পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুরু বলিল,- “দুষ্ট, কে রে তুই’? কাহার এমন সাহস যে, আমার দ্বারে আঘাত করে। রও, এখনি তোকে বােদর করিয়া বনে আমি ছাড়িয়া দিব।” এই কথা বলিয়া গুরু একমুষ্টি ধুলি লইল। ধূলার উপর মন্ত্র পড়িয়া রুস্তমের শরীরে তাহা নিক্ষেপ করিয়া বলিল,— “দুষ্ট! এই মুহুৰ্ত্তে তুই বীদের হইয়া যা!” কিন্তু শমশের খড়েগর গুণে রুস্তমের কিছুই হইল না, তাহার যেমন শরীর— সেইরূপ শরীর রহিয়া গেল। তখন সেই খড়গ উত্তোলন করিয়া তিনি গুরুর মস্তক ছেদন করিতে ধাবিত হইলেন। শমশের খড়েগর প্রতি গুরুর যেমন দৃষ্টি পড়িল, আর ভয়ে তাহার। সৰ্ব্বশরীর শিহরিয়া উঠিল, ভয়ে তাহার পদদ্বয় কঁাপিতে লাগিল। রুস্তমের পায়ে পড়িয়া তখন সে বিনয় করিয়া বলিতে লাগিল,- “তুমি আমাকে বধ করিও না, তুমি যাহা বলিবে, তাহা আমিই করিব।” রুস্তম বলিলেন,- “আচ্ছা! তোমাকে আমি বধ করিব না। কিন্তু রাজকন্যা ভানুমতীর শরীর কি উপায়ে পুনরায় পূৰ্ব্বের মত হইবে, তাহা তোমাকে বলিয়া দিতে হইবে, না বলিলে নিমিষের মধ্যে আমি তোমার গলা কাটিয়া ফেলিব।” এই কথা শুনিয়া শুরু বলিল,— “নিশাপুরের কুজো রাজা আমার চেলা, আমি তাহার ওস্তাদ। আমার নিকট হইতে অঙ্গুরী লইয়া ভানুমতীকে সে পরিতে দিয়াছিল; সেই আঙটির গুণে ভানুমতীর শরীর খড়ের হইয়া গিয়াছে। এখন তোমাকে আমি আর একটি আঙটি দিতেছি। সেই অঙ্গুরীটি ভানুমতীর দক্ষিণ হাতের অঙ্গুল্লিতে পরাইলেই তাহার শরীর পূর্বের ন্যায় রক্তমাংসের হইয়া যাইবে।” O) রুস্তম ইরাণ নগরের দিকে প্রত্যাগমন করি যথাকলে ইরাণ নগরে উপস্থিত হইয়া তিনি রাজসভায় গমন করিলেন । ভানুমতীকে অদ্যই আমি ভাল করিব র নিকট আমাকে লইয়া চলুন।” রুস্তমকে লইয়া সানন্দচিত্তে রাজা অন্তঃপুরে গমন করিলেন। যে ঘরে ভানুমতী শয়ন করিয়াছিলেন, সেই ঘরে সকলে গমন করিলেন। অগ্রসর হইয়া রুস্তম ভানুমতীর শয্যার নিকট গিয়া দাঁড়াইলেন। তাহার পর ভানুমতীর খড়ের দক্ষিণ হাতটি ধরিয়া তাহার খড়ের অঙ্গুলিতে তিনি সেই দ্বিতীয় আঙটি পরাইয়া দিলেন। আঙটি পরাইবামাত্র ভানুমতীর সেই খড়ের দেহ দাউদাউ করিয়া জ্বলিয়া উঠিল। ভানুমতীর খড়ের দেহে আগুন লাগিয়া গেল। চারিদিকে হাহাকার পড়িয়া গেল। জল আনিয়া সকলে সেই অগ্নি নিৰ্ব্বাণ করিবার নিমিত্ত ব্যস্ত হইল। কেন এরূপ দুর্ঘটনা ঘটিল, রুস্তম তাহা বুঝিতে পারিলেন না। ভয়ে তাহার। সৰ্ব্বশরীর কঁাপিতে লাগিল। হতভম্বর ন্যায়, কিছুক্ষণের নিমিত্ত তিনি সেইস্থানে দাড়াইয়া রহিলেন। কিন্তু পরীক্ষণেই তাঁহার জ্ঞান হইল। তিনি ভাবিলেন যে, এস্থানে আর থাকা উচিত নহে। রাজা নিশ্চয় তাহাকে কাটিয়া ফেলিবেন। অগ্নি নিৰ্ব্বাণ করিতে সকলে যখন ব্যস্ত ছিল, সেই অবসরে রুস্তম রাজবাটী হইতে পলায়ন করিলেন। GGro দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comৰ্ম্মিািক্যনাথ রচনা সংগ্ৰহ