পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হারাধনের মুখ দেখিতে পাইল। চমকিত হইয়া পশ্চাৎদিকে ও আশে-পাশে চাহিয়া দেখিল। কেহ কোথাও নাই। বিস্মিতা হইয়া পুনরায় আবৃলীির দিকে সে চাহিয়া দেখিলা; তাহার ভিতর পুনরায় হারাধনের মুখ দেখিতে পাইল। পূৰ্ব্বে যেরূপ স্বপ্নে দেখিয়াছিল, ষ্টেশনে শরীরী অবস্থায় তাহাকে যেরূপ দেখিয়াছিল, এখন সেরূপ নয়। তাঁহার শরীর কৃশ হইয়া গিয়াছে, মুখ মলিন হইয়া গিয়াছে, ভয়ে ও চিন্তায় তাহার মুখখানি যেন আচ্ছন্ন হইয়া পড়িয়াছে। বিমলা আবার চারিদিকে চাহিয়া দেখিল, কিন্তু সে ঘরে অন্য কাহাকেও দেখিতে পাইল না। পুনরায় সে আবৃদীির দিকে চাহিয়া দেখিল। এবার দেখিল যে ঘোর সর্বনাশ ঘটিয়াছে। হারাধনের দেহ তাহাদিগকে বুঝাইতেছেন। ভয়ে বিহ্বল হইয়া বিমলা আবৃগী হইতে মুখ ফিরাইয়া লইল । কিন্তু অধিকক্ষণ থাকিতে পারিল না, পুনরায় তাহার দৃষ্টি আবৃগীর উপর আপনা। আপনি পড়িল। এবার আরও ভীষণ দৃশ্য তাহার নয়নগোচর হইল। এবার সে দেখিল যে, ঘোর অন্ধকার রজনী, নিকটে গঙ্গা কুল-কুল শব্দে প্রবাহিতা হইতেছেন, চারিদিকে ছিন্ন বস্ত্ৰ, শূন্য কলস, কৃষ্ণবর্ণের কয়লা, শুভ্ৰবর্ণের নরমুণ্ড পড়িয়া রহিয়াছে। ভীষণ শ্মশানভূমি। হারাধনের দেহ শুভ্ৰবর্ণের বস্ত্র দ্বারা আবৃত হইয়া পড়িয়া আছে। চিতা সজ্জিত হইতেছে। ভয়ে বিমলা চক্ষু মুদ্রিত করিল, মন তাহার কাতর হইল, বুক টিপা-টিপ করিতে লাগিল। চক্ষু দিয়া ফোঁটায় ফোঁটায় জল পড়িতে লাগিল। “হে সন্ন্যাসী! হে বাবা! অবশেষে তুমি এ কি করিলে?” এই বলিয়া চক্ষু বুজিয়া বিমলা কাঁদিতে লাগিল। কিন্তু চক্ষু বুজিয়া অধিকক্ষণ সে থাকিতে পারিল না। কাঁদিতে কাঁদিতে পুনৰ্ব্বার আরসীর দিকে । অশ্রুজলে নয়ন দুইটি ভাসিয়া যাইতেছিল। প্রথম সে কিছুই দেখিতে পাইল গ্ৰন্থ চক্ষু মুছিয়া পুনরায় সে আবৃদীির দিকে দৃষ্টিপাত করিল। এবার তাহার ভিতুৰ্ব্ব বহু মুণ্ডধারী, বহু হস্তসম্পন্ন, ছাগপদবিশিষ্ট, দানবাকৃতি এক মূৰ্ত্তি সে দর্শন করিল। অষ্টম পরিচ্ছেদ পুনর্জীবন বাহিরে যে বস্তু থাকে, আবৃনীতে তাহার প্রতিবিম্ব পড়ে। সম্মুখে বসিয়া বিমলা চুল বঁাধিতেছিল, আবৃগীতে তাঁহারই ছায়া পড়বার কথা। তা না হইয়া আবৃগীর ভিতর নূতন নূতন দৃশ্য আপনা আপনি আবির্ভূত হইতে লাগিল। প্রথম হারাধন, তাহার পর শ্মশান, তাহার পর আংটিাবীর; বিমলা যতবার আবৃলীির দিকে দৃষ্টিপাত করিল, ততবার নূতন নূতন বিষয় সে দেখিতে পাইল । বিমলা আৱাসীর ভিতর আংটি বীরকে দেখিল। আংটিাবীর হাত তুলিয়া তাহাকে যেন বলিল,— “যাও, যাও! শীঘ্ৰ যাও।” এইরূপ আদেশ প্ৰাপ্ত হইয়া বিমলার আর কিছুমাত্র জ্ঞান-চৈতন্য রহিল না। এখন হইতে সে আর আত্মবশে রহিল না। এখন হইতে সে কি করিল, সে কথা কিছুই সে জানে না। পরে অনেকে তাহাকে জিজ্ঞাসা করিয়া দেখিয়াছিল। সে বলে যে,- “আবৃনীর ভিতর আমি

  • 3-i-vitii 8のR

sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro