পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় অধ্যায় বালিকা ভূত দিদিমণির এই কথা শুনিয়া সহচরী। পিতোমকে চক্ষু টিপিলেন। তাহার পর তিনি বিলাসীর গা টিপিলেন। ইহার মানে আমি কিছু বুঝিতে পারিলাম না। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “সে মেয়েটি কে? সে তো বড় দুষ্ট মেয়ে দেখিতেছি। তাহাকে আর বাগানে আসিতে দেওয়া যাইবে না ।” আমার কথার কোন উত্তর না দিয়া সহচরী বলিলেন,- “এ বিষয় অলক ঠাকুরুণকে জানাইতে হইবে। তিনি যেরূপ বলেন, সেইরূপ করিতে হইবে।” এই কথা বলিয়া সহচরী সে ঘর হইতে চলিয়া গেলেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি আমাকে, পিতোমকে ও বিলাসীকে অলক ঠাকরুণের ঘরে ডাকিয়া পাঠাইলেন। দিদিমণিকে কোলে লইয়া আমি পিতেম ও বিলাসীর সঙ্গে সেই ঘরে যাইলাম। অলক ঠাকরুণ খুড়-থুড়ে বুড়ী হইয়াছিলেন। তিনি অধিক কথা বলিতে পারিতেন না। তাঁহার হইয়া সহচরী আমার দিকে চাহিয়া বলিলেন,- “অলীক ঠাকুরুণ তোমাকে বলিতে বলিলেন যে, সে মেয়েটি মানুষ নহে। তাহার মা, যাঁহাকে সীতা গাছতলায় দেখিয়াছিল, তিনি অলক ঠাকুরুণের ভাইঝি, সীতার মাসী । অনেকদিন হইল, তিনি ও তাঁহার কন্যা অপঘাত-মৃত্যুতে মরিয়া গিয়াছেন। তাঁহাদের গতি হয় নাই, এখন তাঁহারা এরূপ হইয়া আছেন। তাঁহা সৰ্ব্বদা, বিশেষতঃ ঝড় বাতাস , আর এই পূজার সময়, বাড়ীর চারিদিকে ঘুরিয়া বেড়ান। পিতেম, বিলাসী শামী, তোমাদের সকলকে অলক ঠাকুরুণ বলিতেছেন যে, সীতাকে তােমরা খুকণ্ঠবিধানে রাখিবে, নিমিষের নিমিত্ত তােমরা তাহাকে চক্ষের আড় করিবে না। সে মেয়েৰ্ছ এবার যদি সীতাকে ভুলইয়া লইয়া যায়, তাহা হইলে আর তোমরা সীতাকে পাইবে নৃষ্ঠেত এই কথা শুনিয়া আমার আত্মাপুৰুষ উড়িয়া গেল। কি করিয়া মেয়েকে ভূতের হাত হইতে বঁাচাইব, সেই ভাবনায় আমি আকুল হইয়া পড়িলাম। তোমার মামার তখনও কৰ্ম্ম-কাজ হয়। নাই, একদিন গিয়া দাঁড়াই, একবেলা একমুঠা কেহ যে ভাত দেয়, এমন স্থান ছিল না। কাদায় গুণ ফেলিয়া দিদিমণিকে লইয়া কাজেই আমাকে সেই ভয়ানক বাড়ীতে থাকিতে হইল। কিন্ত সেই দিন হইতে দিদিমণিকে আমরা নিমিষের জন্যও চক্ষুর আড় করিতাম না। হয় আমি, না হয় বিলাসী, না হয়। পিতেম, কেহ না কেহ সৰ্ব্বদা তাহার কাছে থাকিত। কিন্তু মাঝে মাঝে জানালার দ্বারে দাঁড়াইয়া দিদিমণি আমাদিগকে বলিত,- “ঐ সেই মেয়েটি আসিয়াছে, ঐ আমাকে হাতছানি দিয়া ডাকিতেছে। শামী, তুই আমাকে সুন্দর বলিস্, কিন্তু ওর পানে একবার চাহিয়া দেখ। আহা! কি চমৎকার রূপ। কেবল ওর পানে চাহিয়া থাকিতে ইচ্ছা করে, অন্যদিকে চক্ষু ফিরাইতে ইচ্ছা করে না। ঐ দেখ, আবার আমাকে ডাকিতেছে। আমি যাইতেছি। না বলিয়া, আহা! মেয়েটি ঐ দেখ, কতই না কাদিতেছে। তাহার কাপড় সে আমাকে দেখাইতেছে, তাহার কাপড় ভিজিয়া গিয়াছে, টসূ-টস্ করিয়া তাহার কাপড় হইতে জল পড়িতেছে। এ আবার কি? হাত দিয়া সে আপনার মাথা আমাকে দেখাইতেছে। আহা! মেয়েটির মাথায় কে মারিয়াছে, মাথা হইতে গাল বহিয়া রক্ত পড়িতেছে। শামী! একবার আমাকে ছাড়িয়া দে। আমি উহার কাছে যাই, উহাকে বাড়ীর ভিতর ডাকিয়া আনি । তুই উহার মাথায় ঔষধ দিয়া দিবি। আমার ঐ কাপড়খানি আমি উহাকে পরিতে দিব । যাই ভাই, যাই!” ርእ ግbr fi:Ilă zi, o ga se - www.amarboi conf**