পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লোকটি বলিল,- “বটে!” এই কথা বলিয়া, সে সেই লীেহ সাবলের দ্বারা সবলে মুস্তাফির মস্তকে আঘাত করিল। প্রাণভয়ে মুস্তফি বাম হাত উত্তোলন করিলেন। সাবলের আঘাত কতক তাঁহার হাতে পড়িল, কতক মাথায় পড়িল। সবলে সমুদয় আঘাতটী যদি তাহার মস্তকে পড়িত, তাহা হইলে তৎক্ষণাৎ তাঁহার মন্তক চূর্ণ হইয়া যাইত, তৎক্ষণাৎ তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হইতেন। কিন্তু মাথায় যে আঘাতটুকু লাগিয়াছিল, তাহাই তাঁহার পক্ষে যথেষ্ট হইয়াছিল। সমস্ত দিন অনাহারে ও ঘোর দুর্ভাবনায় শরীর দুৰ্ব্বল হইয়াছিল। সাবলের আঘাতে মুস্তফি মহাশয় তৎক্ষণাৎ মূৰ্হিত হইয়া ভূমিতে পতিত হইলেন। কতক্ষণ অজ্ঞান অবস্থায় ছিলেন, তাহা তিনি বলিতে পারেন না। চেতন হইয়া তিনি চিন্তা করিতে লাগিলেন। ক্রমে ক্রমে সকল কথা তাহার স্মরণ হইল । তিনি চীৎকার করিতে চেষ্টা করিলেন। চীৎকার করিতে পারিলেন না। মুখ তাঁহার বন্ধ। মাথা তাঁহার ব্যথা করিতেছিল। মাথায় হাত দিতে চেষ্টা করিলেন। হাত নাড়িতে পারিলেন না । দুই হাত তাঁহার বাধা ছিল। পা নাড়িতে চেষ্টা করিলেন, পা নাড়িতে পারিলেন না। দুই পা তাঁহার বাধা দিল। মস্তক, হাত ও পা অল্প এদিক ওদিক নাড়িয়া তিনি বুঝিতে পারিলেন যে, তাহার গলদেশ ঠিক রেলের উপর রহিয়াছে। তাঁহার হাত দুইটী ও পা দুইটী রেলের সহিত বাধা রহিয়াছে। মনে মনে তিনি ভাবিতে লাগিলেন, — “আমি নিজে তো মরিতে প্ৰস্তুত হইয়াছিলাম। লোকটা আমাকে যে রেলের সহিত বঁধিয়াছে, সে জন্য কোনও দুঃখ নাই। কিন্তু আমার নিকট হইতে অতি অল্পদুরে সে চারিখানি রেল ফেলিয়াছে, রেলের উপর কাঠ রাখিয়াছে। আমি অজ্ঞান হইলে আরও কত রে ফুর্লিয়াছে, আরও কত কি করিয়াছে, তাহা বলিতে পারি না। এখনি যদি গাড়ি আসিয়া গুড়, তাহা হইলে কত লোক মারা পড়িবে! এই নবম অধ্যায় কি হয়, কি হয়! এইরূপ ভাবিয়া প্রথম তিনি চীৎকার করিতে চেষ্টা করিলেন । কিন্তু লোকটা তাঁহার মুখের ভিতর চাদরের কিয়দংশ প্রবিষ্ট করিয়া দিয়াছিল, তাহার পর চাদরের বাকি অংশ জড়াইয়া উত্তমরূপে তাহার মুখ বাধিয়া দিয়াছিল। সেজন্য তিনি চীৎকার করিতে পারিলেন না। তাহার পর তিনি হাতের বন্ধন মোচন করিতে চেষ্টা করিলেন। যত বল করিতে লাগিলেন, রজু হাতে ও পায়ে ততই বসিয়া যাইতে লাগিল। তাহাতে তাঁহার ঘোরতর কষ্ট হইতে লাগিল। তিনি বুঝিলেন যে, গলায় দিয়া মরিবার নিমিত্ত সে দিন তিনি যে দড়ি কিনিয়াছিলেন, সেই নূতন দড়ি দিয়া তাঁহার হাত পা বাধা ছিল। তিনি অনেক চেষ্টা করিলেন, কিন্তু হাত পায়ের বন্ধন মোচন করিতে কিছুতেই কৃতকাৰ্য হইলেন না। অল্পক্ষিণ পরে দূরে গুম্‌ গুম্‌ শব্দ হইতে আরম্ভ হইল। মুস্তফি ভাবিলেন,- “সৰ্ব্বনাশ হইল! 87 afraig -iibg gis so! - www.amarboi.comf737**********