পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বালক সিকিট কুড়াইয়া লইল। ললিত তাহার হাত হইতে কাড়িয়া লইতে চেষ্টা করিল, বালক সিকিটি আপনার মুখের ভিতর পুরিল । ললিত তাহার গলা টিপিয়া ধরিল, বালক সিকিটি গিলিয়া ফেলিল । কাঁদিতে কাঁদিতে ললিত মাতার নিকট আসিয়া সকল কথা বলিল। শেষ সম্বল যাহা ছিল, তাহা গেল। মাতা ভাবিলেন,- “আর উপায় নাই। দেবীর আসিবেন না। ভগবান আর আমাদের প্রতি মুখ তুলিয়া চাহিবেন না। এখন আমি শিশু দুইটিকে লইয়া করি কি? যাই কোথা?” ক্ষুধার জ্বালায় লাবণ্য অতিশয় কাঁদিতে লাগিল। সন্ধ্যা হইয়া গেল। মাতা, শিশু দুইটিকে লইয়া পুনরায় খিদিরপুর অভিমুখে চলিলেন। আর চলিতে পারেন না। গড়ের মাঠের সেই পুষ্করিণীর ধারে পুনরায় গিয়া বসিলেন। দুঃখের আর কুল-কিনারা নাই, অকুল পাথর। ভাবিতে লাগিলেন, — “হায় হায়! আমি কি করি, আমি কোথায় যাই!” পুষ্করিণীর ধারে বসিয়া কাদিয়া কাদিয়া মাতা একেবারে পাগলিনী হইয়া পড়িলেন। সেই উন্মত্ত অবস্থায় সহসা তিনি বাম হন্তে লাবণ্য ও দক্ষিণ হস্তে ললিতকে ধরিয়া পুষ্করিণীতে বীপ দিলেন। “ঝপ” করিয়া একটি শব্দ হইল, জলে অল্প তরঙ্গ উঠিল, তাহার পর সেই গভীর জল পুনরায় পূৰ্ব্বরূপ স্থির প্রশান্ত আকার ধারণ করিল। যাইতেছিল। গাড়ীর ভিতর একটি বাবু বসিয়াছিলেন। “প্লাড়োয়ান শীঘ্য চল, তোমাকে বিকশিস দিব”, এই কথা বাবু বার বার বলিতেছিলেন। যে, একটি পুষ্করিণীর ধারে অনেকগুলি লোক একত্র দিয়া যাইবার সময় বাবু দেখিলেন হইয়াছে। কি হইয়াছে তাহা দেখিবার রলেন। গিয়া দেখিলেন যে, জল হইতে কটি সাত-আট বৎসরের বালক ও একটি পাচিছয় বৎসরের বালিকার মৃতদেহ উৎ লিয়াছে। মৃতদেহ বটে, কিন্তু তিনটির রূপে পুষ্করিণীর পাড় আলো করিয়াছিল। যে দে ছল, সেই হায় হায় করিতেছিল। অজ্ঞান পাগলের ন্যায় হইয়া বাবু গিয়া সেই মৃতদেহের উপর পড়লেন। “ললিতা লাবণ্য! একবার উঠ । একটা কথা কও! আমি তোমাদের কাকা আসিয়াছি। আর তোমাদের ভাবনা নাই, আমি তোমাদের জন্য টাকা আনিয়াছি। উঠ বাবা! উঠ মা! একটা কথা কও।” ললিত, লাবণ্য ও তাঁহাদের মাতা আর উঠিলেন না, আর কথা কহিলেন না। - Zdzeiljoefeipzigszij7 Vy uskla »ižo 33 m vamarboi.comio ংগ্ৰহ