পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহিত শীঘ আসিবেন। আসিলে সকল কথা জানিতে পরিবেন।” পাল মহাশয় ও মিহিরের জন্য সৰ্ব্বদাই আমার মন উদ্বিগ্ন ছিল। চিঠিখানি পাইবামাত্র আমার মনে হইল যে, এইবার বোধহয়, তাঁহাদের সন্ধান পাইলাম। কালবিলম্ব না করিয়া, আমি সেই লোকের সহিত চলিলাম। কলিকাতার যে অংশে অতি ঘন বসতি, উড়িয়া আমাকে সেই স্থানে লইয়া গেল সঙ্কীর্ণ গলির ভিতর সঙ্কীর্ণতর গলি, তাহার ভিতর একখানি খোলার বাড়ীতে আমি প্রবেশ করিলাম। অতি কুৎসিত স্থান, দুর্গন্ধে নাড়ি উঠিয়া যায়। চারিদিক কাদায় ও ময়লায় পরিপূর্ণ। সেই বাটীতে অতি সামান্য ও ক্ষুদ্র একখানি ঘর উড়িয়া আমাকে দেখাইয়া দিল। ঘরের মেজে নিতান্ত আর্দ্র, যেন জল সপ-সপ করিতেছিল। আমি দেখিলাম যে, সেই ভিজা মেজেতে সামান্য একটি মাদুরের উপর গেরুয়া পরিচ্ছদ পরিহিত এক যুবক পড়িয়া আছে। “কে ও মিহির”— এই কথা বলিয়া আমি তাহার নিকট গিয়া বসিলাম । মিহির আমার দিকে চাহিয়া দেখিল। চিনিতে পারিলাম বটে; কিন্তু সে মিহির আর নাই; তাহার দেহ অস্থিচৰ্ম্মসার হইয়া গিয়াছে; তাহার মুখ মলিন হইয়া গিয়াছে। তাহার গায়ে হাত দিয়া দেখিলাম যে, শরীর হইতে অগ্নির ন্যায় উত্তাপ বাহির হইতেছে। মাঝে মাঝে অতি কষ্টের সহিত সে কাসিতেছে। নিশ্বাস-প্ৰশ্বাস ক্রিয়া সাধন করিতেও যেন তাহার বড় ক্লেশ হইতেছে। আমি পুনরায় বলিলাম,- “মিহির!” মিহির মৃদুস্বরে বলিল,— “চুপ চুপ! আমার নাম ধরিয়া ডাকিও না, কেহ শুনিতে পাইলে এখনি আমাকে ধরিয়া লইয়া যাইবে।” আমি বলিলাম,- “তবে তুমি এখনও সে কথ্যভঁসী না? মিহির! সে ভয় আর কিছুমাত্র নাই। তুমি যে নিরপরাধ, তাহা সম্পূর্ণরূপে হইয়াছে। বেণীকে নিয়োগী পুত্র খুন করিয়াছিল; পুলিশের কাছে ও আদালতে কাছে, সে তাহা স্বীকার করিয়াছে। তোমার আর কোন ভয় নাই।” এই কথা শুনিয়া মিহির বলিল, তুলিয়া বসাও। আমি উঠিতে পারি না।” আমি মিহিরকে তুলিয়া বসাইলাম। আমার স্কন্ধে মাথা ও বক্ষঃস্থলে আপনার শরীর রাখিয়া, সে বসিয়া রহিল। তাহার পর, বেচুর আদ্যোপান্ত বিবরণ বারবার সে আমার মুখ হইতে শুনিল। সেই বিবরণ শ্ৰবণ করিয়া তাহার রোগ ও যাতনার যেন অনেকটা উপশম হইল, আর তাহার শরীরে যেন একটু বল হইল। তাহার পর, আমি তাহকে বলিলাম,- “মিহির! ভাই! তোমাকে আর ক্ষণকালের জন্য আমি এ স্থানে রাখিতে পারি না। এ স্থানে সহজে মানুষ মরিয়া যায়। তুমি ভয়ানক জ্বর ভোগ করিতেছ। বুকেও বোধ হয়, কিছু রোগ হইয়া থাকিবে। অতএব তোমাকে আমি আমার বাসায় লইয়া যাইব ।” মিহির উত্তর করিল,— “কি করিয়া তাহা হইবে! আমার হাতে একটিও পয়সা নাই। এই সন্ন্যাসীবেশে বহুদেশ ভ্ৰমণ করিয়া, আজ দশ দিন কলিকাতায় উপস্থিত হইয়াছি। কলিকাতায় উপস্থিত হইয়াই, আমি শ্যামবাজারে গদাধর মোড়লের নিকট গমন করিয়াছিলাম। তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ হয় নাই। তাহার পরদিন হইতে এই বিষম জুর দ্বারা আমি আক্রান্ত হইয়াছি। সেই অবধি বিছানায় পড়িয়া আছিঃ-না ঔষধ, না পথ্য। গাড়ীতে যাইতে পারিব না, পালকি করিয়া যাইতে হইবে। কিন্তু গাড়ী কি পালকি ভাড়া কোথায় পাইব যে, তোমার সহিত তোমার বাসায় যাইব? তবে তুমি যদি গদাধর মোড়লের নিকট 2\3-1-3թ7 sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro 8.