পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অবলম্বন করিয়া কে যেন কাগজের উপর লিখিতে লাগিল । সুরেশ একপ্রকার সং তাহার হাত ধরিয়া কেহ লিখিতেছে, তাহা সে জানিল। কিন্তু কে লিখিতেছে, কি লিখিতেছে, তাহার কিছুই সে জানিতে পারিল না। কিছুক্ষণ পরে লেখা থামিয়া গেল। তাহার মন স্বাভাবিক অবস্থা প্ৰাপ্ত হইল; তাহার হাত পুনরায় নিজের বিশ হইল। ঘরের বায়ু পূৰ্ব্বের ভােব ধারণ করিল। ঘোরতর বিস্মিত হইয়া সুরেশ কাগজের দিকে চাহিয়া দেখিল। দেখিল যে, তাহাতে এইরূপ কথা লিখিত হইয়াছেঃ “তুমি তোমার কৰ্ত্তব্য করবে। অন্যে তাঁহাদের কৰ্ত্তব্য করে কি না, তাহার বিচার তুমি করিবে না। ঈশ্বর তোমার মনে দয়া দিয়াছেন। সেই বৃত্তির বশবৰ্ত্তী হইয়া তুমি পরের দুঃখ মোচন করিবে। যাহার দুঃখ মোচন করিবে, সে পাপী কি সাধু, তাহার বিচার তুমি করিবে না। তবে পাপাচারে কাহাকেও প্রশ্ৰয় দিবে না। লোকের দুঃখ দূর করিবে, কিন্তু নিজের মঙ্গলের নিমিত্ত পশ্চাৎ লিখিত লোকদিগের সহিত ঘনিষ্ঠতা করিবে না। ঃ- (১) ঈশ্বর ও পরকালে যাহাদের বিশ্বাস নাই। (২) যাহারা অসত্য কথা বলে ও অসত্য পথে বিচরণ করে। (৩) যাহাদের মনে দয়া নাই। (৪) যাহারা পরের মন্দ করে। একজন লোকের মন্দ করিলে ঘোর পাপ হয়, কিন্তু যাহারা কোটি কোটি লোকের অনিষ্ট করে, তাহদের পাপের সীমা নাই। (৫) জ্ঞান-লাভে মনুষ্যের পশুত্ব মোচন হয়, মানুষ দেবত্ব লাভ করে। দেশ বিদেশে গমন করিলে মানুষের চক্ষু প্ৰস্ফুটিত হয়, মানুষ নানারূপ জ্ঞানলাভ করিতে পারে। দেশ বিদেশে গমন না। করিলে মানুষ অন্ধকূপের ভোক হইয়া থাকে। যে য় লোক দেশ বিদেশ গমন সম্বন্ধে প্রতিবন্ধকতা করে, তাহার কোটি কোটি লোকের র’করে । তাহদের সহিত কোন সংস্রাব রাখিবে না ।” C পর দিন প্ৰত্যুষে মাতাকে প্ৰণাম সে গোপালের বাটীতে গমন করি মাশ্চটকদিগের কষ্ট নিবারণের নানারূপ উপায় করিল। প্রতি মাসে চাউল, দাল প্রভৃতি দ্রব্য যোগাইবার নিমিত্ত নিকটস্থ মুদির সহিত সে ঠিক করিল। মাছ ও তরকারি ক্রয় করিবার নিমিত্ত প্ৰতি মাসে নগদ পাঁচ টাকা মাশ্চন্টক-গৃহিণীর হস্তে প্ৰদান করিবার নিমিত্ত সুরেশ তাহাকে আজ্ঞা করিল। হিসাব করিয়া এক মাসের অগ্রিম টাকা সে মুন্দির হস্তে অৰ্পণ করিল। এইরূপ সমুদয় বন্দোবস্ত করিয়া মাশ্চন্টক মহাশয়কে একবার দেখিবার নিমিত্ত সুরেশের ইচ্ছা! হইল। গোপালের সহিত তাহার বাড়ীর ভিতর সে প্রবেশ করিল। বাটীর ভিতর প্রবেশ করিবামাত্র তাহার দর্শনেন্দ্ৰিয়, শ্রবণেন্দ্ৰিয়, ঘাণেন্দ্ৰিয় এক আশ্চৰ্য্য সূক্ষ্মভাব প্রাপ্ত হইল। নানারূপ অদ্ভুত দৃশ্য তাহার নয়ন গোচর হইতে লাগিল। নানা শব্দ তাহার কর্ণকুহরে প্রবেশ করিতে লাগিল; নানা গন্ধ সে আঘাণ করিতে লাগিল। যে ঘরে মাশ্চন্টক মহাশয় বাস করিতেন, সে ঘরের সম্মুখে বারেণ্ডায় সুরেশ ও গোপাল গিয়া দাঁড়াইল । জানােলা দিয়া সুরেশ দেখিল যে, মাশ্চন্টক মহাশয় তক্তপোষের উপর ও তাঁহার গৃহিণী মেজেতে একটী ছিন্ন মাদুরের উপর বসিয়া আছেন। তাহা ব্যতীত অতি ভয়ঙ্কর দৃশ্য সুরেশের নয়নগোচর হইল। অতি কদৰ্য ধূম দ্বারা গঠিত অসংখ্য ভীষণ মূৰ্ত্তি দ্বারা ঘরটীি পরিপূর্ণ হইয়া আছে। মাশ্চন্টক মহাশয়ের শরীর লইয়া তাহারা নানারূপ ক্রীড়া করিতেছে। মাঝে মাঝে তাহদের মুখ হইতে বিকট শব্দ নিৰ্গত হইতেছে। মাশ্চন্টক মহাশয়ের শরীর পচিয়া গিয়াছে। তাঁহার প্রতি লোপকূপ হইতে কদাকার

  • "*" %*****" sig oriż35 g35 RFG a www.amarboi.com My (ድSእ