পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুছিতেছিলেন। বালিকা পিতার নিকট অগ্রসর হইয়া বলিল,— “বাবা! পথে বড় অন্ধকার; বৃষ্টি পড়িতেছে। একস্থানে আমি পড়িয়া গিয়াছিলাম। ইনি আমাকে ধরিয়া তুলিয়াছিলেন। ইনি ডাক্তার। সেজন্য, তোমার ডাক্তারখানা পৰ্যন্ত আর যাই নাই। ইহাকে আনিয়াছি।” ইহারা ব্ৰাহ্মণ, তাহা দেখিয়া গিরিশের মনে প্রথম কতকটা আনন্দ-সঞ্চার হইয়াছিল। তাহার পর, কন্যার এখনও বিবাহ হয় নাই, এই কথা শুনিয়া গিরিশের মন আরও প্ৰফুল্প হইল। গিরিশ মনে মনে ভাবিলেন যে, আজ রাত্রির এই ঘটনাতে বিধাতার কোনরূপ ফন্দি আছে। তা না হইলে, পথে প্রথম এই অপরিচিতা বালিকার কণ্ঠস্বর শুনিয়া আমার হৃদয়-তন্ত্রী বাজিয়া উঠিবে কেন? তাহার পর, আলোকে ইহার মুখশ্ৰী দেখিয়া আমার মন এত চঞ্চল হইবে কেন? বালিকা যেন কতদিনের পরিচিতা, এ যেন আমার, এইরূপ ভাব আমার মনে উদয় হইবে কেন? দেখা যাউক,-বিধাতা কিরূপ ভাবিতব্যের অনুষ্ঠান করিয়াছেন। গিরিশ মনে মনে এইরূপ ভাবিতেছেন, এমন সময় ব্ৰাহ্মণী পুনরায় বলিলেন,- “কেন বাবা! চুপ করিয়া রহিলে যে? তবে কি কোন বিপদের সম্ভাবনা আছে? তবে কি ইনি এ যাত্ৰা রক্ষা পাইবেন না?” গিরিশ চমকিত হইয়া তাড়াতাড়ি উত্তর করিলেন,- “না মা! কোন বিপদের সম্ভাবনা নাই। আপনি যখন আমাকে ছেলে বলিলেন, তখন আমিও আপনাকে মা বলিয়া ডাকি। কোন বিপদের সম্ভাবনা নাই। কিন্তু একটু ঔষধ সেবন করিতে হইবে। আমি ঔষধ লিখিয়া দিতেছি, সেই ঔষধ সেবন করিলে রাত্রিতে ভালরূপ নিদ্রা হইবে, আর কাল ইনি ভাল হইয়া যাইবেন। ইহাকে প্রকৃত রক্তবমন বলে না। ইহাতে কোন ভয় ব্ৰাহ্মণী বলিলেন,- “এত রাত্রিতে ঔষধ আৰ্হি চুপ করিলেন। 3) ব্ৰাহ্মণ বলিলেন, “তাহার পর ঔষ্ণু কোথা হইতে আসিবো? আমি যে ডাক্তারখানায় কাজ করি, সে ডাক্তারখানা হইতে ঔষুধ, পারিলে দাম লাগে না। কিন্তু এত রাত্ৰিতে সে স্থানে যায় কে? তখন প্ৰাণের দায়ে মেয়েকে পাঠাইয়াছিলাম। এত রাত্রিতে পুনরায় আর কন্যাকে পাঠাইতে পারি না।” গিরিশ উত্তর করিলেন,- “সেজন্য কোন ভাবনা নাই। কোন ডাক্তারখানা আমাকে বলিয়া দিন, আমি এইক্ষণে গিয়া ঔষধ আনিয়া দিতেছি।” ব্ৰাহ্মণ বলিলেন, — “গোপীমোহন রায়ের ডাক্তারখানা। তোমাদের মুহুরি মাধব চক্ৰবৰ্ত্তীর পীড়া হইয়াছে, এই কথা বলিয়া ঔষধ চাহিলেই, তাহারা তৎক্ষণাৎ দিবে।” গিরিশ একটু কাগজ লইয়া যথাপ্রয়োজন ঔষধ লিখিলেন। তাহার পর নিজেই ঔষধ আনিতে যাইলেন । গোপীমোহন রায়ের ডাক্তারখানা কিছু দূর। যথাসময়ে গিরিশ সেই বাটীতে গিয়া উপস্থিত হইলেন। বাটীতে প্ৰবেশ করিয়া গিরিশ দেখিলেন যে, বাম দিকে একটি বড় ঘর; দক্ষিণ দিকেও সেইরূপ একটি বড় ঘর। সম্মুখে প্রাঙ্গণ, প্রাঙ্গণের পরে পূজার দালান। পূজার দালানের পশ্চাতে অন্তঃপুর । সদর দরজায় গ্যাস জুলিতেছিল। বাম দিকের বড় ঘরখানিতে ডাক্তারখানা,-নােনারূপ ঔষধের বোতলে ও নানারূপ যন্ত্রে সুসজ্জিত। বাম দিকের সেই বড় ঘরের পার্শ্বে একটি ছোট ঘর। সেই ঘরে কম্পাউণ্ডার ঔষধ প্ৰস্তুত করে। দক্ষিণ দিকের বড় ঘরখানিতে ঔষধাদি কোনরূপ দ্রব্য ছিল না। ঘরের মধ্যস্থলে একটি টেবিল ছিল, তাহার W0ʻRV দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com%ি"**”**