পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভুলিবে না। লীলা এখন আমার এ সকল কথা বুঝিতে পারিবে না। লীলা বড় হইলে, সরলা তুমি তাহাকে আমার এই শেষ কথাগুলি বুঝাইয়া দিবে। সকল লোক এ পবিত্র স্থানে যাইতে পারে না। এই পৃথিবীতে আসিয়া যাহারা সত্য-পথ হইতে বিচলিত হয় না, যাহারা কাহারও অনিষ্ট করে না; যাহারা হিংসা, দ্বেষ ও ঘূণার চক্ষে কাহাকেও দর্শন করে না; যাহারা সেই সচ্চিদানন্দ পরমপুরুষকে কখন বিস্মৃত হয় না; যাহারা সৰ্ব্বদা তাঁহাকে হৃদয়-সিংহাসনে অধিষ্ঠিত রাখিয়া জগতের হিতসাধনে জীবন অতিবাহিত করে,- কেবল তাহারাই ঐ সুখের স্থানে গমন করিতে পারে, কেবল তাহারাই প্রিয়জনকে লইয়া ঐ স্থানে অনন্তকাল থাকিতে পায়। সেই সচ্চিদানন্দ পুরুষকে বিস্মৃত হইয়া যাহারা অন্যরূপে জীবন অতিবাহিত করে, তাহাদের পরলোক অন্যরূপ। সেই স্থানে অশেষ যন্ত্রণা ভোগ করিয়া অবশেষে তাহারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। দেখিও সরলা! দেখিও লীলা! তোমরা যেন ঐ সুখের স্থান হইতে বঞ্চিত হইও না। দেখিও, যেন পুনরায় তোমাদের সহিত আমার হয়। আজ আমার পিতা-মাতা যেমন আমাকে আদর করিয়া ঐ পবিত্র জ্যোতির্মুস্থোনে লইয়া যাইতেছেন, যেন যথাকালে তোমাদিগকেও আমি সেইরূপ আদর করিয়া লইয়ণী যাইতে পারি। তবে সরলা! তবে লীলা! এখন বিদায় হই ।” Kè) গিরিশ নীরব হইলেন। একান্ত মনে তিঁনি ভগবানের ধ্যানে নিমগ্ন হইলেন। সরলা এখন বুঝিতে পারিল যোগরিশের অধিক বিলম্ব নাই। নিঃশব্দে সরলা কাঁদিতে লাগিল। চক্ষের জলে তাহার বুক ভাসিয়া যাইতে লাগিল। পিতার অবস্থা ও মাতার কান্না দেখিয়া লীলা বিস্মিত মনে, মলিন বদনে, সজল নয়নে, একবার মায়ের মুখপানে, একবার বাপের মুখপানে চাহিয়া দেখিতে লাগিল। গিরিশের নিশ্বাস-প্ৰশ্বাস ক্রমেই হ্রাস হইতেছিল। কাঁদিতে কাঁদিতে সরলা তাঁহাকে বাতাস করিতেছিল। একবার সে পাখা বন্ধ করিল। চকিত হইয়া সে দেখিল যে, গিরিশের গায়ে যে চাদরখানি ছিল, বক্ষঃস্থলে এতক্ষণ যাহা উঠিতেছিল ও নামিতেছিল, তাহা আর নড়িতেছে না, চাদরখানি স্থির হইয়া গিয়াছে। শশব্যস্ত হইয়া সরলা গিরিশের নাকে হাত দিয়া দেখিল। সেই মুহূৰ্ত্তে সরলা মূৰ্ছিত হইয়া খাটের উপর হইতে ভূমিতে পতিত হইল। লীলা উচ্চৈঃস্বরে কাঁদিয়া উঠিল। সরলার পিতা-মাতা সেই ঘরে দৌড়িয়া আসিলেন। সেই মুহুর্তে ডাক্তারও পুনরায় আসিয়া উপস্থিত হইলেন। ডাক্তার দেখিলেন যে, গিরিশ চিরদিনের নিমিত্ত ইহসংসার পরিত্যাগ করিয়াছেন। sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro