পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুশি বলিল,- “পাতকোর ধারে আমরা দুই জনে খেলা করিতেছিলাম। মাঝে মাঝে একবার লব, একবার আমি, আমরা দুই জনে কাঁসি বাজাইতেছিলাম। এমন সময়ে কূপের ভিতর হইতে একটি পায়রা উড়িয়া গেল। কৃপের ভিতর কোন স্থানে পায়রার বাসা আছে, তাহা দেখিবার নিমিত্ত আমি উকি মারিলাম। দৈবক্রমে আমার হাত হইতে কাসিখানি কূপের ভিতর পড়িয়া গেল। কূপের গা অনেক স্থানে ভাঙ্গা ছিল, ইটের খাটাল বাহির হইয়াছিল। কূপে যে জল আছে, তাহা আমি জানিতাম না। এ কূপ হইতে কেহ জল লয় না। সে জন্য মনে করিলাম যে, কূপে জল নাই, কৃপ শুল্ক। ইটের খাটাল দিয়া কূপের ভিতর অনায়াসে নামিতে পারা যায়। কঁাসির জন্য, পাড়েনী, তুমি দুঃখ করিবে, তাই লব কূপের ভিতর নামিতে চাহিল। কিন্তু আমি তাহাকে নামিতে দিলাম না। কাঁসি আনিবার নিমিত্ত আমি নিজেই নামিলাম।” কিছুক্ষণ বিশ্রাম করিয়া কুশি পুনরায় বলিল,— “ভাঙ্গা স্থানের গৰ্ত্তে ও ইটের খাটালে পা দিয়া কূপের ভিতর আমি আস্তে আস্তে নামিতেছিলাম! এমন সময় একবার যেখানে আমি পা রাখিয়াছিলাম, হঠাৎ সেই স্থানের ইট একটু ভাঙ্গিয়া গেল। আমি ঝুপ করিয়া অনেক নীচে গিয়া পড়িলাম; কিন্তু একেবারে জলে গিয়া পড়ি নাই। সে স্থানে ইটের ভিতর হইতে ছোট একটি গাছ বাহির হইয়াছিল। আমি সেই গাছটি ধরিয়া বুলিতে লাগিলাম। তৎক্ষণাৎ কে আসিয়া আমার কোমর জড়াইয়া ধরিল। আমাকে টানিয়া কূপের গায়ে একটি গৰ্ত্তে লইয়া গেল। সে স্থানে নিবিড় অন্ধকার। কে আমাকে ধরিয়া লইয়া গেল, তাহা আমি জানিতে পারিলাম না। যদি কথা কও, কি উত্তর দাও, তাহা হইলে NY শুনিয়া বুঝিতে পারিলাম যে, সে রামদীন। ভুয়ং আমি চুপ করিয়া রহিলাম; উত্তর দিতে পারিলাম না। অনেকক্ষণ গৰ্ত্তের ভিতর নিঃশ্বাের্ডস্ জনে বসিয়া রহিলাম। তাহার পর উপরে তোমাদের আর কোন সাড়াশব্দ ফ্রাঁ তখন রামদীন বলিল,— “তুমি এই স্থানে চুপ৷ করিয়া বসিয়া থাক, আমি দেখিয়া সুফ্রি” এই বলিয়া রামদীন উপরে উঠিল। কিন্তু তৎক্ষণাৎ নামিয়া আসিল। আসিয়া বলিল,- “এখন উপরে কেহ নাই। বড় যে পায়রার কথা পাড়েনীকে বলিয়া দিয়াছিলি? এখন কি হয়? এখন যদি তোকে মারিয়া ফেলি, তাহা হইলে তোর কোন বাপ রাখে? কিন্তু তোকে প্ৰাণে মারিব না। বিলক্ষণ সাজা দিয়া তাহার পর ছাড়িয়া দিব।” রামদীন এখন আমাকে উপরে উঠিতে বলিল । ইটে পা দিয়া ছোট ছোট গাছ ধরিয়া আমি উপরে উঠিতে চেষ্টা করিতে লাগিলাম। কিন্তু আমি একলা কিছুতেই উপরে উঠিতে পারিতাম না। উপর হইতে রামদীন হাত বাড়াইয়া দিতে লাগিল। সেই হাত ধরিয়া ক্ৰমে ক্ৰমে অতি কষ্টে উপরে উঠিলাম। উঠিয়া দেখিলাম, তুমিও নাই, লবও নাই, কেহ কোথাও নাই। তখন তোমরা নবাবগঞ্জে লোক ডাকিতে গিয়াছিলে । হাত ধরিয়া রামদীন আমাকে টানিয়া লইয়া চলিল। বাগানের বাইরে সাহেবদের যে খোলার ঘরে সহিস ও চাকরেরা থাকিত, রামদীন আমাকে সেই স্থানে লইয়া গেল। আমাকে সে দুটি ছোলাভাজ খাইতে দিল। সেই ছোলাভাজা ও একটু জল খাইয়া আমি মাটির উপর শুইয়া পড়িলাম। কিছুক্ষণ পরে রাত্রি হইল। আমি ঘুমাইয়া পড়িলাম। সে রাত্ৰিতে আর কি হইল, তাহা আমি জানি না। আজ দিন হইলে রামদীন তলওয়ার বাহির করিয়া কখন আমাকে কাটিতে যাইতেছিল, কখন আমাকে মারিতে যাইতেছিল। সে বলিল,- “তোরে এক-একবার মারিয়া ফেলিতে মন হয়, কিন্তু আবার মন হয় না। তাহা না হইলে কৃপের ভিতর গলা টিপিয়া তোরে আমি মারিয়া ফেলিতাম। কেমন! V) মুক্তা-মালা sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro (ł6ł