পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গেল। মস্তক অবনত করিয়া খাটের নীচ হইতে তিনি সেই বস্তুটি বাহির করিলেন। দেখিলেন। যে, একটি শিশি, যে শিশিতে কল্য তিনি বারো দাগ ঔষধ দিয়াছিলেন। আজ দেখিলেন যে, শিশিটি সম্পূর্ণ খালি! গিরিশ চক্ষু মুদিত করিয়াছিলেন। ডাক্তার চক্ষু চাহিতে বলিলেন। গিরিশ চক্ষু চাহিলেন না। চক্ষুর পাতা টানিয়া ডাক্তার দেখিলেন যে, চক্ষু দুইটি ঘোর রক্তবর্ণ হইয়াছে, তারা দুইটি সঙ্কুচিত হইয়াছে। সরল, লীলা, মাধব চক্ৰবৰ্ত্তাঁ ও তাঁহার স্ত্রীকে ডাক্তার সে ঘর হইতে যাইতে বলিলেন। তাহার পর একাকী পাইয়া, খালি শিশিটি দেখাইয়া, তিনি গিরিশকে বলিলেন,- “গিরিশ, ছি ভাই ! এমন কাজও করিতে হয়?” গিরিশ অতি মৃদুস্বরে উত্তর করিলেন,—“কি করি ভাই! না করিলে নয়। দুই দিন আগে কি দুই দিন পরে—এই বই তো নয়! আর গোটা কতদিন অধিক বঁচিয়া স্ত্রী ও কন্যাকে পথের ভিখারিণী করিতে পারি না। করুণাময় জগদীশ্বর আমার প্রতি কৃপা করিবেন, তিনি আমার বিচার করিবেন। কাহাকেও একথা বলিও না, ভাই!” ডাক্তার বলিলেন, — “কাহাকেও বলি না বলি আমি চুপ করিয়া থাকিতে পারি না। যথারীতি তোমার চিকিৎসা আমি করিব। এখনি তোমাকে বমন করাইব, তাহার পর তাড়িতযন্ত্র প্রয়োগ করিব।” গিরিশ বলিলেন,- “আর কেন ভাই! এ মৃত্যু সময়ে কেন আর আমাকে যন্ত্রণা দাও?” ডাক্তার বলিলেন,- “না ভাই! আমি কিছুতেই চুপ্ত করিয়া থাকিতে পারিব না। সে অনুরোধ করিও না, সে অনুরোধ আমি কিছুতেই রক্ষা করিতে পারিব না।” গিরিশ বলিলেন,— “তবে যা জান তাই কুর্তৃপ আমার নিকট সত্য কর যে, একথা জনপ্ৰথীংক 曲 কিছুই নাই। যে ফণ্ডে টাকা দিয়াছি, তেঁই একথা কাহাকেও বলিও না । ঔর্মর বালককালের বন্ধু, মরণকালে তােমার নিকট এই ভিক্ষা চাই ।” ডাক্তারের চক্ষু দিয়া জল পড়িতে লাগিল। গিরিশের নিকট তিনি সেইরূপ সত্যে আবদ্ধ হইলেন। তাহার পর সরলার মাতাকে একটু জল গরম করিতে বলিয়া তিনি ঔষধ ও যন্ত্রাদি আনিতে সত্বর গমন করিলেন। সরলা ও লীলা পূৰ্ব্ববৎ গিরিশের নিকট আসিয়া বসিল। শ্বশুর-শাশুড়ীকে সে ঘরে আসিতে হাত নাড়িয়া গিরিশ নিষেধ করিলেন। সরলা ও লীলার হাত ধরিয়া গিরিশ পূৰ্ব্ববৎ শুইয়া রহিলেন ।

              • " ,"দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comঠি واجه