পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হইলেন । বাঙ্গালী আহারাদির আয়োজন করিয়া দিলেন। সন্ধ্যার পর সকলে আহারাদি করিয়া নিশ্চিত হইলে, বাঙ্গালী গৌরীশঙ্করকে এক স্বতন্ত্র ঘরে একাকী শয়ন করিতে দিলেন। তাঁহার মাতাকে অন্য এক ঘরে বিশ্রাম করিতে বলিলেন । গৌরীশঙ্কর শয়ন করিলে সেই ঘরে বাঙ্গালী গিয়া নানারূপ ক্রিয়া করিলেন। কি কি কাজ করিলেন, তাহার বিবরণ প্ৰদান করিবার আবশ্যক নাই। বাঙ্গালী নানারূপ ক্রিয়া করিয়া, ঘরের বাহিরে আসিয়া বসিলেন। দ্বারের নিকট বসিয়া বাতির আলোকে একখানি পুস্তক পাঠ করিতে লাগিলেন। ঘরের ভিতর গৌরীশঙ্কর নিদ্রা যাইতে লাগিলেন। রাত্রির প্রথম ভাগে কোনওরূপ ঘটনা হইল না। তিনটার সময় যথারীতি গুপৃ-গাপূ শব্দ আরম্ভ হইল। সেই শব্দ শুনিয়া বাঙ্গালী আলোক লইয়া ঘরের ভিতর প্রবেশ করিলেন । দেখিলেন যে, গৌরীশঙ্করের পিঠের উপর সেই শব্দ হইতেছে, তিনি গো-গো করিতেছেন, মুখ দিয়া তাহার ফেনা বাহির হইতেছে, মাঝে মাঝে তিনি চিৎ হইতে চেষ্টা করিতেছেন। কিন্তু যতবার তিনি চিৎ হইতে চেষ্টা করিতেছেন, ততবার কে যেন তাঁহাকে বলপূৰ্ব্বক উপুড় করিয়া ফেলিতেছে। উপুড় করিয়া কে যেন তাহার পিঠে কিল মারিতেছে। আলোটি ঘরের মাঝখানে রাখিয়া, বাঙ্গালী গৌরীশঙ্করের শিয়ারদেশে গিয়া উপবেশন করিলেন। সে স্থানে বসিয়া তিনি তাহার মাথায় জপ করিতে লাগিলেন । জপ আরম্ভ করিবামাত্র কিলের শব্দ থামিয়া গেল। গৌরীশঙ্কর সুস্থির হইলেন। কিন্তু তাঁহার নিশ্বাস ঘন ঘন বহিতে লাগিল। কিছুক্ষণ পরে গৌরীশঙ্কর একটি দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া — “থি-বী যু-দে।” বাঙ্গালী বলিলেন,- “পরিষ্কার করিয়া সকল কি গৌরীশঙ্কর কোন উত্তর করিলেন না। কোন কথা জিজ্ঞাসা না করিয়া, ক্রমাগত জপ করিতে লাগিলেন। প্ৰায় আধঘণ্টা এ কাটিয়া গেল। জপ ব্যতীত তিনি আরও নানারূপ ক্রিয়া করিলেন । অবশেষে র। আর একটি দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন,- “থি-বী, যু-দে।” NAS বাঙ্গালী বলিলেন,- “ভাল করিয়া বল!” গৌরীশঙ্কর বলিলেন,- “থিয়েটারী বীর যুদ্ধং দেহি ।” বাঙ্গালী বলিলেন, — “হে থিয়েটারী বীর! আজি হইতে আর তুমি ইহাকে বিরক্ত করিতে পরিবে না। কেমন আমার আজ্ঞা তুমি পালন করিবে তো?” গৌরীশঙ্কর এইবার প্রকৃতপক্ষে বক্তার হইলেন। আজ তিন বৎসর ধরিয়া “থি-বী, যু-দে” ভিন্ন অন্য কথা মুখে আনেন নাই, আজ তিনি নানারূপ কথা বলিতে লাগিলেন। কিন্তু এখন তিনি যে সমুদয় কথা বলিতে লাগিলেন, তাহা তাহার নিজের নহে। যে ভূত তাহাকে আশ্রয় করিয়াছিল, এ সমুদয় তাহার কথা । গৌরীশঙ্করের মুখ দিয়া সেই ভূত বলিল,— “মহাশয়! আপনি আমাকে যেরূপ আজ্ঞা করিবেন, আমি সেইরূপ করিব। এ ব্যক্তি অতি অন্যায় কাজ করিয়াছে। ধনলোভে বিনা শিক্ষায় এ অসীম সাহসিক কাৰ্য্যে প্ৰবৃত্ত হইয়াছিল। “দেখি, মন্ত্র সফল হয় কি না? দেখি, আরাধনা করিলে ঈশ্বর সত্য সত্য মনুষ্যের প্রতি কৃপা করেন কি না, – এইরূপ মনে করিয়া মন্ত্র ও মহাশক্তির পরীক্ষা করিতে এই ব্যক্তি গিয়াছিল। সেরূপ কাৰ্য্যের পরিণাম এইরূপ হয়।” বাঙ্গালী বলিলেন, – “যাই হউক, ইহার যথেষ্ট দণ্ড হইয়াছে। আর কেন? ইহাকে এক্ষণে নিকৃতি প্ৰদান কর।” 8voS fitRig oriż3. g3 ze! A www.amarboi.com%37*"***"*****