পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যিনি এক্ষণে গোড়া হিন্দু হইয়াছেন, ও যিনি এক্ষণে মুরগী ভক্ষণ করেন না। দেখিলাম। সেই দুই দিক একেবারে ভগ্ন, সে দুই দিক দিয়া পলায়ন করিবার কোন উপায় নাই। তাহার পর, আমি ছাদে উঠিবার সিঁড়ির কথা জিজ্ঞাসা করিলাম। সিঁড়িও একেবারে ভগ্ন: ছাদে উঠিবার উপায় নাই। পলায়ন করিবার কোন উপায় আমি দেখিতে পাইলাম না। মিহির এতক্ষণ মাতার নিকট বসিয়াছিল। খাইবার নিমিত্ত মাতা তাহাকে কিছুমিষ্টান্ন দিয়াছিলেন। মিহির খাইতে অস্বীকার করিতেছিল। কাঁদিতে কঁদিতে, আঁচলে চক্ষু মুছিতে মুছিতে, খাইবার নিমিত্ত মাতা তাঁহাকে জেদ করিতেছিলেন। মাতার অনুরোধে মিহির সন্দেশ ভাঙ্গিয়া, একটু মুখে দিয়া জল পান করিল। তাহার পর সে মাতাকে বুঝাইতে লাগিল। মিহির বলিল,- “মা! তুমি জননী! আমার দেবতা। তোমার সাক্ষাতে আমি সত্য বলিতেছি। যে, আমি সে ছোকরাকে খুন করি নাই। দুই জনে আমরা একঘরে থাকিতাম। চিরকাল তাহাতে আমাতে বড় ভাব ছিল । বাবার সহিত তাহার বাপের মোকদ্দমা আরম্ভ হইলেও তাহাতে আমাতে ভাব যায় নাই। তবে যে রাত্ৰিতে সে খুন হয়, সেইদিন সন্ধ্যাবেলা তাহাতে আমাতে একটু বচসা হইয়াছিল। কিন্তু সে অন্য কথা লইয়া, মােকদ্দমার কথায় নয়। যাহা হউক, সে ঝগড়া কোন কাজের নয়, কথার তর্ক-বিতর্ক মাত্র। তাহার পর আমরা একসঙ্গে কত কথা কহিলাম, একসঙ্গে আহার করিলাম, একঘরে শয়ন করিলাম। রাত্রি দুইটা কি তিনটার প্ৰবেশ করিয়াছি, আর সেই সময় বেণীর বিছানার হইতে কিরূপ একটা ঘড়-ঘড় শব্দ আমি শুনিতে পাইলাম। যে ছোকরা খুন হইয়াছে৯ নাম বেণী ছিল। আমি ভাবিলাম, বেণী বুঝি কিরূপ কুভাবে শয়ন করিয়াছে, তুষ্ট সে এইরূপ শব্দ করিতেছে। তাহাকে ঠেলিয়া পাশ ফিরিয়া শুইতে বলিব, এই মুঠি৯১সেই অন্ধকার ঘরে তাহার বিছানার দিকে যাইতে লাগিলাম। সহসা আমার গায়ে মানুষের ১ঙ্গাঁ ঠেকিয়া গেল। তখনও আমি কোন বিপদের আশঙ্কা করি নাই। তখন আমি ভাবিলাম যে, বেণী ঘুমের ঘোরে তক্তপোষ হইতে পড়িয়া গিয়াছে। “বেণী” “বেণী বলিয়া ডাকিতে ডাকিতে আমি তাহাকে তুলিতে চেষ্টা করিলাম। কিন্তু আমি দেখিলাম যে, তাহার। সৰ্ব্বশরীর অবশ হইয়া গিয়াছে, আর তাহার গলা দিয়া ঘড়-ঘড় শব্দ হইতেছে; আর সেই সময় আমার পায়ে জল অপেক্ষা ঘন কি সব লাগিয়া গেল। আমি চীৎকার করিয়া উঠিলাম। পাশের ঘরে নিয়োগী মহাশয়ের পুত্ৰ বেচু ও আর আর ছােকরা ছিল। কিন্তু আমার চীৎকার শুনিয়া, কেবল বেচু একেলা দৌড়িয়া আসিল। সঙ্গে সে দিয়াশলাই আনিয়াছিল। সে দিয়াশলাই জ্বলিল। সেই আলোতে বেণীকে আমি তাহার তক্তপোষে শয়ন করাইলাম। আর সেই সময় দেখিলাম যে, তাহার বুকে কে ছুরি মারিয়াছে; বুক হইতে ভলকে ভলকে রক্ত বাহির হইতেছে, তাহাতে আমার গা ও কাপড় রক্তে রক্ত হইয়া গিয়াছে। ঘরের মেজেতে যে স্থানে বেণী পড়িয়াছিল, সে স্থানেও অনেক রক্ত জমা হইয়াছিল। সেই রক্ত আমার গায়ে লাগিয়া গিয়াছিল। নিয়োগী মহাশয়ের পুত্ৰ বেচু ঘরের ভিতর আসিয়া দিয়াশলাই জুলিয়া সমুদয় ব্যাপার দেখিল। বেচু মনে করিল যে, আমি বেণীকে খুন করিয়াছি। সেইজন্য বেচু। আমাকে বলিল,- “চুপ্‌ চুপ্‌! গোল করিও না। কিন্তু মিহির, এ কি তুমি করিয়াছ? বেণীকে তুমি খুন করিয়াছ? সন্ধ্যাবেলা তাহার সহিত তোমার ঝগড়া হইয়াছিল, সেইজন্য ইহাকে খুন করিয়াছ? না, ইহার বাপের কােছ হইতে যে একশত টাকার নোট আসিয়াছে, তাহার জন্য 86xኳን দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.com"ির্ডস”” “