্ডইতৃে পূঞ্জী “আপনার নিকট পাঠাইবার নিমিত্ৰু১৯দশ হইতে হীরালালবাবু আমার নিকট দুইশত টাকা কা প্ৰযুক্ত এতদিন আমি পাঠাইতে পারি নাই। এক্ষণে প্রেরণ করিয়াছিলেন। কাৰ্য্যে ব্যস্ত সেই টাকা আপনার নিকট পাঠাইলাম । “হীরালালবাবুর নব-বিবাহিত পত্নীর জন্য আমি বড়ই কাতর হইয়াছি। তাঁহাকে আপনি বিশেষ সাবধানে রাখিবেন । অধিক আর কি লিখিব। ইতি-লোচন ঘোষ।” লোচন ঘোষ কে, তাহা মাসীও জানিতেন না, কুসীও বোধহয় জানিত না। লোচন ঘোষের নাম পৰ্যন্ত মাসী কখনও শ্রবণ করেন নাই। চিঠিতে তাহার ঠিকানা ছিল না। খবরের কাগজে সংবাদটি এইরূপ প্ৰকাশিত হইয়াছিল;- “পদ্মা নদীতে সম্প্রতি এক বিষম দুর্ঘটনা ঘটিয়াছে। সেদিন হরিহরপুর হইতে একখানি নীেকা গোয়ালন্দ অভিমুখে আসিতেছিল। দাঁড়ি-মাঝি ব্যতীত নীেকাতে অনেকগুলি আরোহী ছিল। সন্ধ্যার পর হঠাৎ ঝড় উঠিয়া, নৌকাখানি জলমগ্ন হইল। দুইজন মাঝি ব্যতীত নীেকার সমস্ত লোক জলমগ্ন হইয়া মারা পড়িয়াছে। আমরা শুনিয়া আরও দুঃখিত হইলাম যে, মজিদপুরের সুপ্ৰসিদ্ধ জমীদার শ্ৰীযুক্ত বাবু বিধুভুষণ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের কনিষ্ঠ পুত্ৰ হীরালালবাবু এই নীেকাতে ছিলেন। হীরালালবাবু বাটীতে রাগ করিয়া কলিকাতা আসিতেছিলেন। সে নিমিত্ত তিনি এরূপ নীেকাতে আরোহণ করিয়াছিলেন। হীরালালবাবু গাত বি-এল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছিলেন। তাঁহার অকাল-মৃত্যুতে আমরা নিতান্ত দুঃখিত ফোকুলা দিগম্বর sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro SSe