পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাঠ করিয়া আমি চৌকির উপর রাখিলাম। ঘরে দুইটি বড় বড় বাতি জ্বলিতেছিল। শীতপ্রধান দেশ। অগ্নিস্থানে দাউ দাউ করিয়া অগ্নি জুলিতেছিল। ফলকথা, ঘরটি উজ্জ্বল আলোকে আলোকিত ছিল। সহসা টেবিলের উপর হইতে আমার ঘড়িটি শূন্যপথে চলিয়া যাইতে লাগিল। একহাতে ছোরা, অপর হাতে পিস্তল লইয়া তাড়াতাড়ি আমি ঘড়ি ধরিতে দীেড়িলাম। কিন্তু “সোৎ” করিয়া ঘড়ি যে কোথায় অদৃশ্য হইয়া গেল, আর আমি দেখিতে পাইলাম না। পুনরায় আমি চৌকিতে বসিয়া একখানি পুস্তক খুলিয়া পড়িতে লাগিলাম। ঘরের ভিতর এক্ষণে বিকট শব্দ হইতে লাগিল। কুকুরটি ভয়ানক কাতর রবে ঘর পরিপূরিত করিল। আমি তাহাকে থামাইতে যাইলাম। যে কুকুর আমাকে প্ৰাণাপেক্ষা ভালবাসিত, আজ সেই কুকুর আমাকে কামড়াইতে আসিল! দংশনভয়ে আমি তাহার গায়ে হাত দিতে সাহস করিলাম না। চাকর এই সময় সহসা তাহার ঘর হইতে দীেড়িয়া আসিল । চক্ষু রক্তবর্ণ, যেন কোটির হইতে বাহির হইয়া পড়িতেছে। তাহার। সৰ্ব্বশরীর রোমাঞ্চ হইয়াছে, মাথার চুলগুলি সব খাড়া হইয়া উঠিয়াছে। মুখে নীল মাড়িয়া দিয়াছে। “মহাশয় পলায়ন করুন, মহাশয় পলায়ন করুন! এস্থানে আর তিলাদ্ধকাল থাকিলে মারা পড়িবেন । বাপ রে, ধরিল রে, মা রে!” এইরূপ চীৎকার করিতে করিতে সে আমার ঘর হইতে বাহির হইয়া তড়িতড় করিয়া লাফে লাফে সিঁড়ি দিয়া নামিতে লাগিল। তাহাকে ফিরাইবার নিমিত্ত আমি পশ্চাৎ পশ্চাৎ দীেড়িলাম। কিন্তু ধরিতে না ধরিতে সে সদর দরজা খুলিয়া উৰ্দ্ধশ্বাসে পলায়ন করিল। সেই ভয়াবহ শ্মশানসদৃশ অট্টালিকার ভিতর আমি এখন এক পড়িলাম। এখন প্ৰাণে আমার অতিশয় ত্ৰাস হইল । ভাবিলাম, আমিও পলায়ন করি। কিন্তু বন্ধুবান্ধব সকলে হাসিবে ও বিদ্রুপ করিবুে৫৩ষািঠ থাকে কপালে, এই মনে করিয়া পুনরায় আমি উপরে উঠিলাম, পুনরায় আমি নিজের প্ৰবেশ করিলাম। পুনরায় আমি পড়িতে বসিলাম। আমার হাতে পুস্তক,- ত। পুস্তক ও বাতির মধ্যবৰ্ত্তী স্থানে, আমার কোলে, তালগাছ প্রমাণ কৃষ্ণবর্ণ মানুষের আকৃতি দাঁড়াইল। তাহার মস্তক ছাদে ঠেকিল। সেই মস্তকে চক্ষু দুইটি লাগিল । সৰ্ব্বশরীর আমার শিহরিয়া উঠিল। পিস্তল। লাইবার নিমিত্ত আমি হাত বাড়াইলাম। হাত অসাড় ও অবশ! হাত উঠিল না। আমি দাঁড়াইবার চেষ্টা করিলাম। পা অসাড় ও অবশ। পা উঠিল না। চীৎকার করিতে চেষ্টা করিলাম, মুখ দিয়া কথা বাহির হইল না। জ্ঞান হত হইবার উপক্রম হইল। কিন্তু তখনও একটা চিন্তাশক্তি আমার মনে ছিল। ভাবিলাম, যদি এখন ভয় করি, তাহা হইলে নিশ্চয় আমি প্ৰাণ হরাইব । এইরূপ মনে করিয়া অনেক চেষ্টা করিয়া ধৈৰ্য্য ধরিয়া রহিলাম, বাতি নিবিল না, অগ্নিস্থানে অগ্নি নিৰ্ব্বাণ হইল না, তথাপি ঘর অন্ধকারে আবৃত হইয়া গেল। আমি ভাবিলাম, যেমন করিয়া হউক, ঘরে আলো রাখিতে হইবে। অন্ধকারে থাকিলে মারা পড়িব । পুনরায় উঠিতে চেষ্টা করিলাম। এবার উঠিতে পারিলাম। আস্তে আস্তে গিয়া একটি জানালা খুলিয়া দিলাম। জ্যোৎস্না রাত্রি ছিল। অল্প অল্প চাদের আলো ঘরে প্রবেশ করিল। সেই আলোকে দেখিলাম যে, তালবৃক্ষ প্রমাণ কৃষ্ণবর্ণের বিকট মূৰ্ত্তি তখন সম্পূর্ণভাবে ঘরে নাই, কেবল তাহার ছায়াটি একপার্শ্বে দণ্ডায়মান রহিয়াছে। পুনরায় গিয়া চৌকিতে বসিলাম। পীত, হরিত, লোহিত—নানা বর্ণের গোলাকার আলোক এক্ষণে ঘরের চারিদিকে ঘুরিয়া ও গড়াইয়া বেড়াইতে লাগিল। তাহার পর ভূমিকম্প হইলে যেরূপ হয়, ঘর সেইরূপ দুলিতে লাগিল। যে vos মুক্তা-মালা sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro