পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ অধ্যায় দ্বিতীয় অঙ্গুরী রুস্তম, বালিকা তারার মুখপানে চাহিলেন। তারা বলিল,- “তুমি চলিয়া গেলে আমি নিশাপুরে উড়িয়া গিয়াছিলাম। সেস্থানে গিয়া আমি সকল কথা অবগত হইয়াছি। কাকা ভানুমতীকে বিবাহ করিতে চাহিয়াছিলেন, ভানুমতীর পিতা সে কথায় সম্মত হয় নাই। সেই রোগে গুরুর সহায়তায় কাকা তাহার শরীর খাড়ের করিয়াছেন। একমাত্ৰ কাকার গুরু, তাহাকে ভাল করিতে পরিবেন।” রুস্তম জিজ্ঞাসা করিলেন, — “গুরুর দেখা আমি কোথায় পাইব? তাহার পর গুরু আমার কথা শুনিবে কেন?” তারা বলিল,- “তুমি প্রথম নিশাপুরে গমন কর। সেই নগরের আটটি দ্বার আছে। উত্তর দিকের দ্বারের নাম সমরখণ্ড-দ্বার। সেই দ্বারের বাহিরে বৃহৎ এক কেলুগাছ আছে। সেই কোলুগাছের মূলের নিকট তুমি অল্প খনন করিলে সুতীক্ষ্ণ এক খড়গ পাইবে। সেই খড়গ আমাদের পিতার, তাহার নাম শমশের। নিশাপুর হইতে কিছুদূরে এক নিবিড় বন আছে। বনের ভিতর দুর্গ নিৰ্ম্মাণ করিয়া গুরু, তাহার ভিতর বাস করিতেছে। দুর্গের দ্বারে উপস্থিত হইয়া শমশের দ্বারা তুমি আঘাত করিবে। তখন দ্বারা আপনা। আপনি খুলিয়া যাইবে। তাহার পর তুমি সেই দুৰ্ব্বাত্ত ওস্তাদ অর্থাৎ গুরুর নিকট উপস্থিত হইবে খুশিমশের খড়গ তোমার হাতে থাকিলে, সে তোমার অনিষ্ট করিতে পরিবে না । শমশের য়ারকে তোমার হাতে দেখিলেই সে ভয়ে জড়সড় হইবে। ভানুমতীকে ভাল করিবার উপ্ত্যয় তখন তাহাকে তুমি জিজ্ঞাসা করিবে; না বলিলে শমশের দ্বারা তুমি তাহার গলা কাটিৰ্ভেস্থ " এইরূপে নানাপ্রকার উপদেশ প্রদান কুরিয়া রাজপুত্র সাদি ও রাজকন্যা তারা রুস্তমকে বিদায় করলেন; অনেকদিন পথ পর্যটন করিয়ী রুস্তম প্রথম নিশাপুরে গিয়া উপস্থিত হইলেন। নগরের উত্তর দ্বারের বাহিরে তিনি সেই বৃহৎ কেলুগাছ দেখিতে পাইলেন। সেই কেলুগাছের মূলদেশ খনন করিতেই বহুমূল্য হীরা-মাণিক-জড়িত কোফতগিরি কারুকাৰ্য্যে শোভিত সুতীক্ষ এক খড়গ বাহির হইয়া পড়িল। অতি সাবধানে সেই খড়গটি লইয়া রুস্তম পুনরায় পথ পর্যটনে প্ৰবৃত্ত হইলেন। উত্তরমুখে ক্রমাগত পথ চলিয়া দুইদিন পরে তিনি এক গভীর কানন দেখিতে পাইলেন। নিৰ্ভয়ে বনের ভিতর প্রবেশ করিয়া তিনি ক্রমাগত অগ্রসর হইতে লাগিলেন। অনেকদূরে গিয়া বনের ভিতর এক সুদৃঢ় দুর্গ তাঁহার নয়নগোচর হইল। দুর্গের প্রাচীর আকাশে গিয়া ঠেকিয়াছিল। এই সময়ে বনের চারিদিকে অতি ভয়াবহ শব্দ হইতে লাগিল। বনের বৃক্ষগণ সকলেই যেন উচ্চৈঃস্বরে বলিতে লাগিল,— “ধর ধর, মাত্র মারু, কাট কাটা।” কিন্তু রুস্তম তাঁহাতে ভয় পাইলেন না। আরও অগ্রসর হইয়া তিনি দুর্গের লৌহনিৰ্ম্মিত দ্বার দেখিতে পাইলেন। নিকটে গিয়া রুস্তম শমশের তলোয়ার দ্বারা দ্বারে আঘাত করিতে লাগিলেন। লৌহনিৰ্ম্মিত সেই দ্বার হইতে বজ-নিনাদের ন্যায় শব্দ বাহির হইতে লাগিল। কিন্তু সাতবার আঘাত করিতেই দুর্গের দ্বার খুলিয়া গেল। নিৰ্ভয়ে রুস্তম দুর্গের ভিতর প্রবেশ করিলেন। কিন্তু তাঁহাকে অধিক দূর যাইতে হইল না। দ্বারে আঘাত শুনিয়া শুরু তাড়াতাড়ি সেইদিকে আসিতেছিল। গুরুর উগ্ৰমূৰ্ত্তি দেখিয়া রুস্তমের এইবার ভয় হইল। ঘোর কৃষ্ণবর্ণ, সৰ্ব্বশরীর শুষ্ক, চক্ষু দুইটি রক্তবর্ণ, গুরুর মূৰ্ত্তি অতি বিকট— অতি ভয়াবহ। তাহাকে দেখিয়া রুস্তম স্তম্ভিত হইয়া দাঁড়াইলেন! 3छल 2द्र sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro 8s