পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিংশ অধ্যায় বিদ্যুৎবরণী দেবকন্যা এই কথা বলিয়াই পুনরায় সে জলমগ্ন হইল। মুস্তফি মহাশয় মনে মনে ভাবিলেন যে,- “আজি আমারও মৃত্যু নিশ্চয়, কিন্তু একটী প্রাণী আমার সম্মুখে মরিবে, আর আমি তাহাকে বীচাইতে চেষ্টা করিব না, তাহা তো হইতে পারে না। তাহার পর, পরম শত্রুও কখন যেন পুত্ৰশোক না। পায়, সৰ্ব্বদা ইহাই আমার একান্ত কামনা। উহার পিতা আর ও-নিজে যতই কেন নরাধাম হউক না, উহাকে আমি বঁাচাইতে চেষ্টা করিব। এখন যা থাকে কপালে।” এইরূপ ভাবিয়া মুস্তফি মহাশয় তৎক্ষণাৎ জলে ঝাঁপ দিলেন। অধর আরও কিছু দূরে আর একবার মাথা তুলিল। অতি দ্রুতবেগে মুস্তফি মহাশয় সেই স্থানে গিয়া, তাহার চুল ধরিয়া ফেলিলেন। অধর দুই হাতে তাঁহাকে জড়াইয়া ধরিল। মুস্তফি মহাশয় বলিলেন,- “পাষণ্ড!! আমার হাত ছাড়িয়া দেব। আমার দুই হাত ও বক্ষঃস্থল যদি তুই এইরূপ জড়াইয়া ধরিবি, তাহা হইলে তোকে বীচাইব কি করিয়া? তুইও মরিবি, আমিও মরিব।” ভয়ে হতজ্ঞান হইয়া অধর তাঁহাকে আরও জোরে জড়াইয়া ধরিল। দুই জনেই ডুবিয়া গেলেন। অধরকে লইয়া মুস্তফি মহাশয় পুনরায় ভাসিয়া উঠিলেন। তিনি বলিলেন,- “ওরে নরাধম! ঐ দেখু আমাদিগকে জাহাজের সম্মুখে টানিয়ার্ল্ড ইয়া যাইতেছে। একটু না হয়। আলগা দে, আমার একটা হাত, না হয় ছাড়িয়া দে যে, পাশ দিয়া ভাসিয়া যাইতে চেষ্টা করি। তা না হইলে, দুইজনেই এখনি রূপানীচে গিয়া পড়িব ।” দুই হাত দিয়া অধর আরও জোরে তঁ জড়াইয়া ধরিল। মুস্তফি মহাশয় আপনার বক্ষঃস্থল হইতে তাহার হাত ছাড়াইতে অনৈর্কি চেষ্টা করিলেন। কিন্তু কিছুতেই কৃতকাৰ্য হইতে পারিলেন না। তখন তিনি দীর্ঘ নিশ্বাস্ট্রপরিত্যাগ করিয়া, বলিলেন,- “হে জগদীশ্বর! তোমার যাহা ইচ্ছা, তাহাই হউক।” বয়ার উপর বসিয়া মাশ্চন্টক মহাশয় সমুদয় ঘটনা দেখিতেছিলেন, আর চীৎকার করিতেছিলেন– “হায়! হায়! সৰ্ব্বনাশ হইল! হায় হায়! আমার সর্বনাশ হইল! বাপ সকল! কে কোথায় আছিস, আয় । আমার অধরকে তোরা বঁচা।” বয়ার উপর বসিয়া তিনি দেখিলেন যে,-মুস্তাফি অধরের চুল ধরিল। তিনি দেখিলেন যে,-অধর মুস্তাফিকে দুই হাতে জড়াইয়া ধরিল । তিনি দেখিলেন যে, দুই জনে একবার ডুবিয়া গেল, তাহার পর পুনরায় ভাসিয়া উঠিল। অবশেষে তিনি দেখিলেন যে, প্রবল স্রোতবেগে তাহারা জাহাজের মুখে গিয়া পড়িল। তাহার পর তিনি দেখিলেন যে,- সেই ঘূর্ণিত জল দুইজনকে নিম্নে যেন চুষিয়া লইল। জড়ােজড়ি হইয়া দুই জনে জাহাজের নীচে গিয়া পড়িল; আর উঠিল না। মাশ্চন্টক মহাশয় আপনার বুক চাপড়াইয়া কেবল বলিতে লাগিলেন যে,- “আমার সৰ্ব্বনাশ হইল! সব আশা ভরসা আমার এইবার ফুরাইল!” একবার আকাশের দিকে চাহিয়া তিনি বলিলেন,- “হে ভগবান! তোমার মনে কি এই छिल?" সেই সময় তিনি দেখিলেন যে—অন্ধকারাচ্ছন্ন আকাশের একধার আলোকিত হইল। GSR o frig ož3. g3 ze - www.amarboi.comfo%7*"*"***"****