পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বোধ হয়, তোর আয়ী আরাসীর ভিতর রাখিয়াছিল। যাহা হউক, ভাগ্য আজ তুই আরসীখানি ভাঙ্গিয়া ফেলিলি, তাই তো নোটখনি বাহির হইয়া পড়িল! আমি ঘরের ভিতর গিয়া দেখিলাম, আরসী চুরমার হইয়া পড়িয়া রহিয়াছে। তাহা দেখিয়া রাগে আমার সৰ্ব্বশরীর জুলিয়া গেল। তোরে গালি দিতে দিতে কাচগুলি কুড়াইতেছি, এমন সময় দেখি না পাশে একখানি কাগজ পড়িয়া রহিয়াছে। কাগজখানি তুলিয়া দেখিলাম যে, সেই নোট! তখন তোরে যে কত আশীৰ্ব্বাদ করিলাম, তা বলিতে পারি না।” সেদিন বড় আনন্দের দিন বটে। স্বামী আসিয়াছেন, বড় ননদ আসিয়াছেন, নীলাম্বৱী কাপড় হইয়াছে, তাহার পর সেই একঘটি টাকার কাগজ পুনরায় লাভ হইয়াছে। স্বামীর সহিত কথাবাৰ্ত্ত হইলে আব্দুরী বুঝিল যে, সীেরভী বিষয়ে কথাটা সম্পূর্ণ অলীক ও অমূলক। সেদিন আদুরীর মুখে আর হাসি ধরে না! আদুরীর মা পঞ্চাশ টাকা দিয়া মেয়েকে রূপার চন্দ্রহার গড়াইয়া দিলেন। সময়-অসময়ের জন্য বাকি টাকা ঘটি করিয়া ঘরের এক কোণে পুতিয়া রাখিলেন। ၉ာ်`` W ঘনশ্যাম বলিলেন,- “সুবল গড়গড়ি মঞ্জুর্শিয় আমাদিগকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন,- “গল্পটি সমাপ্ত করিয়া মুণ্ডকে আমি বলিলাম;&ভ “তবে, মহাশয়। এখন চলুন!” আমি কোন উত্তর পাইলাম না। কোন উত্তর না পাইয়া মুণ্ডের দিকে আমি চাহিয়া দেখিলাম। আশ্চৰ্য্য! মায়ের বামহস্তে মুণ্ড নাই। মুণ্ডের স্থানে চমৎকার একটি রক্তবর্ণের বৃহৎ মুক্তা রহিয়াছে। মুণ্ড এক্ষণে সেই মুক্তার আকার ধারণ করিয়াছে। কিন্তু এমন মুক্ত কখন দেখি নাই। সমুদ্রের মাঝখানে জালার মত মুক্তা দেখিয়াছিলাম, কিন্তু তাহার এরূপ জ্যোতি ছিল না। মায়ের বামহস্তে এ রক্ত-মুক্তার প্রভায় চারিদিক আলোকিত হইয়াছিল। কিছুক্ষণ আমি স্তম্ভিত হইয়া রহিলাম। এক্ষণে কি করা কীৰ্ত্তব্য, তাহাই ভাবিতে লাগিলাম। চিন্তা করিয়া অবশেষে এই স্থির করিলাম যে, ডাকিনীর নিকট যাইতে একে একে সমস্ত মুণ্ডদিগকে অনুরোধ করিব। একান্ত কাহাকেও যদি না লইয়া যাইতে পারি, সকল মুণ্ডই যদি ইহার মত রক্ত-মুক্তার রূপ ধারণ করে, তাহা হইলে শেষকালে মায়ের এই খগেড় আমি আপনার মুণ্ড কৰ্ত্তন করিয়া মায়ের পাদপদ্মে সমর্পণ করিব। এইরূপ স্থির করিয়া মুণ্ড-মালার নিম্নদেশে যে মুগুটি ছিল, তাহাকে আমি বলিলাম,-“মহাশয় আপনাদিগকে খুলিয়া কি কাটিয়া কি ছিড়িয়া লইয়া যাই, এরূপ শক্তি আমার নাই, তবে অনুগ্রহ করিয়া যদি আমার সহিত স্ব-ইচ্ছায় ডাকিনীর নিকট গমন করেন, তবেই আমার পরিত্রাণ হয়।” মুণ্ড-মালার মুণ্ড বলিল,- “একটি গল্প বল!” V8o দুনিয়ার পাঠক এক হও! ৩ www.amarboi.comন্মিলোকনাথ রচনাসংগ্ৰহ