পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিলেন,- “অধর কৈ!" যাহা ঘটিয়াছে, তাহা শুনিয়া তিনি বুক চাপড়াইতে লাগিলেন। মাথায় একখানি থান ইট মারিলেন। প্ৰবল ধারায় সেই আঘাত হইতে রক্ত পড়িতে লাগিল। কিন্তু কাঁদিলে আর কি হইবে! এ রোগের ঔষধ নাই। সহ্য করিতেই হইবে। দারুণ শোকে তাহার চিত্তও কতক পরিমাণে বিকৃত হইয়া গেল। বিকৃত চিত্তের আপাততঃ অন্য কোন লক্ষণ ছিল না। কেবল তিনি লোকের সহিত ভাল করিয়া কথা কহিতেন না। আপনার মনে সৰ্ব্বদাই কি চুপি চুপি বকিতেন। তা না হইলে সংসারের সমস্ত কাজ কৰ্ম্ম তিনি একেলা করিতেন। শুচিবাইয়ের জ্বালায় তাহার বাড়ীতে দাসদাসী থাকিত না। সেজন্য সকল কাজ তাঁহাকে একেলা করিতে হইত। স্বামী শয্যা-ধরা, উত্থানশক্তি-রহিত, জ্ঞানহীন শিশুর ন্যায়; তক্তপোষের এক পার্শ্বে কোন মতে সরিয়া তিনি মলমূত্র পরিত্যাগ করতেন। গৃহিণীকে সে সমুদয় পরিষ্কার করিতে হইত। নীেকা-ডুবির দুই দিন পরে পরস্পরে জড়িত দুইটী মৃতদেহ গঙ্গার নিম্ন দিকে কিছুদূরে কিনারায় গিয়া পড়িল। মুস্তফি মহাশয়ের জ্যেষ্ঠ পুত্ৰ সুরেশ সেই সংবাদ পাইয়া, বন্ধুবান্ধবের সহিত সেই স্থানে গিয়া উপস্থিত হইলেন। মৃতদেহ দুইটী তাঁহারা শ্মশানে লইয়া আসিলেন। সকলে অনেক চেষ্টা করিলেন; কিন্তু অধরের হাত মুস্তফি মহাশয়ের শরীর হইতে কিছুতেই ছাড়াইতে পারিলেন না। নিরুপায় হইয়া দুইটী মৃতদেহ এক সঙ্গে এক চিতায় দাহ করিবার নিমিত্ত সকলে মানস করিলেন। কিন্তু সুরেশ বলিল, “তা হইবে না; ও নরাধমের সহিত ব্যার সহকার আমি করতে দিব না। নরাধমের স্থা ছাড়াইতে হয়, তাহাও আমি করিব।” ○ প্ৰহারের সময় যে হাত দিয়া সে প্ৰভাবতীর্কীয়া থাকত, যে হাত দিয়া প্ৰভাবতীকে চড় চাপড় বেত জুতা মারিত, সকলে আজ মড় মডু করিয়া ভাঙ্গিলেন; তবে সকলে ভাবে দাহ করিয়া সকলে বাড়ী শ্ৰাদ্ধাদি ক্রিয়া সমাপ্ত করিয়া সুরেশ পিতার সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করিল। আদ্যোপান্ত সকল বৃত্তান্ত শ্রবণ করিয়া সাহেব। আর কোন কথা না বলিয়া, মুস্তফি মহাশয়ের কৰ্ম্মটী তাঁহার পুত্রকে প্ৰদান করিলেন। স্বামি-শোকে সুরেশের মাতা অতি কাতর মনে অনেক দিন অতিবাহিত করিলেন। সময়ে মানুষ শান্তি লাভ করে। কিছু দিন পরে তিনি পুত্র দুইটীর বিবাহ দিলেন; অনেকগুলি পুত্ৰ, পৌত্র, পৌত্রী লইয়া সুরেশের মাতা সুখে কালব্যাপন করিতে লাগিলেন। এ দিকে মাশ্চটক-গৃহিণীর মন দিন দিন অধিক বিকৃত হইতে লাগিল। তাঁহার শুচিবাই আরও বৃদ্ধি হইল। কিন্তু সে শুদ্ধাচার এখন আর বৃথা! যে শগুড়িকে তিনি এত ভয় করিতেন, সেই শগুড়িতে মাশ্চন্টক মহাশয় এখন মাখা-মাখি হইয়া থাকিতেন। তক্তপোষে ভাত, বিছানায় ভাত, মেজেতে ভাত, মাথায় ভাত, সৰ্ব্বত্ৰে ভাত। গৃহিণী যত পারিতেন, গোবর-জিল দিয়া ধুইতেন ও গোবর-জল আপনার মাথায় ঢালিতেন। কিন্তু প্ৰতিদিন যখন এই কাণ্ড, তখন কত আর তিনি পরিষ্কার রাখিবেন! No frig ož3. g3 ze - www.amarboi.comf:37*"*"***"*****