পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছাড়াইয়া বারবার বাহিরে পলাইতে চেষ্টা করিতেছিল। অতিকষ্টে আমি তাহাকে ধরিয়া রাখিতেছিলাম । সন্ধ্যার পর দিদিমণি ঘুমাইয়া পড়িল। আমি ভাবিলাম যে, এইবার বুঝি আমাদের বিপদ কাটিয়া গেল, আর বুঝি কোন উপদ্রব হইবে না। কিন্তু আমরা কেহ নিদ্রা যাইলাম না, ঘরে দুইটা আলো জ্বালাইয়া সকলে জাগিয়া বসিয়া রহিলাম। রাত্রি প্রায় দুই প্রহর হইয়াছে। এমন সময় সহসা বাহির বাটীতে সেই বেহালা বাজিয়া উঠিল। কেবল বেহালা নহে, তাহার সঙ্গে ঢাক-ঢোল, শাক-ঘণ্টা কাসর-ঘড়িও বাজিয়া উঠিল। সেই সকল বাজনা ছাপাইয়া বলিদানের সেই ভয়ানক মা মা চীৎকারে আমাদের যেন কানে তালা লাগিতে লাগিল, আতঙ্কে আমাদের প্রাণ শিহরিয়া উঠিল, ভয়ে আমাদের শরীর রোমাঞ্চ বসিল। আমরা কিছু বলিতে না বলিতে চোৎ করিয়া সে দ্বারের নিকট গিয়া খিল খুলিয়া ফেলিল। তাহার পর আমরা তাহাকে ধরিতে না ধরিতে রুদ্ধশ্বাসে বাহির বাড়ীর পূজার দালানের দিকে সে দীেড়িল। “ও মা, কি হইল, সৰ্ব্বনাশ হইল।” এই কথা বলিতে বলিতে অলক ঠাকরুণ ছাড়া আর সকলেই আমরা তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ দীেড়িলাম। কিন্তু তাহাকে ধরিতে পারিলাম না। দিদিমণি আমাদের আগে আগে গিয়া বাহির বাড়ীর পূজার দালানে গিয়া উপস্থিত হইল। সে-স্থানের অদ্ভুত ব্যাপার দেখিয়া আমরা জ্ঞানহারা হইলাম। এখন আর সে ভাঙ্গা জনশূন্য বাড়ী নাই। খুব ধুম-ধামের দুর্গোৎসবুহেইলে যেরূপ হয়, সে-স্থানে এখন সেইরূপ হইয়াছে। দালানের মাঝখানে প্ৰতিমা সুসজ্জিত। প্রতিমার চারিদিকে নৈবেদ্য প্রভৃতি পূজার আয়ােজন রহিয়াছে। পুরোহিতগণ বসিয়া আছেন। একপার্শ্বে একজন চণ্ডীপাঠ করিতেছেন। সম্মুখের প্রাঙ্গুষ্ঠু লৈাকে লোকারণ্য হইয়াছে, ধূপ-ধূনার গন্ধে চারিদিক আমোদিত হইয়া আছে। উঠানে, সকল স্থানে ঝাড়-লষ্ঠান জুলিতেছে। ফলকথা, এমন ধুমধামের পূজা দেখি নাই । দিদিমণি কাহারও প্রতি ভ্ৰক্ষেপ মা করিয়া দালান পার হইয়া দালানের পূর্বদিকে চলিয়া গেল। ভয়ে কঁাপিতে কঁাপিতে আমরাও তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিলাম। দালানের পূর্বদিকে একটি ঘর ছিল। সেই ঘরের ভিতর তক্তপোষের উপর একজন বৃদ্ধ বসিয়াছিলেন। তাহার বামহাতে বেহালা, আর দক্ষিণ হাতে যা দিয়া বাজায় তাই ছিল। একটি পরমা সুন্দরী স্ত্রীলোক মাটিতে বসিয়া বৃদ্ধের পা দুইখানি ধরিয়া কি বলিতেছিলেন। সেই স্ত্রীলোকের পার্শ্বে সাত-আট বৎসরের ঐক বালিকা দাড়াইয়াছিল। দিদিমণি বরাবর গিয়া সেই ঘরের দ্বারের একপার্শ্বে দাড়াইল। খপ করিয়া আমি গিয়া দিদিমণির হাত ধরিয়া ফেলিলাম। তাহার পর আমরা সকলেই সেই দ্বারের নিকট দাড়াইয়া রহিলাম। যে স্ত্রীলোক বৃদ্ধের পা ধরিয়া ছিলেন, তিনি এখন কীদ-কঁদ মৃদু মধুর-স্বরে বলিলেন,- “বাবা, অপরাধ করিয়াছি সত্য! কিন্তু আমি তোমার কন্যা। শত অপরাধ করিলে, কন্যাকে ক্ষমা করিতে হয়। এই মেয়েটিকে লইয়া আমি এখন কোথায় যাই।” বৃদ্ধ অতি নিষ্ঠুর ভাষায় বলিলেন, — “আমি প্রতিজ্ঞা করিয়াছি যে, তাের আমি মুখ দেখিব না। কালামুখ লইয়া এ বাড়ী হইতে এখনই দূর হইয়া যা।” স্ত্রীলোক উত্তর করিলেন, — “বাবা! আমি কোনরূপ দুষ্কৰ্ম্ম করি নাই, স্বামীর ঘরে গিয়াছি, Qbrひ frig -ibs gas sell - www.amarboicon: "*