পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সম্বন্ধ স্থির হইয়াছে। এ যাত্রা সে রক্ষা পাইলেও, কাস রোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে কন্যা-সম্প্রদান শাস্ত্ৰ-নিষিদ্ধ।” পাল মহাশয় উত্তর করিলেন,- “আমি তাহা জানি। কিন্তু কি করিব! আমার কন্যা যখন ছয় মাসের, তখন হইতে নিয়োগীর সহিত আমার কথা হইয়াছে। তাহার এই ঘোর বিপদের সময় কোন কথা আমি বলিতে পারি না। নিয়োগীর সহিত বিবাদ করিতেও আমি ইচ্ছা করি না। নিয়োগী-পুত্রের শরীর দিন দিন যেরূপ শীর্ণ হইয়া পড়িতেছে, তাহাতে অল্পদিনের মধ্যেই বোধ হয়, আমি আমার প্রতিজ্ঞা হইতে মুক্ত হইব। তবে সে কথা এখন আর বৃথা তুলিয়া প্রয়োজন কি?” ভট্টাচাৰ্য মহাশয় জিজ্ঞাসা করিলেন, — “অন্য কোন স্থানে পাত্ৰ স্থির করিয়াছেন?” পাল মহাশয় উত্তর করিলেন,- “না, এখনও কোন স্থানে স্থির করিতে পারি নাই; তবে গোপনে অনুসন্ধান করিতেছি।” ভট্টাচাৰ্য মহাশয় বলিলেন, — “আপনার ঘরের নিকট মদনমোহন বলিয়া ঐ যে ছোকরা থাকে, তাহার সহিত দিলে হয় না? ছোকরা শান্ত, সচ্চরিত্র, লেখাপড়া জানে, দু’-পয়সা উপাৰ্জনও করিতেছে।” পাল মহাশয় উত্তর করিলেন,- “কিছুতেই নয়! সে আমাদের স্বজাতি শুনিয়া, আমিও প্রথম সেইরূপ ইচ্ছা করিয়াছিলাম। কিন্তু গোপনে তাহার সমুদয় সন্ধান লইয়া এখন সে ইচ্ছা আমাকে পরিত্যাগ করিতে হইয়াছে। আমরা লেখাপড়াজানা চাকরে ভদ্র সদৃগোপ। মদনের বাপ স্বহস্তে লাঙ্গল ধরিয়া চাষ করিত। অতিকষ্টে সে ছেলেটিকে লেখাপড়া শিক্ষা দিয়াছে। চাষ করা যে নিতান্ত গৰ্হিত কাজ, লেখাপড়া শিখিয়া মদন । সেজন্য ব্যাপকে এখন সে একখানি মুদিখানার দােকান করিয়া দিয়াছে। কিন্তু সঁহাঁ হইলে কি হয়। পূৰ্ব্বের কলঙ্ক ঘুচিবার নহে। আমি চাকরে সদৃগোপ হইয়া, চাষী র সহিত কন্যার বিবাহ কি করিয়া দিব?” ভট্টাচাৰ্য মহাশয় জিজ্ঞাসা করিলেন, তেঁস্বহস্তে চাষ করা কি নিতান্ত অন্যায় কাজ?” উপনি নিজেই কেন বুঝিয়া দেখুন না? চাষ করিলে মানুষ 9. য়। তাহার যত টাকা থাকুক না কেন, আপনার নিকট একজন চাষা আসিলে নাক সিটুকাইয়া। আপনি তাহার সহিত কথা কহিবেন না। কিন্তু সেই জাতীয় কোন লোক যদি চাকরে হয়, তাহা হইলে, “আসুন, আসুন, বাবু আসুন’ বলিয়া আপনি তাহাকে মাথায় তুলিয়া লইবেন। কেবল আপনি নহেন, দেশের সকল লোকেই এইরূপ করিয়া থাকে। আমাদের গ্রামে দুই জন চাঁড়াল আছে- একজনের নাম মাধব, আর একজনের নাম পঞ্চ। দুই জনে একসঙ্গে পাঠশালায় লিখিয়াছিল। আলু, আম ও পাটের চাষ করিয়া মাধব বিলক্ষণ দু-পয়সা সঙ্গতি করিয়াছে। কিন্তু সে নিজের হাতে কোদালি কুঠারি ধরিয়া পরিশ্রম করে। সেজন্য সকলে তাঁহাকে মাধব না বলিয়া মেদে। চাঁড়াল বলে। পঞ্চ একটু ইংরেজী শিখিয়া পনের টাকা বেতনে রেলে টিকিট কাটা কাজ পাইয়াছে; সেজন্য সকলে তাঁহাকে পঞ্চবাবু বলে। চাকরি না করিয়া সে যদি চাষের কাজ করিত, তাহা হইলে কেহ তাহাকে পঞ্চবাবু বলিত না, সকলেই তাঁহাকে পেচো চাঁড়াল বলিত। এইজন্য হাড়ি বাগদী সকলেই আপন পুত্ৰদিগকে ইংরেজী শিক্ষা দিয়া, চাকরে করিতে চেষ্টা করিতেছে। কাহার না ইচ্ছা যে, তাহার ছেলে জেন্টলম্যান उरुगा?" ভট্টাচাৰ্য মহাশয় বলিলেন,- “সত্য বটে। ব্ৰাহ্মণদিগের মধ্যে যাহারা চিরকাল পুরুষপুরুষানুক্ৰমে অধ্যাপক পণ্ডিতের ব্যবসায় অবলম্বন করিয়া আসিতেছিলেন, তাহারাও এক্ষণে মুক্তা-মালা 88ჯა sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro