পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পর তাঁহার কান্না আসিয়া গেল। তৎক্ষণাৎ সভাস্থলেই তিনি থপি করিয়া বসিয়া পড়িলেন। তাহার পর ঘরের দেওয়ালটি তিনি ঠেস দিলেন, তাহার পর পা দুইটি তিনি ছড়াইয়া দিলেন। অবশেষে তাহার ফাটা কণ্ঠভেরীর গগনস্পশী শব্দে তিনি জগৎ নিনাদিত করিলেন। এ দুঃখের সময়, তাহার জীবিত পুত্র, কন্যা, পৌত্র, দৌহিত্র,- তাহাদিগকে তাঁহার স্মরণ হইল না! ত্রিশ বৎসর পূৰ্ব্বে আঁতুড়ঘরে তাহার একটি তিনদিনের কন্যা মারা পড়িয়াছিল, তাহাকে এখন তাতার স্মরণ হইল। সেই শোক এখন তাহার উথলিয়া পড়িল। তাহাকে স্মরণ করিয়া উচ্চৈঃস্বরে তিনি ক্ৰন্দন করিতে লাগিলেন,- “কোথায় রে! খুকী রে! দেখিয়া যা! এখানে তোর মায়ের দশা কি হইয়াছে! তোর মাকে গলা-ভাঙ্গা বলিয়া আটকুড়ার বেটারা অপমান করিতেছে। কোথায় রে! আমার খুকী কোথায় গেলি রে!” ইত্যাদি। আহা! বড় দুঃখের বিষয় যে,-সে খুকী নাই! সে খুকী থাকিলে, এতক্ষণ কোন কালে আসিয়া রক্ষা করিত! বিবাহ-সভায় হুলস্থূল পড়িয়া গেল। নূতন ধরনের এই অভিনয় দেখিয়া, সভার সভ্যগণ পরম গ্ৰীতি উপভোগ করিতে লাগিলেন। এইরূপে কিছুক্ষণ কাদিয়া গলা-ভাঙ্গার নিদ্রার আবেশ হইল। কান্নার সুর কিছু টিমে হইল, মাঝে মাঝে কথার ফাঁক পড়িতে লাগিল; ক্রমে তাঁহার চুল আসিল। চুল আসায় তাহার মস্তক সম্মুখ দিকে অবনত হইতে লাগিল। একটু অবনত হইল, আরও অবনত হইল, আরও অবনত হইল। ক্রমে পায়ের নিকট মস্তক আসিয়া উপস্থিত হইল। আমি মনে করিলাম, এইবার ইহাকে ধরা উচিত হইতেছে, তা না হইলে মুখ থুবড়িয়া ইহার মাটিতে গিয়া পড়িবে। কিন্তু মাথা যাই মাটিতে পড়-পড় হইল, আর তৎক্ষণাৎ ইনি বসিলেন। সোজা হইয়া মৃদুস্বরে একবার বলিলেন,- “কোথায় আমার খুকী রেংগুই কথা বলিয়া পুনরায় তাহার ঢুল আসিয়া গেল। পুনরায় সেইভাবে তাহার মস্তক আরম্ভ হইল। পুনরায় তিনি মাটিতে পড়-পড় হইলেন। যাই পতিতপ্ৰায় আর সেই মুহূৰ্ত্তে পুনরায় তিনি সোজা হইয়া, “কোথায় আমার খুকী রে!” এই য়া একবার মৃদুস্বরে কীদিলেন। আবার পুনরায় ঢুল আসিয়া গেল, এইরূপ ক্রমাগত লাগিল। প্রতিবার যাই তিনি পড়-পড়া হইতে লাগিলেন, মাটিতে পড়িয়া এ বঁাশী-নাক বা ছেছিয়া যায়। তাঁহাকে ধরিবার নিমিত্ত দুই একবার আমি প্ৰস্তুতও হইয়াছিলাম। ফলকথা , তাহার বার বার এই পড়-পড় ভােব আমার পক্ষে একপ্রকার সাজা হইয়াছিল। রসময়বাবু অবাক! একবার গলা-ভাঙ্গার দিকে, একবার দিগম্বরের দিকে, একবার আমার দিকে, একবার কুসীর দিকে, একবার সন্ন্যাসীর দিকে,- তিনি চাহিয়া দেখিতেছিলেন। কেবল রসময়বাবু কেন? অনেকেই সে রাত্রিতে অবাক হইয়াছিল। উপন্যাসেও এরূপ ঘটনা হয় না। সকলেই বুঝিল যে, এ বিবাহ আর হইবে না! এই সময় বাড়ীর ভিতর হইতে পঞ্জাবী চাকরাণী আসিয়া রসময়বাবুকে ডাকিল। রসময়বাবু তাহার সঙ্গে বাটীর ভিতর গমন করিলেন। একটু পরেই ফিরিয়া আসিয়া তিনি আমাকে ডাকিলেন । আমিও তাঁহার সঙ্গে বাটীর ভিতর গমন করিলাম। রসময়বাবু আমাকে বলিলেন,- “যাদববাবু! কি কেলেঙ্কারি। কি লজ্জা। এ অঞ্চলে আমি আর মুখ দেখাইতে পারিব না। সে যাহা হউক, আবার এক বিপদের কথা শুনুন। আমার শালী কোথায় চলিয়া গিয়াছেন। আমার স্ত্রীর নিকট হইতে কুড়িটি টাকা লইয়া তিনি কোথায় ফোকুলা দিগম্বর sNAls viði (< BS! ro www.amarboi.com ro Sዒኡ